বর্ধমান, 1 অগস্ট: দিনে দিনে বর্ধমান শহরে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা । দু'দিনের মধ্যে 12 থেকে বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 21 ৷ তবে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের । বিষয়টি নিয়ে তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন !
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারী বৃষ্টি হলে এখানে জল জমে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে । ফলে, ডেঙ্গির লার্ভা জমে থাকার সম্ভাবনা কম । কারণ, জলের তোড়ে সেই লার্ভা ভেসে যায় । কিন্তু, দিন কয়েক ধরে কখনও ঝিরিঝিরি তো কখনও মাঝারি বৃষ্টির কারণে জল জমে থাকছে । ফলে মশার লার্ভা থিকথিক করছে । তবে, যাঁরা ডেঙ্গি নিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা অনেকেই জানেন না কীভাবে, কোথায় ডেঙ্গির লার্ভা জন্মায় । ফলে, তাঁরা এলাকায় ঘুরলেও ঠিকঠাকভাবে দেখভাল করতে পারছেন না । এই কারণেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে ।
বর্ধমান শহরের 3 নম্বর ওয়ার্ডের রসিকপুর এলাকায় 12 জন ও 17 নম্বর ওয়ার্ডে 9 জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে । এছাড়া, এখনও 100 জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ । ফলে, সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।
এই বিষয়ে বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, "ডেঙ্গি যাতে ছড়াতে না পারে, সেই জন্য পৌরসভা প্রথম থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে ৷ গত বছর গোটা মরশুমে ডেঙ্গিতে মাত্র পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছিল । চলতি মরশুমে যাতে সেটাও না হয়, সেই জন্য আমরা উদ্যোগও নিয়েছিলাম । দুর্ভাগ্যবশত শহরের দু-এক জায়গায় ডেঙ্গিতে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন । বিষয়টি নিয়ে কলকাতা থেকে অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি ডিপার্টমেন্টের জলি চৌধুরী বিষয়টি লক্ষ্য রাখছেন । এছাড়া, সুডা থেকে চারজন এন্ড্রোপলজিস্ট এখানে এসে পরিস্থিতি দেখে গিয়েছেন । পৌরসভার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে আধিকারিক-কর্মী সকলেই বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষকে সচেতন করেছেন । কোনওভাবেই যাতে কোনও জায়গা অপরিষ্কার না থাকে, জমা জল না থাকে, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে সকলকে । আমরা চেষ্টা করছি যাতে কোনও ভাবেই আর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা না বাড়ে । আমরা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধান হতে বলছি । সরকারের তরফে লিফলেট বিলি করে কীভাবে সাবধান থাকা যায়, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।"
ডেপুটি সিএমওএইচ (2) ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, "প্রতিদিনই বর্ধমান পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয় । তাতেই দেখা যায় দুই-একদিনের মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে । একই এলাকায় 10-12টা ফাঁকা প্লটে জল জমে যাওয়ায় মশার লার্ভা থিকথিক করছে । ফলে, আমাদের ফিভার ক্লিনিক চালু করা হয়েছে । বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পুর উন্নয়ন দফতরকে জানানো হয় । বর্ধমান শহরের তুলনায় বাকি অংশে পরিস্থিতি ভালো । জেলার বাকি অংশগুলিতে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে । যাতে আশেপাশের এলাকায় ডেঙ্গি ছড়িয়ে না পড়ে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে ।"