মালদা, 24 এপ্রিল: মালদা জেলার রাজনীতিতে প্রবাদ ছিল, সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্র কোতওয়ালির খান চৌধুরি পরিবারের সম্পত্তি ৷ তার পিছনে কারণও রয়েছে ৷ এই কেন্দ্র থেকেই ছয়ের দশকে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন প্রয়াত গনি খান চৌধুরি ৷ তিনি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বোন রুবি নুর ধারাবাহিকভাবে সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছেন ৷ রুবি নুরের মৃত্যুর পর সেই জায়গা নিয়েছিলেন মেয়ে মৌসম নুর ৷ মৌসম লোকসভা নির্বাচনে জিতে যাওয়ায় এই কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তাঁর তুতো ভাই ইশা খান চৌধুরি ৷
কিন্তু একসময় বোধহয় সবাইকেই থামতে হয় ৷ একুশের ভোটে এই কেন্দ্রে হেরে যান ইশা ৷ তৃণমূল প্রার্থী আবদুল গনি প্রায় এক লাখ 30 হাজার ভোটে ইশাকে হারিয়ে দেন ৷ সেই ইশাই এবার মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ৷ লড়ছেন তৃণমূলের শাহনওয়াজ আলি রায়হান আর বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৷
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় ইশা তাঁর সঞ্চয়-সম্পত্তির হিসেবনিকেশ পেশ করেছেন ৷ কী বলছে সেই হিসেব দেখে নেওয়া যাক একনজরে -
বার্ষিক আয়:
ইশা খান চৌধুরি - 1 লাখ 63 হাজার 633 টাকা (2018-19 অর্থবর্ষ), 1 লাখ 20 হাজার 950 টাকা (2022-23 অর্থবর্ষ) ৷
সায়েদা সালেহা নেহার নুর (স্ত্রী) - 21 লাখ 46 হাজার 450 টাকা (2019-20 অর্থবর্ষ), 15 লাখ 81 হাজার 740 টাকা (2023-24 অর্থবর্ষ) ৷
হাতে নগদ:
ইশা খান চৌধুরি - 35 হাজার টাকা ৷
সায়েদা সালেহা নেহার নুর (স্ত্রী) - 30 হাজার টাকা ৷
সঞ্চয়:
ইশা খান চৌধুরি - তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে 4 লাখ 60 হাজার 556 টাকা 73 পয়সা ৷ 2 লাখ 25 হাজার টাকার বন্ড কেনা রয়েছে ৷ পোস্টাল, বিমা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইশার 3.5 লাখ টাকা মজুত রয়েছে ৷
সায়েদা সালেহা নেহার নুর (স্ত্রী) - পাঁচটি অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে 75 লাখ 13 হাজার 620 টাকা 64 পয়সা ৷ 2 লাখ 25 হাজার টাকার বন্ড কেনা রয়েছে ৷ পাঁচটি ব্যাংকে মোট 25 লাখ 60 হাজার 58 টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা রয়েছে ৷ 5 লাখ 68 হাজার 890 টাকার বিনিয়োগ ৷
অস্থাবর সম্পত্তি:
ইশা খান চৌধুরি - গাড়ি নেই ৷ সোনা নেই ৷
সায়েদা সালেহা নেহার নুর (স্ত্রী) - একটি চারচাকার গাড়ি রয়েছে ৷ যার দাম 10 লাখ 97 হাজার 244 টাকা ৷ 70 গ্রাম সোনার গয়না রয়েছে ৷ যার বর্তমান বাজার দর 4 লাখ 30 হাজার টাকা ৷
স্থাবর সম্পত্তি:
ইশা খান চৌধুরি - চাষযোগ্য জমি নেই ৷ শাহ জালালপুর মৌজায় রয়েছে 6 হাজার 583 বর্গফুট চাষের অযোগ্য জমি ৷
সায়েদা সালেহা নেহার নুর (স্ত্রী) - চাষযোগ্য জমি নেই ৷ শাহ জালালপুর মৌজায় রয়েছে 11 হাজার 663 বর্গফুট চাষের অযোগ্য জমি ৷
ইশা খান চৌধুরির নামে কোথাও কোনও ঋণ বা মামলা নেই ৷
একুশের ভোটে পরিবারের রাজনৈতিক গড় হাতছাড়া হয়েছে তাঁর হাত ধরেই ৷ এবার ইংল্যান্ডের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ইশা খান চৌধুরির সামনে দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের পারিবারিক গড় ধরে রাখার লড়াই ৷ 2009 সালে আসন পুনর্বিন্যাসের পর এই কেন্দ্র কখনও খান চৌধুরি পরিবারের হাতছাড়া হয়নি ৷ ইশা কি পারবেন এই কেন্দ্রে হাত ঝান্ডার বিজয়রথ অব্যাহত রাখতে ?
আরও পড়ুন: