জলপাইগুড়ি, 12 জুলাই: উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে যত্রতত্র রিসর্ট গজিয়ে উঠেছে ৷ কোথাও সরকারি খাস জমি দখল করে বিল্ডিং প্ল্যান ছাড়াই রিসর্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে । কোথাও আবার পাট্টার জমি লিজ নিয়ে রিসর্ট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ নদীর ধারে জমি দখলের অভিযোগ শাসক ও বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ৷ এইসব বেআইনি রিসর্ট চিহ্নিতকরণে নামল প্রশাসন ৷
জলপাইগুড়ি জেলাজুড়ে রিসর্টের ব্যবসার নামে গড়ে উঠেছে জমির কেনাবেচা ৷ গাজোলডোবা ছাড়াও বেআইনি রিসর্ট তৈরি হয়েছে লাটাগুড়িতে ৷ জেলায় প্রায় শতাধিক রিসর্টের বিরুদ্ধে চলছে অভিযান ৷ এই বেআইনি রিসর্টগুলির নাম নথিভুক্ত করা নেই গ্রামপঞ্চায়েতেও । এ নিয়ে শুক্রবারই লাটাগুড়িতে বৈঠকে বসছেন রিসর্টের মালিকরা ৷
ইতিমধ্যে ক্রান্তি ব্লকের বিডিও, ভূমি ও ভূমি-রাজস্ব আধিকারিক, পুলিশ বেআইনি রিসর্টের হানা দিয়েছেন ৷ সরকারি জমি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন ৷ লাটাগুড়ির এক রিসর্টের মালিক নিখিল সিকদার বলেন, "সরকারি জমিতে রিসর্ট আছে জানতাম না ৷ এটা পাট্টার জমি ৷ এই হিসেবেই জমিটা ব্যবহার করা ৷ এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই ৷ তবে পাট্টা আমাদের নামে নেই ৷ যারা এই জমি লিজ হিসেবে দিয়েছে তাদের নামেই পাট্টা আছে ৷ 99 বছরের লিজ নেওয়া হয়েছে ৷ হঠাৎ উঠে যেতে হলে খালি হাত-পায়ে বেরিয়ে যেতে হবে ৷"
জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের বিডিও রিমিল সোরেন বলেন, "অবৈধভাবে যাঁরা সরকারি জমি জবরদখল করে বসে আছেন, সেই জায়গাগুলি দখল মুক্ত করছি ৷ আমরা বেশ কিছু সরকারি জমি শনাক্ত করেছি ৷ সেই সমস্ত সরকারি জমিগুলিতে অবৈধভাবে রিসর্ট করে বসে আছেন রিসর্টের মালিকরা। সেই জায়গাগুলিতে আমরা পরিদর্শন করছি ৷ তাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি, যাতে তারা দু-তিনদিনের মধ্যে জমির কাগজ দেখাতে পারে । নতুবা জমিগুলি ছেড়ে দিতে হবে ৷ আর যদি তাঁরা জমি ছেড়ে না দেন, তাহলে সরকারের নির্দেশ ক্রমে আমরা কাজ করব ৷"
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহুয়া গোপ বলেন, "ডুয়ার্সের মালবাজার, ক্রান্তি, নাগরাকাটা এলাকায় অবৈধভাবে ভাবে রিসর্ট গজিয়ে উঠেছে ৷ পর্যটন স্থলগুলিতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে ৷ মালবাজারের রিভিউ মিটিংয়ে জেলাশাসককে রিসর্টগুলির জমির কাগজ দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল ৷" তিনি জানান, তারপরই বিডিও, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের মাধ্যমে অবৈধভাবে তৈরি করা কিছু রিসর্টের তথ্য পেয়েছেন ৷ এরপর অভিযানে নেমেছে ব্লক প্রশাসন ৷ গ্রামপঞ্চায়েতের তালিকা অনুযায়ী সব রিসর্ট নথিভুক্ত নয় ৷
অবৈধ রিসর্ট প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহুয়া গোপ বলেন, "সবচেয়ে বড় কথা আমি ওই এলাকা থেকে জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ৷ কিন্তু ওই এলাকায় রিসর্ট ব্যবসা যাঁরা করছেন, তাঁদের ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থায় বিল্ডিং পাশের একটা নিয়ম আছে ৷ জেলা পরিষদে খোঁজ নিয়ে দেখলাম হাতে গোনা কয়েকটি রিসর্ট ছাড়া কোনও রিসর্টের বিল্ডিং প্ল্যানের কোনও অনুমোদন নেই ৷"