দুর্গাপুর, 27 সেপ্টেম্বর: রাজার কাছ থেকে জায়গিরদারি, পুরো দুর্গাপুর শহর যার নামকরণে তাঁদের বাড়ির দুর্গোৎসব, প্রায় 300 বছরের পুজো ৷ অবিভক্ত বর্ধমান জেলার রাজা বিজয় চাঁদের কাছ থেকে জায়গিরদারি পেয়েছিলেন দুর্গাচরণ চট্টোপাধ্যায়ের পূর্বপুরুষ। জেলার দাঁইহাট থেকে বাঁকুড়া, জগন্নাথপুর থেকে দুর্গাপুরে ঘাঁটি গেড়েছিলেন ইংরেজ আমলে।
পরিবারের তরফ থেকে জানা যায়, গোপীনাথ চট্টোপাধ্যায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র দুর্গাচরণ চট্টোপাধ্যায় নামানুসারে দুর্গাপুর শহরের নামকরণ করা হয়েছিল। এই চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো এক সময়ে খুব ধূমধাম করে হতো।
চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর সূচনা- বাড়ির পুজোর সূচনা মায়ের স্বপ্নাদেশে। পুকুরের ধারে বসে থাকা এক বধূ শাঁখারির কাছে শাঁখা পরেন ৷ তারপর শাঁখারি টাকা চাইলে ওই বধূ জানান, চট্টোপাধ্যায় বাড়ির কুলুঙ্গিতে তা রাখা রয়েছে ৷ সেই শাঁখারি ওই বাড়িতে গিয়ে এই ঘটনা বললে, পরিবারের সদস্যরা দেখেন বাড়ির সেই কুলুঙ্গিতে শাঁখা-সিঁদুর রয়েছে। সেই রাতেই স্বপ্নাদেশে মা-দুর্গা বাড়িতে পুজোর আদেশ দেন। তারপর থেকেই চলে আসছে এই বাড়ির দুর্গাপুজো।
পুজোর রীতিনীতি- এক সময় এই পুজোয় মহিষ বলি হত। পুজোর চার দিন গ্রামের মানুষ অন্নভোগ খেতেন। নবমীর দিন আশেপাশের চার-পাঁচটা গ্রামের মানুষ দুপুর থেকে খাওয়া শুরু করতনে ৷ খাওয়া শেষ হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যেত। বসত নহবত ৷ এখন সেই জৌলুস নেই ঠিকই, কিন্তু পরিবারের সদস্যরা দেশ-বিদেশে যে যেখানেই থাকুক, পুজোর চার দিন এক জায়গায় জড়ো হন। এক চালায় মা দুর্গার মূর্তি ৷ ডাকের সাজ দেখা যায় মা দুর্গাকে ৷
পরিবারের এক সদস্যের কথায়, নবমীর দুপুরে লাউয়ের তরকারি হবেই। আর দশমীর দিন দুপুরে চিঁড়ে ভোগ এবং চ্যাং মাছ পোড়া মা'কে দেওয়ার রেওয়াজ আছে। শুরু হয়ে গিয়েছে মন্দির পরিষ্কারের কাজ। মহালয়ার দিন থেকেই মায়ের ভোগ শুরু হয় বিভিন্ন রকম পদ রান্না করে। দশমীতে মায়ের নিরঞ্জন করতেই হবে।