ঘাটাল, 22 সেপ্টেম্বর: কেন্দ্র ও রাজ্যের বিবাদের মধ্যে না গিয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচানোকেই প্রাধান্য দিলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব ৷ রবিবার তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খান ৷
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) না জানিয়ে জল ছেড়েছে ৷ তার ফলেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় ৷ একে ম্যান মেড বন্যা বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুধু তাই নয়, দেব যেদিন ঘাটালে গিয়ে এ কথা বলছেন সেদিনই ডিভিসির বোর্ড থেকে পদত্যাগ করলেন বাংলার দুই প্রতিনিধি। সেখানেই রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, দল এবং রাজ্য প্রশাসনের থেকে কিছুটা হলেও ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন তারকা-সাংসদ।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে দেবের প্রতিক্রিয়া, "মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এবিষয়ে কথা হয়েছিল ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন ৷ আমাদের নেত্রী হিসেবে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন ৷ সেটাই সবচেয়ে বড় চিঠি ৷ এখন এই রাজ্য-কেন্দ্র ঝামেলা করে লাভ নেই ৷ মানুষকে কীভাবে তাদের কষ্ট থেকে বাঁচাতে পারি, তারা যে যন্ত্রণার মধ্যে আছে, তা থেকে বের করে আনতে পারি, এটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ৷"
গত কয়েক দিনে বৃষ্টি এবং তার সঙ্গে ডিভিসির ছাড়া জলের জেরে প্লাবিত গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর ৷ তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ঘাটাল ও ডেবরা, পাঁশকুড়ার একটা অংশ, পিংলা, সবং, খড়গপুর গ্রামীণের বিশেষ অংশ ৷ এদিন দুপুরে ঘাটাল ব্লকের অজবনগর এলাকায় বোটে চড়ে মন্ত্রী ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন তৃণমূল সাংসদ দেব ৷
পাশাপাশি অজবনগর এলাকায় বন্যা পীড়িতদের হাতে শুকনো খাবার, জল ও ত্রিপল-সহ ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন দেব ও মন্ত্রী জাভেদ খান ৷ এই ত্রাণ বিলিকে কেন্দ্র করে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বন্যা পীড়িতদের মধ্যে ৷ নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে দেব বলেন, "বছরের পর বছর বন্যার সময় ঘাটালের মানুষ খুবই কষ্টে থাকে ৷ এখনও জলে ডুবে রয়েছে ঘরবাড়ি, শিশুরাও রয়েছে, তাঁদের কাছে যাতে দ্রুত খাবার-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণের সামগ্রী পাঠানো যায় সেই চেষ্টা চলছে ৷"
ঘাটাল-সহ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন ৷ ডিভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীকে দু'টি চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেই চিঠির পালটা রাজ্যকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা দেয় কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ৷ কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে সন্তুষ্ট না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