কলকাতা, 16 জানুয়ারি: হেলে যাওয়া বাড়ি মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ভাঙার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছিল কলকাতা কর্পোরেশনের ডেমোলিশন স্কোয়াড। তবে এ তো আর সাধারণ বিপজ্জনক বাড়ি নয়! এমন ভাবে হেলে রয়েছে ভাঙতে গিয়ে আশঙ্কা থাকছে হুড়মুড়িয়ে পড়ার। ক্ষতি হতে পারে আশপাশের বাড়িগুলির। তাই এই বাড়ি ঠিক কী ভাবে ভাঙা হবে, সেই পথের সন্ধানে কলকাতা কর্পোরেশনের বিল্ডিং বিভাগ দ্বারস্থ হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের কাছে।
কর্পোরেশনের আবেদনে ঘটনাস্থলে ঘুরে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। কী ভাবে এই বহুতলটি ভাঙতে হবে করে জমিনে খতিয়ে দেখে পথের খোঁজ দেন তিনি। সেই নির্দেশ অনুযায়ী বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে কলকাতা কর্পোরেশনের ডেমোলিশন স্কোয়াড।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ক্রেন এনে অল্প বিস্তর ভাঙার কাজ শুরু করেছিল। তবে প্রত্যেক ফ্ল্যাটেই কমবেশি জিনিসপত্র আছে যেগুলি সরিয়ে ফেলার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। সেই কাজ কী ভাবে করা হবে, ঝুঁকি নিতে পারছিল না কর্পোরেশন। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তী সঙ্গে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন কলকাতা কর্পোরেশনের ডিজি বিল্ডিং উজ্জ্বল সরকার। অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তী এই বাড়িটি ভাঙ্গার বিষয় একাধিক পরামর্শ দেন।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, দীপঙ্কর চক্রবর্তী কর্পোরেশনকে জানিয়েছেন, বাড়িতে ডানদিকে হেলে পড়া আবাসনটি বাঁ দিক থেকে দড়ি দিয়ে টেনে ধরে রাখা হবে। হেলে পড়া অংশের দিকে পেল অর্ডার দিয়ে ঠেকনা দেওয়া হবে। দুই দিকে এই ঠেকনা দেওয়ার পর উপরের অংশ ধীরে ধীরে ভাঙ্গা শুরু হবে। তাহলে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে না।
জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে চারতলার দেওয়াল গুলি ভাঙ্গা হবে। তারপর ভাঙ্গা হবে উপরের ছাদের অংশ। ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ছাদটি ভাঙতে বলেছেন বিশেষজ্ঞ। শুরুতেই যাতে বাড়ির ভিত অর্থাৎ কলম ঢালাই যে দেওয়া হয়, সেই জায়গায় কোন রকম ঠোকাঠুকি না করা হয়। চার তলার দেওয়াল ও ছাদের অংশ ভাঙ্গা হলে হবে তিন তলার দেওয়ালগুলি ভাঙ্গতে হবে। তারপর ছোট ছোট টুকরো আকারে ভাঙতে হবে। প্রতিটি তলা ভাঙ্গার পর শেষে ভিতের কলমে ভাঙ্গা হবে।
অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তীর বলে দেওয়া পথেই শুরু হয়েছে ভাঙার কাজ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জলা জমি ভরাট করে কোনও নির্মাণ কাজ তোলার ক্ষেত্রে তার চারধারে পাইলিং করতে হয়, সে কাজটি এখানে করা হয়নি। তাই হেলে পড়ে বাড়িটি।