কলকাতা, 9 জানুয়ারি: আসন্ন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের কথা মাথায় রেখে বুধবার নবান্নে এটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মাস ঘুরলেই বাণিজ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন রয়েছে। হাতে বিশেষ সময় নেই। তাই শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি এবং বিভিন্ন বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে রাজ্য প্রশাসন তরফে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
মূলত, আসন্ন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ। এই বৈঠকের সমস্ত দফতরকে 15 জানুয়ারির মধ্যে কোন কোন বিষয়ে নীতি-পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে, তা মুখ্য সচিবকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যে বিনিয়োগের প্রস্তাব বিভিন্ন দফতরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সম্পর্কেও একটি রিপোর্ট তৈরি করে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পান্থ এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বাণিজ্য সংক্রান্ত একাধিক কমিটির কো-চেয়ারম্যান, বণিকসভার প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা। গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যালোচনা বৈঠকে সমস্ত দফতরের সচিবদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আসন্ন বাণিজ্য সম্মেলনে দফতরগুলির অংশগ্রহণ সম্পর্কিত নীতিগুলি এক সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি শিল্প জগতের সঙ্গে যুক্ত অফিসগুলিকে কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিনিয়োগের তালিকা 15 জানুয়ারির মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন কোন কোন ক্ষেত্রে 'এমওইউ'-তে স্বাক্ষর করা যেতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সেইসঙ্গে গত বিজনেস সামিটে যে যে বিনিয়োগ এসেছিল, তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত সামগ্রিক একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার শিল্প সম্মেলনের মূল থিম হবে শিল্প ও বাণিজ্য। আলাদা করে কোনও উপধারাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, বুধবারের বৈঠক মূলত দুটি পর্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম পর্যায় দফতরের সচিবদের সঙ্গে এবং দ্বিতীয় পর্যায় এই বৈঠকে রাজ্যের একাধিক শীর্ষ শিল্পপতি উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি আসন্ন বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে নিয়ে তাদের মতামত শোনা হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য সম্মেলনের প্রচারের রোড ম্যাপ এবং সামগ্রিকভাবে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রসঙ্গত, তাজপুর বন্দর গড়তে পুনরায় গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্য আইনি পরামর্শ গ্রহণের কথাও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। ফলে এই বিষয়ে আগামীতে কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।
আগামী 5 ও 6 ফেব্রুয়ারি রাজ্যে বসছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। যোগ দেবেন দেশ-বিদেশের বহু বিনিয়োগকারী। উপস্থিত থাকবেন দেশের তাবড় শিল্পপতিরা। তাঁদের সামনেই রাজ্যে বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রেগুলি তুলে ধরবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরিস্থিতিতে এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।