কলকাতা, 23 জুলাই: আবারও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (এনআরএস) বিরুদ্ধে ৷ চিকিৎসার গাফিলতিতে 7 বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা ওই শিশু ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও, গত 5-22 জুলাই পর্যন্ত তাকে ফেলে রাখা হয়েছিল থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডে ৷ সেই কারণেই যথাযথ চিকিৎসা হয়নি বলেই অভিযোগ করেছে পরিবার ৷ সোমবার বিকেলে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷
কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সনাতন কারকের নাম ৷ ছেলেকে চিকিৎসার জন্য শিয়ালদায় নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন তিনি ৷ সেখানে এসেই প্রতারকের খপ্পড়ে পড়েছিলেন তিনি ৷ এনআরএস-এর ব্লাড ব্যাংকের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আড়াই হাজার টাকা তাঁর থেকে নিয়েছিল ৷ কিন্তু, তারপর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যায় সেই ব্যক্তি ৷ সনাতন কারকের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছিল মুচিপাড়া থানায় ৷
এবার সেই শিশুরই মৃত্যু হয়েছে ৷ তবে, এবার এনআরএস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল ওই শিশুর পরিবার ৷ তারা অভিযোগ করেছেন, বাচ্চাটি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও, তাকে দীর্ঘদিন থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডে ফেলে রাখা হয় বিনা চিকিৎসায় ৷ এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠিও লিখেছিলেন সনাতন কারক ৷ অভিযোগ, তারপরেও কোনও সুরাহা হয়নি ৷
মৃত শিশুর মামা শ্রীকান্তর অভিযোগ, "আমাদের ছেলেটা ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ছিল ৷ সেই বিষয়ে হাসপাতাল সব জানত ৷ তারপরেও দিনের পর দিন ওকে রাখা হয়েছিল থ্যালাসেমিয়া বিভাগে ৷ বারবার আমরা বলেছি, ওর ক্যানসারের চিকিৎসা করার ৷ কিন্তু, বেডের অভাব দেখিয়ে ওকে থ্যালাসেমিয়া বিভাগে বিনা চিকিৎসায় রাখা হয়েছিল ৷ গতকাল বিকালে ও আমাদের ছেড়ে চলে যায় ৷ পরিবারের বড় জায়গায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই ৷ কিন্তু, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে এসেও এই পরিণতি হল ৷"
শ্রীকান্ত বধুক জানান, রক্ত নিয়ে প্রতারণার ঘটনায় পুলিশ পরবর্তী সময়ে অভিযুক্তকে ধরেছিল ৷ অভিযুক্ত নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সুপেন মণ্ডল ৷ কিন্তু, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷ তাঁর কথায়, "আমাদের আবারও 2 হাজার টাকা দিয়ে রক্ত কিনতে হয়েছিল ৷ এমন কি দু’জন ডোনারের ব্যবস্থাও করেছিলাম ৷ কিন্তু, ওই দিনের আড়াই হাজার টাকা আমরা আর ফেরত পাইনি ৷"