কুলতলি, 24 নভেম্বর: বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় তরুণীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ ৷ ঘটনায় নাম জড়িয়েছে একটি এনজিওর-ও ৷ শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার কুলতলি থানা এলাকায় ৷ মূল অভিযুক্ত রজনী মণ্ডল নামে এক যুবক-সহ 3 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে তরুণীর বাড়িতে দুই বন্ধুকে নিয়ে হানা দেয় অভিযুক্ত যুুবক ৷ সেই সময় বাবা বাড়িতে ছিলেন না ৷ তরুণী এবং তাঁর মা ঘরে ছিলেন ৷ অভিযোগ, তরুণীকে হাত ধরে টেনে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসেন রজনী ৷ তাঁকে জবরদস্তি তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন ৷ সেই সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা বেরিয়ে আসেন ৷ তাঁরাই অভিযুক্ত রজনী এবং তাঁর বন্ধুদের আটকে রেখে পুলিশ খবর দেন ৷ কুলতলি থানার পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে ৷
অন্যদিকে, এই ঘটনায় সোনারপুরের এক এনজিও-র জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ৷ জানা গিয়েছে, রজনী মণ্ডল এনজিও-র সদস্য শ্বেতা জানা মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে তরুণীর বাড়িতে এসেছিলেন ৷ তিনি কেন সেখানে গিয়েছিলেন তা তাঁর কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা ।
মহিলার দাবি, রজনী তাঁর কাছে গিয়েছিলেন ৷ এনজিও-কে জানিয়েছিলেন, তরুণীর সঙ্গে তাঁর প্রথমে বিয়ে ঠিক হয় ৷ পরে মেয়ের পরিবার বিয়ে ভেঙে দেয় ৷ তবে, মেয়েটি রজনীর সঙ্গে গোপনে দেখা করতেন ৷ কিন্তু, বর্তমানে পরিবারের চাপে পড়ে তরুণীও বেঁকে বসেছেন ৷ শ্বেতার আরও দাবি, রজনী চরম পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। এরপই রজনীর সঙ্গে তরুণীর বাড়িতে আসেন শ্বেতা ৷
প্রশ্ন উঠছে, রজনী চরম পদক্ষেপ নিতে পারেন শুনেও শ্বেতা কেন পুলিশে গেলেন না ? কেন রজনীর কথায় তরুণীর বাড়িতে চলে এলেন ? এনজিও কর্মীর দাবি, তিনি একজন সমাজকর্মী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন ৷ এখানেই তরুণী এবং তাঁর পরিবারের প্রশ্ন, ওই সমাজকর্মী কোন অধিকারে তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন ?
অন্যদিকে, আক্রান্ত তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের তরফে বিয়ের জন্য রজনী মণ্ডলের বাড়িতে কথা বলতে যাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, প্রথমদিনের কথাবার্তার পরেই তাঁর বাড়ি থেকে সম্বন্ধ নাকচ করে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ, এরপর থেকে রজনী তাঁকে বিরক্ত করতে থাকেন ৷ কলেজের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়, তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ৷
তরুণীর কথায়, "আমাকে হুমকি দিয়েছিল । বলেছিল, আমি যদি ওর সঙ্গে কথা না-বলি বা সম্পর্ক না-রাখি তাহলে আমার পথদুর্ঘটনায় আমায় মেরে ফেলবে ৷ পরে আবার চরম পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে ৷ আর আজ রাতে আমার বাড়িতে এসে জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে ৷" যদিও, এনজিও-র বিষয়টি নিয়ে পুলিশের তরফে কোনও মন্তব্য বা পদক্ষেপ করা হয়নি ৷ অপহরণে অভিযুক্ত রজনী এবং তাঁর বন্ধুদের হেফাজতে নেওয়ার পর এনজিও-র বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