ETV Bharat / state

নেই পারিশ্রমিক, নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ির অনুষ্ঠানেও কাজ করতে হয়; রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি আশাকর্মীদের - West Bengal ASHA workers

ASHA workers call strike in West Bengal: যথাযথ পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না আশাকর্মীদের ৷ তার উপর বাড়তি কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয় তাদের উপর ৷ এমনকী নেতা-মন্ত্রীদের পারিবারিক অনুষ্ঠানেও কাজ করতে হয় তাদের ৷ এই অভাব-অভিযোগ নিয়ে 1 মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে আশাকর্মীরা ৷

ETV Bharat
আশাকর্মীদের কর্মবিরতি
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 28, 2024, 2:26 PM IST

বর্ধমান, 27 ফেব্রুয়ারি: নেতা মন্ত্রীদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে কাজ করতে হচ্ছে আশাকর্মীদের ৷ এছাড়া নিত্যদিনের কাজকর্ম তো আছেই ৷ কাজের পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অথচ মাসের শেষে বেতন হিসেবে পাঁচ হাজার টাকাও মেলে না ৷ ফলে সারা রাজ্যের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও 1 মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতিতে সামিল হচ্ছেন আশাকর্মীরা ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে লোকসভা নির্বাচনে আশাকর্মীদের দাবিদাওয়া অন্যতম ইস্যু হতে চলেছে ৷

পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের পূর্ব বর্ধমান জেলা ইনচার্জ ঝরনা পাল বলেন, "1 মার্চ থেকে আশাকর্মীরা কর্মবিরতির পথে যাচ্ছে ৷ তাদের বাহবা দেওয়া হলেও কাজের সময় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৷ এমনকী নেতা-মন্ত্রীদের অনুষ্ঠান বাড়িতেও তাদের ডিউটি করতে পাঠানো হচ্ছে ৷ তাদের ফোনের মাধ্যমে কাজ করতে বলা হচ্ছে ৷ অথচ গত অক্টোবর মাস থেকে তাদের ফোনের বিল দেওয়া হচ্ছে না ৷ ইনসেনটিভের টাকা ভাগে ভাগে পাঠানো হচ্ছে ৷"

এই পরিস্থিতিতে আশাকর্মীরা জাতীয় পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঝরনা পাল ৷ তিনি বলেন, "এবার আমরা ন্যাশনাল প্রোগ্রাম পোলিও টিকাকরণ বয়কট করব ৷ কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের 7 শতাংশ এবং রাজ্য সরকারের 40 শতাংশের মধ্যে দিয়েই এই কাজটা হয় ৷ সেখানে 15 বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার 75 টাকা করে দিয়ে যাচ্ছে ৷ কোনও টাকা বাড়ায়নি ৷ উলটে যেখানে দু'টি সেন্টার ছিল, সেখানে সেন্টারের সংখ্যা কমিয়ে একটি করা হয়েছে ৷ অথচ আশাকর্মীদের দিয়ে দ্বিগুণ কাজ করানো হবে ৷"

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন পূর্ব বর্ধমান জেলা ইনচার্জ ৷ তিনি বলেন, "রাজ্য বাজেটে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ভাতা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন ৷ তিনি দাবি করেছিলেন আশা কর্মীদের কোনও বকেয়া বাকি নেই ৷ অথচ অক্টোবর মাসের পর থেকে কোনও ইনসেনটিভ পাওয়া যায়নি ৷ মাসের শেষে আশাকর্মীদের সাড়ে চার হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে ৷ এর প্রতিবাদে 1 মার্চ থেকে কোনও আশাকর্মী আর কাজে যোগ দেবে না ৷"

দেখা গিয়েছে, একাধিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশাকর্মীদের আশ্বাস দিয়েছেন ৷ কিন্তু বাস্তবে তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় ৷ এমনকী পোলিও টিকাকরণের মতো কর্মসূচিতেও তাদের উপরে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় ৷ পোলিওর জন্য দু'টি বুথকে যোগ করে একটি বুথে পরিণত করে দ্বিগুণ কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয় আশাকর্মীদের উপরে ৷ উলটে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না ৷ ফলে আগামী দিনে রাজ্যব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিচ্ছে আশাকর্মীরা ৷

এই প্রসঙ্গে আশাকর্মী শবনম খাতুন বেগম বলেন, "আমাদের ভাতা বাড়াতে হবে ৷ যে মাইনে হাতে পাই, তাতে সংসার চলে না ৷ কোনও ছুটি নেই ৷ অথচ দিনের পর দিন আমাদের পরিশ্রম বেড়েই চলেছে ৷ যে হারে কাজ করি, সেই হারে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না ৷ আমাদের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের।" আরেক আশাকর্মী কাকলি তা বলেন, "জেলাজুড়ে আমরা কর্মবিরতিতে যাচ্ছি ৷ আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত গিয়েছি ৷ কিন্তু কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি ৷ তাই বাধ্য হয়ে আমরা কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছি ৷ এ নিয়ে সিএমওএইচের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছি ৷"

আরও পড়ুন:

