জলপাইগুড়ি, 17 অগস্ট: পটল চিংড়ি থেকে চিতল মাছের মুইঠা-সহ পাঁচ রকমের মাছর পদ ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয় মনসা দেবীকে ৷ 515 বছর ধরে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসাপুজোয় দেবীকে আমিষ ভোগ দেওয়াই রীতি ৷ সেই রীতি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছেন রাজবাড়ির সদস্যরা ৷ আজও রাজবাড়িতে দেবীকে ভোগে নিবেদন করা হয় বোয়াল, ইলিশ, চিংড়ি, চিতল ও কাতলা মাছ ৷ শনিবার থেকে মনসা পুজোর মেলা শুরু হয়েছে ।
বিভিন্ন এলাকার মনসা পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম পুরানো জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির এই মনসা পুজা ৷ কথিত আছে, 1509 সালে জলপাইগুড়ি বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজো শুরু হয় ৷ চিরাচরিত রীতি মেনেই প্রতি বছর পুজোর আয়োজন করা হয়, জানিয়েছেন রাজপরিবারের পুরোহিত শিবু ঘোষাল ৷ মনসা দেবীর মূর্তি গড়ে স্থায়ী মণ্ডপে পুজো হয় ৷ মনসা দেবীর সঙ্গে মা পদ্মা, জরত কারুমনি, বেহুলা-লখিন্দর, গদা ও গদানির বিগ্রহ থাকে পুজোর আসনে ৷
এই মনসা পুজো প্রসঙ্গেই বৈকুণ্ঠপুর রাজ পরিবারের পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, "নিয়ম মেনে দেবী মনসার পুজো শুরু হল ৷ মনসাকে আমিষ ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে ৷ পুজোর পাশাপাশি আজ থেকে শুরু হল বিষহরি গানের আসর ৷" জলপাইগুড়ি বৈকুণ্ঠপুর রাজ পরিবারের সদস্য প্রণত বসু বলেন, "বৈকুণ্ঠপুর রাজ পরিবারে মনসা পুজো দু'রকম ভাবে হয় ৷ একটা নিত্য পুজো, আরেকটি বাৎসরিক পুজো ৷ এটা বাৎসরিক পুজো ৷ নিয়ম মেনে পুজো হচ্ছে ।"
রাজা নেই, কিন্তু রাজবাড়ির মনসা পুজোর নিয়ম নিষ্ঠা একই রয়েছে ৷ রাজ পরিবারের সদস্যরা প্রতিমাকে বরণ করেন ৷ এরপর ভক্তরা অঞ্জলি দেন ৷ প্রতিবছর পুজোকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ি চত্বর জুড়ে মেলা বসে ৷ জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পাঁচশো বছরের পুরোনো মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে দূরদূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য মানুষ আসেন পুজো দিতে ৷ পুজোকে ঘিরে মেলা বসে ৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি অসম, বিহার থেকেও অনেকে আসেন এই পুজো দেখতে ৷