ETV Bharat / state

রক্তের আকাল ! এবার 'লোকশিক্ষে' দিতে থিয়েটারে চিকিৎসক-টেকনিশিয়ানরা - DOCTORS ON THEATRE STAGE

Doctors Act to Inspire Blood Donation: মানুষকে রক্তদানে উজ্জ্বীবিত করতে থিয়েটারের মঞ্চে আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক, ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ান ও স্বাস্থ্য কর্মীরা ৷ সেই উদ্যোগে সাড়াও মিলেছে ৷ আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে বহু মানুষ রক্তদান করছেন ৷

Blood Donation
থিয়েটারের মাধ্যমে মানুষকে রক্তদানে উৎসাহ প্রদান আসানসোল জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ৷ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 23, 2024, 8:49 PM IST

আসানসোল, 23 জুলাই: কিছুতেই রক্ত সংকট মিটছিল না আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ রক্তদান শিবির, সচেতনতার নানান অনুষ্ঠান করেও বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোতল রক্ত সংকট রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ আর তাই শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের দেখানো পথেই এবার হাঁটলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন 'থিয়েটারে লোকশিক্ষে হয়' ৷

থিয়েটারের মাধ্যমে মানুষকে রক্তদানে উৎসাহ প্রদান আসানসোল জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ৷ (ইটিভি ভারত)

আর তাই লোকশিক্ষে দিয়ে মানুষকে সচেতন করতে, মুখে রং মেখে থিয়েটারেই নামলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ তাতে অবশ্য লাভ হয়েছে ৷ এই থিয়েটার দেখে এখন অনেক মানুষই আসছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করতে ৷

আসানসোল জেলা হাসপাতালের উপর শুধু আসানসোল নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার প্রান্তিক অঞ্চলের প্রচুর মানুষ নির্ভরশীল ৷ এছাড়াও প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক এলাকার মানুষজনও এখানে আসে রক্তের খোঁজে ৷ দুর্ঘটনা তো আছেই, এছাড়াও প্রসূতি মায়েদের জন্য, বিভিন্ন অস্ত্রোপচারে আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয় ৷

এর সঙ্গে এই হাসপাতালের উপর প্রায় 700 থ্যালাসেমিয়া রোগী নির্ভরশীল ৷ কিন্তু, রক্তের চাহিদা যতটা বেশি, সেই পরিমাণে জোগান হচ্ছিল না ৷ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তদান শিবির করে ৷ পাশাপাশি অনেকেই আছেন, যাঁরা স্বেচ্ছায় রক্তদাতা হয়ে হাসপাতালে রক্ত দিয়ে যান ৷ কিন্তু, তারপরেও বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোতল রক্ত সংকট রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ এমন কথা জানিয়েছেন খোদ আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার ও ইনচার্জ চিকিৎসক সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় ৷

নানান সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করেও এই রক্ত সংকট দূর করা যায়নি ৷ তাই অভিনব পন্থা নিয়েছেন এবার চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ থিয়েটার করে মানুষজনকে সচেতন করতে, তারা এবার নিজেরাই অভিনয় করতে নেমেছেন ৷ চিকিৎসক সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায়েরই লেখা একটি নাটক যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে আসানসোল শহরে এবং সোশাল সাইটে ৷

সম্প্রতি আসানসোল রবীন্দ্রভবনে এই থিয়েটার অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই নাটকটি তাঁরা পোস্ট করেছেন ৷ আর তারপরেই বেশ সাড়া পড়ে গিয়েছে আসানসোল শহরে ৷ হৃদয়বিদারক এই থিয়েটারে দেখানো হচ্ছে একজন ধনী ব্যাবসায়ী রক্তদান শিবিরের বিষয়ে উদ্যোগী ছিলেন না ৷ তাঁকে বারবার অনুরোধ করা হলেও, তিনি শিবির করতে উৎসাহিত হননি ৷ কিন্তু, তাঁরই ছেলে দুর্ঘটনার শিকার হয় ৷ প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয় তাঁর ৷ রক্তের প্রয়োজন হলেও ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট থাকায়, সেই রক্ত দেওয়া যায়নি ৷ মৃত্যু হয় তাঁর ছেলের ৷ আর তারপরেই ওই ব্যবসায়ীর বোধদয় হয় ৷ তিনি হাতজোড় করে সমস্ত মানুষকে বলেন, রক্তদান শিবির করুন তাহলেই রক্তের সংকট আর থাকবে না ৷

মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ডাক্তার সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় নিজেই ৷ এর পাশাপাশি ব্লাড ব্যাংকের সমস্ত টেকনিশিয়ানরাও অভিনয় করেছেন এই নাটকে ৷ যা যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে মানুষের মনে ৷ অনেকেই এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই থিয়েটার দেখে আসানসোল ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দিতে আসছেন । ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেল আসানসোলের দোমহানি এলাকার বাসিন্দা ছাত্র অমিত কুমার মাজি রক্ত দিতে এসেছেন ৷ অমিত ইটিভি ভারতকে জানালেন, "শুধু আমি না, আমার বন্ধুরাও এসেছে ৷ আসলে থিয়েটারটা দেখে মনটা নাড়া দিয়ে উঠেছিল ৷ আমরা বলব সবাইকে এইভাবে রক্ত দিতে আসুন ৷"

