ETV Bharat / state

মহিলাঘটিত অভিযোগ সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে, অস্বস্তির মুখে সিপিএম - Susanta Ghosh

Susanta Ghosh: সিপিএমের পার্টি সম্মেলনের মুখে মহিলাঘটিত অভিযোগ সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে ৷ এর জেরে চরম অস্বস্তির মুখে সিপিএম ৷ সিপিএমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ওই মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছেন বলে অভিযোগ।

Susanta Ghosh
সুশান্ত ঘোষ (ফাইল চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 7, 2024, 11:03 PM IST

কলকাতা, 7 অগস্ট: সিপিএম রাজ্যে কমিটি সম্প্রতি জেলা থেকে এরিয়া সব স্তরে সম্মেলন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। আর ঠিক সেই ঘোষণার পরেই সামনে এসেছে সুশান্ত ঘোষের নামে অভিযোগ ৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের নামে 18 বছর আগের এক অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিলেন এক মহিলা।

অভিযোগ রাজ্যের মন্ত্রী থাকাকালীন সিপিএমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ওই মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে 2006 সালে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত কমিশন গঠন করে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তবে এই অভিযোগ পেয়ে রীতিমত মাথায় হাত রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের। যদিও এই বিষয় সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ মুখ খুলতে রাজি হননি। অন্যদিকে, সিপিএমের এক শীর্ষ নেতার কথায়, "অভিযোগ যা সেটা কোনওভাবেই ছোট করে দেখার জায়গা নেই। তবে মনে অভিযোগের সত্যাসত্য নিয়ে ব্যাপক সংশয় আছে। তবে সত্যি হলে সেটা পার্টির কাছে লজ্জাজনক। আর মিথ্যা হলে আরও লজ্জাজনক। কারণ 2006 এমন গুরুত্ব ঘটনা এখন সম্মেলন ঘোষণার পরে অভিযোগ করা হচ্ছে।"

তাঁর কথায়, "স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে জ্যোতিবাবু, কাকাবাবুর পার্টির বর্তমান নেতারা কতটা নিচে নেমেছে সাংগঠনিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সেটা আরও একবার প্রমাণ হবে যেটা দলের কাছে বেশ অস্বস্তিকর।"
সিপিএম সূত্রে খবর, মহিলা বেশ কিছুদিন হল কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এসে পার্টি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে লিখিত অভিযোগ দিয়ে যান। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আলিমুদ্দিন। তবে শীর্ষ নেতারা এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্ধিহান।

সিপিএমের একাংশের বক্তব্য, 2006 এমন ঘটনার পরে 2011 পালা বদল হয়েছে। সুশান্ত ঘোষকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটতে হয়েছে বহু বছর। তখন ওই মহিলা কোনও অভিযোগ করলেন না। মহিলা থানাতেও গেলেন না। এখন সম্মেলন ঘোষণার পরই 18 বছর আগের অভিযোগ নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পৌঁছলেন ! বিরোধী গোষ্ঠীর নিকৃষ্টতম চক্রান্ত যা পার্টির ভাবমূর্তিতে গভীর আঘাত আনবে। সূত্রের খবর, দোর্দণ্ড প্রতাপ সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে অতীতেও সক্রিয় ছিল দলের বিরোধীলবি। তৃণমূলের জন্য নয়, জামিনে মুক্ত হয়েও দীর্ঘ সময় নিজের বসতবাড়ি বা জেলায় পা রাখতে পারেননি পার্টির বিরোধী গোষ্ঠীর চক্রান্তে। তারপরেও শেষ হাসি হেসেছেন সুশান্ত ঘোষ।

2021-এ ফের সূর্যকান্ত মিশ্রের প্যানেলকে উড়িয়ে জেলার সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সুশান্ত ঘোষ। দমে থাকা যুবরা ফের লাল ঝাণ্ডা হাতে জঙ্গল মহলের পথে নেমেছেন নয়া উদ্যমে। তবে শূন্য সিপিএমের নির্বাচন নিয়ে কিছু করে উঠতে না পারলেও দলীয় সম্মেলন নিতে যে এখনও ক্ষমতার লড়াই ভয়ঙ্কর তার প্রকাশ বারে বারে পেয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই অভিযোগ সেই দলীয় ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রের অংশ।
অতীতে মহিলা ঘটিত অভিযোগ ওঠায় রাজ্যে সভার সাংসদ ঋতব্রত বন্ধ্য়পাধ্যায়কে বহিষ্কার করেছিল সিপিএম। এবার এমন কিছু করা গেলে সম্মেলনের আগে আর বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে কোনও বাধা থাকে না।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শীর্ষ এক প্রবীণ নেতা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, "সিপিএম নেতা-কর্মীরা মানুষের কাছে চিরকাল অন্য দলের থেকে আলাদা ছিল দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য। সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে তৃণমূল মিথ্যা মামলা দিয়ে বদনাম যতটা না করতে পেরেছে নিজের দলের নেতারা সেই কাজ করতে চাইছে দলের পদ দখলের উদ্দেশে। নিজে দীর্ঘ দিন এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছি এমন ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। শুধু এই একজনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তার নেতিবাচক ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে জনমনে। পার্টির ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকবে।"

