কলকাতা, 24 মে: বাংলাদেশের সাংসদ আনওয়ারুল আজিমকে খুনের আগে অচৈতন্য করা হয়েছিল ৷ তার জন্য ব্য়বহার করা হয়েছিল ক্লোরোফর্ম ৷ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারী আধিকারিকদের এমনটাই জানিয়েছে ধৃত জিহাদ ৷ সিআইডি সূত্রে খবর, বরানগরের বন্ধুর বাড়ি থেকে নিউটনের ওই ফ্ল্যাটে আসার জন্য দু’বার ক্যাব পরিবর্তন করেছিলেন জিহাদ ৷ নিউটনের ফ্ল্যাটে ওঠার 10 থেকে 15 মিনিটের মধ্যেই জিহাদ পুরো অপারেশন চালায় ৷ জিহাদকে গ্রেফতারের পর ইতিমধ্যে বারাসত আদালতে তোলা হয়েছে ৷
সূত্রের খবর, জিহাদ জেরায় জানিয়েছে, আনওয়ারুল আজিমকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচৈতন্য করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে ৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে এরপর মাংস কাটার একাধিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে বাংলাদেশের সাংসদের দেহ টুকরো-টুকরো করে জিহাদ এবং তাঁর সঙ্গীরা ৷ সিআইডি জানতে পেরেছে, আনওয়ারুল আজিমকে বেডরুমে শ্বাসরোধ করে মারা পর বেশ কয়েকঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন:
তারপর বাংলাদেশের সাংসদের দেহ টেনে রান্না ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে বাংলাদেশের পেশাদার কসাই মাংস কাটার আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে আনওয়ারুলের দেহের একাধিক টুকরো করে ৷ হাত, পা, গলা ছোট-ছোট টুকরো করে পলিথনের ব্যাগে ভরা হয় ৷ দেহের টুকরো থেকে যাতে পচা গন্ধ না-ছড়ায়, তার জন্য রাসায়নিকের প্রয়োগ করা হয়েছিল ৷ সবশেষে দেহাংশ ভরতি পলিথিনগুলিকে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা হয় ৷
সিআইডি-র আধিকারিকরা জানতে পেরেছে, পুরো ঘটনাটি ছিল পরিকল্পনামাফিক ৷ জিহাদ এবং তার সঙ্গীরা এরপর গভীর রাতের অপেক্ষা করতে থাকে ৷ রাতে হতেই পলিথিনে ভরা দেহাংশগুলি দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়ের একটি খালে ফেলে দেয় ৷ সিআইডি সূত্রে খবর, আজ দুপুরের পর ভাঙড়ের ওই খালে তল্লাশি অভিযান চালাবে ৷ যেখান থেকে দেহাংশগুলি ফেলা হয়েছিল, সেখান থেকে স্রোতের দিক বরাবর চলবে তল্লাশি ৷
আরও পড়ুন:
তবে, দেহ টুকরো করতে যে হাতিয়ারগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলি কোথায় গেল ? এই প্রশ্নের জবাব এখনও পাননি তদন্তকারীরা ৷ সেই সঙ্গে জিহাদ এবং তাঁর সঙ্গীরা কার কথায় ও পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ডকে পরিণতি দিয়েছে ? তাও জানা যায়নি ৷ এমনকি একজন রহস্যময়ী নারীর যোগসূত্র পেয়েছে সিআইডি ৷ তাঁকেও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে ৷ উল্লেখ্য, কলকাতা চিকিৎসা করাতে এসে বহুদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বাংলাদেশের সাংসদ ৷ প্রতিবেশী দেশের সাংসদের খোঁজে নেমে পুলিশ নিউটাউনের ফ্ল্যাটে আনওয়ারুল আজিমের খুনের রহস্যভেদ করে ৷
আরও পড়ুন: