কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: শ্যামবাজারে রাত জাগার কর্মসূচি থেকে হাসিমুখে ছবি পোস্ট করেছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ৷ তাই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় তাঁকে কটাক্ষের স্বীকার হতে হয়েছে ৷ সেই কটাক্ষেরই এবার পালটা দিলেন অভিনেত্রী ৷ ট্রোলারদের উদ্দেশে তাঁর সাফ জবাব, "বেশ করেছি হেসেছি, হেসে হেসেই প্রতিবাদ করব ৷"
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি 5 সেপ্টেম্বর । আপাতত সকলের চোখ সেদিকেই । অন্যদিকে চলছে রাত দখলের কর্মসূচি । সঠিক বিচারের আশায় রাত জাগছেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই ৷ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, তারকা থেকে সমস্ত পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে । এ যেন কোনও নাম না-জানা শহর । অপরিচিতরা হচ্ছেন পরিচিত ৷ যত দিন যাচ্ছে তীব্র হচ্ছে প্রতিবাদের কণ্ঠ ।
তবে এরই মধ্যে শ্যামবাজারে রাত জাগাদের নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ট্রোলিং-এর অন্ত নেই । আর সেই ট্রোলিংয়ের মুখেই পড়লেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ৷ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গিয়ে তাঁর মুখে কেন হাসি, সেই নিয়ে তাঁকেও ট্রোল করতে দেরি করেননি সোশাল মিডিয়ার এক সংখ্যক 'সচেতন' নাগরিক । কিন্তু স্বস্তিকাও তো চুপ করে থাকার পাত্রী নন । তিনিও এ বিষয়ে পালটা দিয়েছেন ৷
স্বস্তিকা নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলের পাতায় লিখেছেন, "যারা হেসেছি বলে ট্রোল করতে ব্যস্ত, তারা কেউ একবারও জিজেস করল না কিন্তু যে এতগুলো মেয়ে রাস্তায়, শ্যামবাজার মোড়ে তারা বাথরুমে কোথায় যাবে ? কারও পিরিয়ড হলে কোথায় প্যাডের ব্যবস্থা হবে ? ছিঃ ছিঃ এসব একদম ভাববেন না ।"
অভিনেত্রী আরও লেখেন, "আমি সন্দীপ ঘোষ নই । আমি ধর্ষণ করিনি । আমি খুনও করিনি । রাস্তায় নেমে 15 ঘণ্টা ধরে প্রতিবাদরত মহিলা বা পুরুষদের সারাক্ষণ মুখ গম্ভীর করে থাকতে হবে সেই নিয়মটা কে বানাল ? আর কোনও নিয়ম মানব না । যেভাবে মনে হবে সেই ভাবে রাস্তায় নামব, দিনে, রাতে ।"
কয়েকজন নতুন বন্ধুর সঙ্গে ছবি ভাগ করে নিয়ে স্বস্তিকা লিখেছেন, "এরা আমার অপরিচিত । এদের সবার সঙ্গে আজকে আলাপ হল । কত অচেনা মানুষ চেনা হয়ে উঠছে । বেশ করেছি হেসেছি । যারা 20 দিন ধরে রোজ জেগে আছে তারা যেভাবে ভালো থাকার হোক থাকুক । যে যেভাবে প্রতিবাদ করার করুক । হেসে বা না হেসে । এই নিয়েও আবার কণ্ঠ তুলতে হচ্ছে, সত্যি কী দুঃসময় । যা, যত ট্রোল করবি কর । হেসে হেসেই প্রতিবাদ করব । তোরা বাড়িতে বসে ফেসবুক ফেসবুক খেলা কর ।"
আজ 4 সেপ্টেম্বর । ফের হাতে হাত রেখে রাত জাগার দিন । ফের রাত দখলের দিন । আর যারা ঘরে থাকবে তারা রাত 9 টা থেকে 10 টা ঘরের আলো বন্ধ করে আরজি করের নির্যাতিতার জন্য জ্বালবে মোমবাতি । আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে বুধবার রাতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ৷