কলকাতা, 6 অগস্ট: উত্তপ্ত বাংলাদেশ। প্রায় এক মাসের ওপর ধরে বাংলাদেশের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে পড়েছিল আন্দোলনের আগুন । যার জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বর্তমানে 'সোনার বাংলা' সেনার দখলে । তবে এবার কোন দিকে যাবে দেশ? সেই প্রশ্নই তাড়া করে বেড়াচ্ছে সকল বাংলাদেশের মানুষের মনে । কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে তেমনই আশঙ্কার কথা জানালেন তাঁরা ৷
দিদির চিকিৎসা করাতে সপ্তাহখানেক আগে যশোর থেকে কলকাতা এসেছেন সুরসিনা খাতুন । বর্তমানে চিকিৎসা করানো হয়ে গিয়েছে । কিন্তু বাড়ি কি করে ফিরবেন তা নিশ্চিত নয় । ইটিভি ভারতকে তিনি জানিয়েছেন, "চিকিৎসার জন্য এদেশে এসেছিলাম । এখন বাড়ি কী করে ফিরব বুঝতে পারছি না । আজকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, তবে যেতে পারিনি । বর্তমানে দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি চলছে বলে শুনেছি । তবে যা পরিস্থিতি হল তা ভালো না বলেই মনে হচ্ছে । শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে পদত্যাগ করলেন ।
অন্যদিকে, স্ত্রী-র চিকিৎসা করাতেই পাবনা থেকে কলকাতায় এসেছেন আরেক দম্পতি এসএম শামি । তাঁর কথায়, "মেধার জন্য এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল ৷ কিন্তু সরকার চাইলে এটা অনেক আগেই শেষ করতে পারত । তবে এবার আশা করব বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে । আমাদের চিকিৎসা শেষের দিকে । তবে কী করে দেশে ফিরব তা নিয়ে একটি মানসিক চিন্তা কাজ করছে ।"
তবে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ভালো নয় বলেই মনে করছেন ফরিদপুর থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা আরেক বাংলাদেশের বাবুল হোসেন । তিনি জানান, বাড়ির লোক বলছে ও দেশের অবস্থা ভালো নয় চিকিৎসা করে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে । বাস, ট্রেন সব বন্ধ ৷ বিমানে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে । তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাঙা একদমই ভালো কাজ হয়নি ।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছেন প্রায় ৩০০-রও কাছাকাছি মানুষ । যার মধ্যে কিছুজন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন । শীঘ্রই তাদের মধ্যে কাউকে ছুটিও দেওয়া হবে । যদি চিকিৎসাধীনদের কোনও সমস্যা হয় তবে হাসপাতাল ওপারে তাঁদের পড়শীদের সঙ্গে কথা বলানোর ব্যবস্থাও করানো হচ্ছে । তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ভিসা শেষ হয়ে গেলে অন্যান্য দেশের মতো হাই কমিশন সেই ব্যবস্থা নেয় ৷ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম বলবৎ আছে ।