ডাক্তার সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না এই সংকট ৷ তাই মুখে রং মেখে আমাদেরকে থিয়েটার করতে নামতে হয়েছে ৷ তাতে যদি মানুষজন একটু সচেতন হয় ৷ আমরা অবশ্যই আশাবাদী ৷ এই থিয়েটার দেখে অনেকেই আসছেন সরাসরি ব্লাড ব্যাংকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করতে ৷"

আসানসোল, 23 জুলাই: কিছুতেই রক্ত সংকট মিটছিল না আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ রক্তদান শিবির, সচেতনতার নানান অনুষ্ঠান করেও বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোতল রক্ত সংকট রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ আর তাই শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের দেখানো পথেই এবার হাঁটলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন 'থিয়েটারে লোকশিক্ষে হয়' ৷

থিয়েটারের মাধ্যমে মানুষকে রক্তদানে উৎসাহ প্রদান আসানসোল জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ৷ (ইটিভি ভারত)

আর তাই লোকশিক্ষে দিয়ে মানুষকে সচেতন করতে, মুখে রং মেখে থিয়েটারেই নামলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ তাতে অবশ্য লাভ হয়েছে ৷ এই থিয়েটার দেখে এখন অনেক মানুষই আসছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করতে ৷

আসানসোল জেলা হাসপাতালের উপর শুধু আসানসোল নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার প্রান্তিক অঞ্চলের প্রচুর মানুষ নির্ভরশীল ৷ এছাড়াও প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক এলাকার মানুষজনও এখানে আসে রক্তের খোঁজে ৷ দুর্ঘটনা তো আছেই, এছাড়াও প্রসূতি মায়েদের জন্য, বিভিন্ন অস্ত্রোপচারে আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয় ৷

এর সঙ্গে এই হাসপাতালের উপর প্রায় 700 থ্যালাসেমিয়া রোগী নির্ভরশীল ৷ কিন্তু, রক্তের চাহিদা যতটা বেশি, সেই পরিমাণে জোগান হচ্ছিল না ৷ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তদান শিবির করে ৷ পাশাপাশি অনেকেই আছেন, যাঁরা স্বেচ্ছায় রক্তদাতা হয়ে হাসপাতালে রক্ত দিয়ে যান ৷ কিন্তু, তারপরেও বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোতল রক্ত সংকট রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৷ এমন কথা জানিয়েছেন খোদ আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার ও ইনচার্জ চিকিৎসক সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় ৷

নানান সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করেও এই রক্ত সংকট দূর করা যায়নি ৷ তাই অভিনব পন্থা নিয়েছেন এবার চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানরা ৷ থিয়েটার করে মানুষজনকে সচেতন করতে, তারা এবার নিজেরাই অভিনয় করতে নেমেছেন ৷ চিকিৎসক সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায়েরই লেখা একটি নাটক যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে আসানসোল শহরে এবং সোশাল সাইটে ৷

সম্প্রতি আসানসোল রবীন্দ্রভবনে এই থিয়েটার অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই নাটকটি তাঁরা পোস্ট করেছেন ৷ আর তারপরেই বেশ সাড়া পড়ে গিয়েছে আসানসোল শহরে ৷ হৃদয়বিদারক এই থিয়েটারে দেখানো হচ্ছে একজন ধনী ব্যাবসায়ী রক্তদান শিবিরের বিষয়ে উদ্যোগী ছিলেন না ৷ তাঁকে বারবার অনুরোধ করা হলেও, তিনি শিবির করতে উৎসাহিত হননি ৷ কিন্তু, তাঁরই ছেলে দুর্ঘটনার শিকার হয় ৷ প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয় তাঁর ৷ রক্তের প্রয়োজন হলেও ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট থাকায়, সেই রক্ত দেওয়া যায়নি ৷ মৃত্যু হয় তাঁর ছেলের ৷ আর তারপরেই ওই ব্যবসায়ীর বোধদয় হয় ৷ তিনি হাতজোড় করে সমস্ত মানুষকে বলেন, রক্তদান শিবির করুন তাহলেই রক্তের সংকট আর থাকবে না ৷

মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ডাক্তার সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় নিজেই ৷ এর পাশাপাশি ব্লাড ব্যাংকের সমস্ত টেকনিশিয়ানরাও অভিনয় করেছেন এই নাটকে ৷ যা যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে মানুষের মনে ৷ অনেকেই এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই থিয়েটার দেখে আসানসোল ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দিতে আসছেন । ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেল আসানসোলের দোমহানি এলাকার বাসিন্দা ছাত্র অমিত কুমার মাজি রক্ত দিতে এসেছেন ৷ অমিত ইটিভি ভারতকে জানালেন, "শুধু আমি না, আমার বন্ধুরাও এসেছে ৷ আসলে থিয়েটারটা দেখে মনটা নাড়া দিয়ে উঠেছিল ৷ আমরা বলব সবাইকে এইভাবে রক্ত দিতে আসুন ৷"

ডাক্তার সঞ্জীত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না এই সংকট ৷ তাই মুখে রং মেখে আমাদেরকে থিয়েটার করতে নামতে হয়েছে ৷ তাতে যদি মানুষজন একটু সচেতন হয় ৷ আমরা অবশ্যই আশাবাদী ৷ এই থিয়েটার দেখে অনেকেই আসছেন সরাসরি ব্লাড ব্যাংকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করতে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.