ETV Bharat / state

12 বছরের অপেক্ষার অবসান ! কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় ভোট দেওয়ার আশায় সন্দেশখালির একাংশ - Lok Sabha Election 2024

LOK SABHA ELECTION 2024: রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে কোনও দিন ভোট দিতে পারেননি সন্দেশখালির একাংশ মানুষ ৷ কারণ, ভোট হতেই দিতেন না শাসকদলের নেতারা ৷ এমনটাই অভিযোগ করলেন, এতগুলো বছর ধরে ভোট দিতে না-পারা মানুষেরা ৷ ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় সেই কাহিনী শোনালেন ভোট না-দিতে পারে একাংশ ৷

ETV BHARAT
সন্দেশখালি (ছবি- ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 22, 2024, 1:56 PM IST

12 বছর পর নিজেদের ভোট নিজের দেওয়ার অপেক্ষায় সন্দেশখালির বাসিন্দারা (ইটিভি ভারত)

সন্দেশখালি, 22 মে: তাঁরা শেষবার ভোট দিয়েছিলেন 2011 সালে ৷ রাজ্যে 34 বছরের বাম শাসনের পালাবদলের সময় ৷ তারপর থেকে একাধিক ভোট এসেছে, আর গিয়েছে ৷ ভোট কেন্দ্রে গেলে আঙুলে কালি লাগিয়ে ভোটের কাগজ কেড়ে নিত তৃণমূলের লোকজন ৷ তারপর শাসকের ইচ্ছেতেই হয় ভোট ৷ কথা হচ্ছে সন্দেশখালির নিপীড়িত মানুষগুলির ৷ যাঁদের উপর গত 10-12 বছর ধরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে শেখ শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর উপর ৷ তেমনই কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছিল ইটিভি ভারত ৷

আগামী 1 জুন সন্দেশখালিতে নির্বাচন ৷ বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত এই সন্দেশখালি-সহ সুন্দরবনের একাংশ দ্বীপ অঞ্চল ৷ চলতি লোকসভা নির্বাচনে এই সন্দেশখালি একটি দাবানলের নাম ৷ যেখানে শাসকদলের বিরুদ্ধে জুলুমবাজি, নারী নির্যাতন, জমিদখল-সহ নানান অভিযোগ উঠেছে ৷ আর সেখান থেকে সুন্দরবনের এক দ্বীপ সন্দেশখালি আজ রাজনীতির বদ্ধভূমি ৷ সেখানকার একাংশ মানুষের মধ্যে আরও একটি ক্ষোভ আছে ৷ তা হল, নিজেদের ভোটাধিকার নিজেরা প্রয়োগ করতে পারেন না ৷ আর সেটা হয়ে আসছে 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ৷

ভোট না-দিতে পারার বিষয়টি বেশি ঘটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৷ 2023 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্মৃতি এখনও তাজা সেখানকার মানুষের মধ্যে ৷ বিরোধী দলের কেউ ভোটে দাঁড়ালে জোটে হেনস্থা ও পরিবারকে ভয় দেখানো ৷ কারও বাড়ির রেশন বন্ধ হয়ে যায়, তো কারও সন্তানের স্কুল যাওয়া ৷ এমনই ভয়াবহ অভিযোগ ভেসে বেড়াচ্ছে সন্দেশখালির 'নোনা-বাতাসে' ৷ আর ভোট কেন্দ্র পর্যন্ত হেঁটে গেলেও, ভোট দেওয়া হয় না ৷ তেমনি এক বাসিন্দা অভিযোগ করলেন, বুথের কাছে যেতেই শাসকদলের লোকেরা হাত থেকে ভোটের কাগজ নিয়ে নেয় ৷ আর বাইরে দাঁড় করিয়ে হাতে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ তারপর কোথায় ? কার নামে ভোট পড়ল ? তা আর জানতে পারেন না ৷

লোকসভা ও বিধানসভা ভোটেও ছবিটা প্রায় এক ৷ তবে, যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকত, সেখানে লোকে ভোট দিতে পারতেন ৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেও যে, পুলিশ-প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ৷ তবে, 2024 লোকসভায় ভোট দিতে পারবেন, এমনটা আশা করছেন সকলে ৷ কীসের ভরসায় এই আশা ? একাংশের কথায়, "প্রধানমন্ত্রী বলে গেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৷ তাঁদের ভরসায় ভোট দিতে যাব ৷ আশা করছি এবার ভোট দিতে পারব ৷"

স্থানীয়দের দাবি, "যাঁদের দাপটে ভোট লুঠ হত, তারা এখন জেলে ৷ এবার ভোট দিতে যাওয়া যাবে ৷ নিজের পছন্দের প্রাথীকে ভোট দেব ৷" এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে রেকর্ড সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ৷ সে প্রসঙ্গ তুলে অনেকেই বলছেন, "পুলিশকে তো আর ভরসা করা যায় না ৷ পুলিশের সামনে হাতে কালি লাগিয়ে বুথ থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হত ৷ এখন আর হবে না ৷ মানুষ প্রতিবাদ করবে ৷ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৷" সন্দেশখালির এই মানুষগুলোর আশাপূরণ হয় কিনা, সেটাই দেখার ৷ অপেক্ষা 1 জুনের ৷