কলকাতা, 7 অগস্ট: সিপিএম রাজ্যে কমিটি সম্প্রতি জেলা থেকে এরিয়া সব স্তরে সম্মেলন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। আর ঠিক সেই ঘোষণার পরেই সামনে এসেছে সুশান্ত ঘোষের নামে অভিযোগ ৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের নামে 18 বছর আগের এক অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিলেন এক মহিলা।

অভিযোগ রাজ্যের মন্ত্রী থাকাকালীন সিপিএমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ওই মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে 2006 সালে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত কমিশন গঠন করে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তবে এই অভিযোগ পেয়ে রীতিমত মাথায় হাত রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের। যদিও এই বিষয় সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ মুখ খুলতে রাজি হননি। অন্যদিকে, সিপিএমের এক শীর্ষ নেতার কথায়, "অভিযোগ যা সেটা কোনওভাবেই ছোট করে দেখার জায়গা নেই। তবে মনে অভিযোগের সত্যাসত্য নিয়ে ব্যাপক সংশয় আছে। তবে সত্যি হলে সেটা পার্টির কাছে লজ্জাজনক। আর মিথ্যা হলে আরও লজ্জাজনক। কারণ 2006 এমন গুরুত্ব ঘটনা এখন সম্মেলন ঘোষণার পরে অভিযোগ করা হচ্ছে।"

তাঁর কথায়, "স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে জ্যোতিবাবু, কাকাবাবুর পার্টির বর্তমান নেতারা কতটা নিচে নেমেছে সাংগঠনিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সেটা আরও একবার প্রমাণ হবে যেটা দলের কাছে বেশ অস্বস্তিকর।"
সিপিএম সূত্রে খবর, মহিলা বেশ কিছুদিন হল কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এসে পার্টি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে লিখিত অভিযোগ দিয়ে যান। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আলিমুদ্দিন। তবে শীর্ষ নেতারা এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্ধিহান।

সিপিএমের একাংশের বক্তব্য, 2006 এমন ঘটনার পরে 2011 পালা বদল হয়েছে। সুশান্ত ঘোষকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটতে হয়েছে বহু বছর। তখন ওই মহিলা কোনও অভিযোগ করলেন না। মহিলা থানাতেও গেলেন না। এখন সম্মেলন ঘোষণার পরই 18 বছর আগের অভিযোগ নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পৌঁছলেন ! বিরোধী গোষ্ঠীর নিকৃষ্টতম চক্রান্ত যা পার্টির ভাবমূর্তিতে গভীর আঘাত আনবে। সূত্রের খবর, দোর্দণ্ড প্রতাপ সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে অতীতেও সক্রিয় ছিল দলের বিরোধীলবি। তৃণমূলের জন্য নয়, জামিনে মুক্ত হয়েও দীর্ঘ সময় নিজের বসতবাড়ি বা জেলায় পা রাখতে পারেননি পার্টির বিরোধী গোষ্ঠীর চক্রান্তে। তারপরেও শেষ হাসি হেসেছেন সুশান্ত ঘোষ।

2021-এ ফের সূর্যকান্ত মিশ্রের প্যানেলকে উড়িয়ে জেলার সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সুশান্ত ঘোষ। দমে থাকা যুবরা ফের লাল ঝাণ্ডা হাতে জঙ্গল মহলের পথে নেমেছেন নয়া উদ্যমে। তবে শূন্য সিপিএমের নির্বাচন নিয়ে কিছু করে উঠতে না পারলেও দলীয় সম্মেলন নিতে যে এখনও ক্ষমতার লড়াই ভয়ঙ্কর তার প্রকাশ বারে বারে পেয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই অভিযোগ সেই দলীয় ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রের অংশ।
অতীতে মহিলা ঘটিত অভিযোগ ওঠায় রাজ্যে সভার সাংসদ ঋতব্রত বন্ধ্য়পাধ্যায়কে বহিষ্কার করেছিল সিপিএম। এবার এমন কিছু করা গেলে সম্মেলনের আগে আর বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে কোনও বাধা থাকে না।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শীর্ষ এক প্রবীণ নেতা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, "সিপিএম নেতা-কর্মীরা মানুষের কাছে চিরকাল অন্য দলের থেকে আলাদা ছিল দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য। সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে তৃণমূল মিথ্যা মামলা দিয়ে বদনাম যতটা না করতে পেরেছে নিজের দলের নেতারা সেই কাজ করতে চাইছে দলের পদ দখলের উদ্দেশে। নিজে দীর্ঘ দিন এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছি এমন ঘটনায় আমি স্তম্ভিত। শুধু এই একজনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তার নেতিবাচক ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে জনমনে। পার্টির ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.