বাঁশবেড়িয়া, 1 সেপ্টেম্বর: পুজোর আগে কাজ বন্ধ হয়ে গেল গ্যাঞ্জেস জুটমিলে ৷ মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে আজ জুটমিল থেকে বেরিয়ে আসেন হাজারেরও বেশি শ্রমিক ৷ স্থায়ী শ্রমিকদের সমানভাবে কাজ দেওয়া-সহ একাধিক দাবিতে রবিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ চলে কারখানার গেটের সামনে ৷ দীর্ঘদিন ধরে মালিক কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি না-মানায় এই বিক্ষোভ বলে অভিযোগ ৷
রবিবার সকাল থেকেই প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু করেন ৷ গ্যাঞ্জেস জুটমিলের মধ্যেই গ্যাঞ্জেস জুট প্রাইভেট লিমিটেড ও গ্যাঞ্জেস জুট কোম্পানি লিমিটেড নামে দু’টি মিল রয়েছে ৷ সেখানে প্রায় 6 হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন ৷ অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই স্থায়ী শ্রমিকদের পরিবর্তে অস্থায়ী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে ৷ অল্প শ্রমিকদের দিয়ে বেশি কাজ করাচ্ছে কর্তৃপক্ষ ৷ এমনকি মজদুর কলোনির কোয়ার্টারের বিদ্যুৎতের বিল হঠাৎই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
উল্লেখ্য়, তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন এআইটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে এই আন্দোলনকে সমর্থন করা হয়েছে ৷ এআইটিটিইউসি নেতৃত্ব তাদের পতাকা নিয়ে আন্দোলনে সামিল হন ৷ তাদের অভিযোগ, মালিকপক্ষকে জানিয়েও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি ৷ উলটে জুটমিল কর্তৃপক্ষের তরফে ছাঁটাইয়ের হুমকি দেওয়া হচ্ছে । এর প্রতিবাদে আজকেই এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা ।
জুটমিলের এআইটিটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক বিনোদ কুমার রাজভর বলেন, "জুটমিল কর্তৃপক্ষ লাগাতার জুলুম করছে আমাদের উপর ৷ বৃহস্পতিবার থেকেই এই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ৷ শ্রমিক সংগঠনের তরফ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে মালিকপক্ষকে ৷ কিন্তু, কোনও কথায় কর্ণপাত করছেন না তাঁরা ৷ এক বছর ধরে শ্রমিক ছাঁটাই চলছে ৷ আমরা দাবি করছি সমস্ত শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো হোক ৷ তাঁর জায়গায় মালিকপক্ষ পাঁচ দিন মেশিন চালাচ্ছে ৷"
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, "পাশেই ঠিকা শ্রমিকদের দিয়ে আরেকটি জুট মিল চালানো হচ্ছে ৷ অথচ 20 বছর ধরে আমরা কাজ করছি ৷ আমাদের সঠিকভাবে কাজ করাচ্ছে না ৷ আজ সমস্ত শ্রমিকদের অনুরোধ করেছি এই বিক্ষোভের জন্য ৷ আমাদের দাবি, পাট ঘর থেকে সেলাই ঘর পর্যন্ত কাজের চাপ বাড়ানো চলবে না ৷ এই সমস্ত দাবিতেই আমরা জুট মিলের কাজ বন্ধ করেছি ৷ জুটমিল কোয়ার্টারে বিদ্যুতের বিল বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের মাইনে থেকে কোনও অনুমতি ছাড়াই টাকা কাটা হচ্ছে ৷ শ্রমিকদের জন্য যে এগ্রিমেন্ট আছে, সেটাও মানছে না মালিকপক্ষ ৷"
শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বাঁশবেড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ ৷ যদিও, জুটমিল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সাড়ে 7 ঘণ্টা কাজ করতে হবে শ্রমিকদের ৷ কিছু শ্রমিকের জন্যই এই গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়েছে ৷ এর আগে সুষ্ঠুভাবেই চলছিল জুটমিলের কাজ ৷