আরও পড়ুন:

  1. মা-বোনেদের জন্য দুঃখিত! সন্দেশখালি যাবেন, জানালেন মমতা
  2. লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছেন না সন্দেশখালির মহিলারা ! কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
  3. ভোটের আগে স্বস্তি রেখা পাত্রের, 14 জুন পর্যন্ত পুলিশি পদক্ষেপে না হাইকোর্টের

12 বছর পর নিজেদের ভোট নিজের দেওয়ার অপেক্ষায় সন্দেশখালির বাসিন্দারা (ইটিভি ভারত)

সন্দেশখালি, 22 মে: তাঁরা শেষবার ভোট দিয়েছিলেন 2011 সালে ৷ রাজ্যে 34 বছরের বাম শাসনের পালাবদলের সময় ৷ তারপর থেকে একাধিক ভোট এসেছে, আর গিয়েছে ৷ ভোট কেন্দ্রে গেলে আঙুলে কালি লাগিয়ে ভোটের কাগজ কেড়ে নিত তৃণমূলের লোকজন ৷ তারপর শাসকের ইচ্ছেতেই হয় ভোট ৷ কথা হচ্ছে সন্দেশখালির নিপীড়িত মানুষগুলির ৷ যাঁদের উপর গত 10-12 বছর ধরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে শেখ শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর উপর ৷ তেমনই কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছিল ইটিভি ভারত ৷

আগামী 1 জুন সন্দেশখালিতে নির্বাচন ৷ বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত এই সন্দেশখালি-সহ সুন্দরবনের একাংশ দ্বীপ অঞ্চল ৷ চলতি লোকসভা নির্বাচনে এই সন্দেশখালি একটি দাবানলের নাম ৷ যেখানে শাসকদলের বিরুদ্ধে জুলুমবাজি, নারী নির্যাতন, জমিদখল-সহ নানান অভিযোগ উঠেছে ৷ আর সেখান থেকে সুন্দরবনের এক দ্বীপ সন্দেশখালি আজ রাজনীতির বদ্ধভূমি ৷ সেখানকার একাংশ মানুষের মধ্যে আরও একটি ক্ষোভ আছে ৷ তা হল, নিজেদের ভোটাধিকার নিজেরা প্রয়োগ করতে পারেন না ৷ আর সেটা হয়ে আসছে 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ৷

ভোট না-দিতে পারার বিষয়টি বেশি ঘটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৷ 2023 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্মৃতি এখনও তাজা সেখানকার মানুষের মধ্যে ৷ বিরোধী দলের কেউ ভোটে দাঁড়ালে জোটে হেনস্থা ও পরিবারকে ভয় দেখানো ৷ কারও বাড়ির রেশন বন্ধ হয়ে যায়, তো কারও সন্তানের স্কুল যাওয়া ৷ এমনই ভয়াবহ অভিযোগ ভেসে বেড়াচ্ছে সন্দেশখালির 'নোনা-বাতাসে' ৷ আর ভোট কেন্দ্র পর্যন্ত হেঁটে গেলেও, ভোট দেওয়া হয় না ৷ তেমনি এক বাসিন্দা অভিযোগ করলেন, বুথের কাছে যেতেই শাসকদলের লোকেরা হাত থেকে ভোটের কাগজ নিয়ে নেয় ৷ আর বাইরে দাঁড় করিয়ে হাতে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ তারপর কোথায় ? কার নামে ভোট পড়ল ? তা আর জানতে পারেন না ৷

লোকসভা ও বিধানসভা ভোটেও ছবিটা প্রায় এক ৷ তবে, যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকত, সেখানে লোকে ভোট দিতে পারতেন ৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেও যে, পুলিশ-প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ৷ তবে, 2024 লোকসভায় ভোট দিতে পারবেন, এমনটা আশা করছেন সকলে ৷ কীসের ভরসায় এই আশা ? একাংশের কথায়, "প্রধানমন্ত্রী বলে গেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৷ তাঁদের ভরসায় ভোট দিতে যাব ৷ আশা করছি এবার ভোট দিতে পারব ৷"

স্থানীয়দের দাবি, "যাঁদের দাপটে ভোট লুঠ হত, তারা এখন জেলে ৷ এবার ভোট দিতে যাওয়া যাবে ৷ নিজের পছন্দের প্রাথীকে ভোট দেব ৷" এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে রেকর্ড সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ৷ সে প্রসঙ্গ তুলে অনেকেই বলছেন, "পুলিশকে তো আর ভরসা করা যায় না ৷ পুলিশের সামনে হাতে কালি লাগিয়ে বুথ থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হত ৷ এখন আর হবে না ৷ মানুষ প্রতিবাদ করবে ৷ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ৷" সন্দেশখালির এই মানুষগুলোর আশাপূরণ হয় কিনা, সেটাই দেখার ৷ অপেক্ষা 1 জুনের ৷

আরও পড়ুন:

  1. মা-বোনেদের জন্য দুঃখিত! সন্দেশখালি যাবেন, জানালেন মমতা
  2. লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছেন না সন্দেশখালির মহিলারা ! কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
  3. ভোটের আগে স্বস্তি রেখা পাত্রের, 14 জুন পর্যন্ত পুলিশি পদক্ষেপে না হাইকোর্টের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.