কলকাতা, 18 জুন: মৎস্যজীবীদের জন্য এবছর থেকে সমুদ্রসাথী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার ৷ আর প্রথম বছরেই এই প্রকল্পের সুবিধে পেতে 56 হাজার মৎস্যজীবীর আবেদন জমা পড়ল সরকারের কাছে ৷
প্রতিবছর 15 এপ্রিল থেকে 14 জুন রাজ্যে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য মৎস্যজীবীদের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকে । ফলে এই সময় মৎস্যজীবীদের কর্মসংস্থান নিয়ে একটা বড় সংকটের মুখোমুখি হতে হয় । মূলত এই কথা মাথায় রেখেই রাজ্য সরকার সমুদ্রসাথী নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছিল । এই প্রকল্প অনুসারে, যে সময়টা মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারেন না, সেই সময় তাঁদের একটি ভাতা দেবে রাজ্য সরকার । এই প্রকল্পের আওতায় এই দু'মাস, প্রতি মাসে মাথাপিছু আবেদন করা মৎস্যজীবীদের 5000 টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার ।
এবছর 1 এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প চালু হয় । মৎস্য দফতর থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম বছরেই সমুদ্রসাথী প্রকল্পে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জমা পড়েছে 56 হাজার 187টি । মূলত চার জেলার মৎস্যজীবী এই প্রকল্পের জন্য আবেদন জানান । উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া ।
মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, এই প্রকল্পে এবছর মোট জমা পড়া আবেদনের মধ্যে ইতিমধ্যেই 22, 672 জনকে এই প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে । বাতিল হয়েছে 813 জনের আবেদন । বাকি আবেদনগুলি ঝাড়াই বাছাই চলছে ৷ তাদের মধ্যে থেকেও যদি দেখা যায় আবেদনকারীদের মধ্যে কেউ উপযুক্ত, তাঁরা অবশ্যই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন ।
প্রশ্ন হল, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, 15 এপ্রিল থেকে 14ই জুন পর্যন্ত যে সময়টা মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারেন না, সেই সময় তাঁদের হাতে এই ভাতা তুলে দেওয়া হবে । কিন্তু এবছর ওই সময় নির্বাচন থাকায় সবক্ষেত্রে পুরো ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ করে আবেদনকারীদের সাহায্যের টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি । তবে যাঁরা উপযুক্ত তাঁরা সকলেই এই সাহায্য পাবেন বলে জানিয়েছেন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই আধিকারিক ৷
দফতর সূত্রে যতদূর জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে । ওই জেলা থেকে 31 হাজার 645 জন এই প্রকল্পে আবেদন করেন । এরপরই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সেখানে আবেদনকারীর সংখ্যা 22 হাজার 685 । তৃতীয় স্থানে রয়েছে হাওড়া, এই জেলা থেকে আবেদনকারীর সংখ্যা 989 । উত্তর 24 পরগনার আবেদনকারীর সংখ্যা 688 ।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা এবছরে শুধু আবেদন করেছেন, আগামী দিনে তাঁরাই যে শুধু এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন তা নয় । আগামী বছরেও মৎস্যজীবীরা এই সুবিধা পাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করতে পারবেন । দফতরের তরফ থেকে যোগ্যতার মান যাচাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । যতদূর জানা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই প্রকল্পের জন্য 200 কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে প্রায় দু'লক্ষ মৎস্যজীবীকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়াই এই মুহূর্তে রাজ্যের লক্ষ্য ।