বহরমপুর, 4 জুন: চোখমুখ দেখেই স্পষ্ট যে, রাজনীতির আঙিনায় নবাগত ইউসুফ পাঠানের কাছে হারের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৷ 1999 লোকসভা নির্বাচনে জিতে প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তিল তিল করে সাজিয়েছিলেন যে বহরমপুরকে, সেই বহরমপুর মঙ্গলবার হাত ছেড়ে দিল অধীর রঞ্জন চৌধুরীর ৷ বডি ল্যাঙ্গুয়েজে বিপর্যয়ের ছাপ স্পষ্ট, তবু হারের পর এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন 'রবিনহুড' অধীর ৷ আড়াই দশক পর বহরমপুরে হার নিয়ে বলতে গিয়ে স্বল্প বাক্যই খরচ করলেন তিনি ৷ বললেন, "এতদিন অপরাজেয় ছিলাম, এখন পরাজিত ৷ এর বেশি কী বলব ৷"
সত্যিই তো, রাজনীতিতে আনকোরা ইউসুফের কাছে এমন দুঁদে রাজনীতিকের হার নিয়ে কী-ই বা বলার থাকতে পারে ৷ তবু বললেন অধীর ৷ বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড জয়ের ব্যবধান নিয়ে বললেন, "ওখানে (ডায়মন্ড হারবার) তো ভোট হয়নি, ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে ৷" বসিরহাটে হাজি নুরুল ইসলামের জয় নিয়ে অধীর বলেন, "এটা অদ্ভূত লাগছে, অবাক লাগছে ৷"
পাশাপাশি নির্বাচনের ফলাফলকে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রতিফলন বলে বর্ণনা করলেন পরাজিত অধীর ৷ তাঁর কথায়, "পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ ধর্মের পক্ষে উদার এবং শক্তিজনক বধ্যভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে ৷ এ জিনিস বাংলার জন্য ভালো হবে না ৷" ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হলে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা বলেছিলেন ভোটের আগে ৷ এদিন ফলাফলের পর স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে এই সংক্রান্ত প্রশ্ন ধেয়ে যায় ৷ যদিও তিনি তাঁর কথা থেকে সরছেন না বলে জানান অধীর ৷ তাঁর কথায়, "যখন আমি রাজনীতি ছাড়ব, জানিয়ে দেব ৷"
নির্বাচন কমিশনের প্রদেয় তথ্য অনুযায়ী, ইউসুফ পাঠানের কাছে 85 হাজার 63 ভোটে হেরেছেন অধীর চৌধুরী ৷ ইউসুফ পাঠান পেয়েছেন 5 লক্ষ 23 হাজার 586 ভোট। পক্ষান্তরে অধীর চৌধুরী পেয়েছেন 4 লক্ষ 38 হাজার 523 ভোট।