  1. শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, হুঁশ নেই প্রশাসনের
  2. রামজীবনপুরে 11টি ওয়ার্ডের 13টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বেহাল পরিকাঠামোর অভিযোগ
  3. অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মীদের বিক্ষোভ, লিখিত অভিযোগ জমা শিশু বিকাশ প্রকল্পের অফিসে

বর্ধমান, 27 ফেব্রুয়ারি: নেতা মন্ত্রীদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে কাজ করতে হচ্ছে আশাকর্মীদের ৷ এছাড়া নিত্যদিনের কাজকর্ম তো আছেই ৷ কাজের পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অথচ মাসের শেষে বেতন হিসেবে পাঁচ হাজার টাকাও মেলে না ৷ ফলে সারা রাজ্যের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও 1 মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতিতে সামিল হচ্ছেন আশাকর্মীরা ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে লোকসভা নির্বাচনে আশাকর্মীদের দাবিদাওয়া অন্যতম ইস্যু হতে চলেছে ৷

পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের পূর্ব বর্ধমান জেলা ইনচার্জ ঝরনা পাল বলেন, "1 মার্চ থেকে আশাকর্মীরা কর্মবিরতির পথে যাচ্ছে ৷ তাদের বাহবা দেওয়া হলেও কাজের সময় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৷ এমনকী নেতা-মন্ত্রীদের অনুষ্ঠান বাড়িতেও তাদের ডিউটি করতে পাঠানো হচ্ছে ৷ তাদের ফোনের মাধ্যমে কাজ করতে বলা হচ্ছে ৷ অথচ গত অক্টোবর মাস থেকে তাদের ফোনের বিল দেওয়া হচ্ছে না ৷ ইনসেনটিভের টাকা ভাগে ভাগে পাঠানো হচ্ছে ৷"

এই পরিস্থিতিতে আশাকর্মীরা জাতীয় পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঝরনা পাল ৷ তিনি বলেন, "এবার আমরা ন্যাশনাল প্রোগ্রাম পোলিও টিকাকরণ বয়কট করব ৷ কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের 7 শতাংশ এবং রাজ্য সরকারের 40 শতাংশের মধ্যে দিয়েই এই কাজটা হয় ৷ সেখানে 15 বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার 75 টাকা করে দিয়ে যাচ্ছে ৷ কোনও টাকা বাড়ায়নি ৷ উলটে যেখানে দু'টি সেন্টার ছিল, সেখানে সেন্টারের সংখ্যা কমিয়ে একটি করা হয়েছে ৷ অথচ আশাকর্মীদের দিয়ে দ্বিগুণ কাজ করানো হবে ৷"

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন পূর্ব বর্ধমান জেলা ইনচার্জ ৷ তিনি বলেন, "রাজ্য বাজেটে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ভাতা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন ৷ তিনি দাবি করেছিলেন আশা কর্মীদের কোনও বকেয়া বাকি নেই ৷ অথচ অক্টোবর মাসের পর থেকে কোনও ইনসেনটিভ পাওয়া যায়নি ৷ মাসের শেষে আশাকর্মীদের সাড়ে চার হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে ৷ এর প্রতিবাদে 1 মার্চ থেকে কোনও আশাকর্মী আর কাজে যোগ দেবে না ৷"

দেখা গিয়েছে, একাধিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশাকর্মীদের আশ্বাস দিয়েছেন ৷ কিন্তু বাস্তবে তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় ৷ এমনকী পোলিও টিকাকরণের মতো কর্মসূচিতেও তাদের উপরে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় ৷ পোলিওর জন্য দু'টি বুথকে যোগ করে একটি বুথে পরিণত করে দ্বিগুণ কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয় আশাকর্মীদের উপরে ৷ উলটে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না ৷ ফলে আগামী দিনে রাজ্যব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিচ্ছে আশাকর্মীরা ৷

এই প্রসঙ্গে আশাকর্মী শবনম খাতুন বেগম বলেন, "আমাদের ভাতা বাড়াতে হবে ৷ যে মাইনে হাতে পাই, তাতে সংসার চলে না ৷ কোনও ছুটি নেই ৷ অথচ দিনের পর দিন আমাদের পরিশ্রম বেড়েই চলেছে ৷ যে হারে কাজ করি, সেই হারে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না ৷ আমাদের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের।" আরেক আশাকর্মী কাকলি তা বলেন, "জেলাজুড়ে আমরা কর্মবিরতিতে যাচ্ছি ৷ আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত গিয়েছি ৷ কিন্তু কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি ৷ তাই বাধ্য হয়ে আমরা কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছি ৷ এ নিয়ে সিএমওএইচের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছি ৷"

আরও পড়ুন:

  1. শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, হুঁশ নেই প্রশাসনের
  2. রামজীবনপুরে 11টি ওয়ার্ডের 13টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বেহাল পরিকাঠামোর অভিযোগ
  3. অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মীদের বিক্ষোভ, লিখিত অভিযোগ জমা শিশু বিকাশ প্রকল্পের অফিসে
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.