আসানসোল, 26 জুলাই: পুলিশের জালে ভুয়ো কল সেন্টার খুলে প্রতারণা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ৷ প্রথমে বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরির লোভ দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হত কল সেন্টারে ৷ তারপর তাদের দিয়ে ফোন করিয়ে এটিম বাসানোর নাম করে চলত টাকা হাতানোর কাজ ৷ আসানসোলের বারাবনি পানুরিয়া গ্রামের এক বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ধৃতরা হলেন শুভঙ্কর ব্রহ্মচারি ও তার স্ত্রী মানসী পাল এবং মৌসুমী হাতি নামে আর এক মহিলা । 40টি মোবাইল একটি একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শুভঙ্কর ব্রহ্মচারী বাঁশদ্রোনির বাসিন্দা ৷ কখনও মোবাইল টাওয়ার বসানো আবার কখনও এটিএম বসানোর নাম করে চলত টাক হাতানোর কাজ ৷ চাকরির নাম করে নিযুক্ত করা বেকার ছেলেমেয়েদের কাজে লাগিয়ে চলত এই কাজ ৷ চাকরি করতে আসা কম বয়সি যুবক যুবতিরা বুঝতেই পারত না-তাদের ব্যবহার করেই চলছে প্রতারণার বড় ছক। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের ডিসি (পশ্চিম) সন্দীপ কররার দাবি, শুধুমাত্র চিন্তামণি চর নয় এই ঘটনায় আরও অনেকে প্রতারিত হয়েছেন। লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে এই শুভঙ্কর ব্রহ্মচারী এবং তার স্ত্রী মিলে। পাশাপাশি এই প্রতারণা চক্র আরও কতদূর বিস্তৃত, তা জানতে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।
সন্দীপ কররা জানান, প্রায় এক বছর আগে পানুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা চিন্তামণি চর বারাবনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । সেখানেই উল্লেখ করেন, এটিএম বসানোর নাম করে তাঁর কাছ থেকে 12 লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে ৷ এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। পুলিশের হাতে কোনও সূত্র ছিল না। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মধ্যমগ্রামের একটি কল সেন্টার থেকে চিন্তামণি চরকে ফোন করে টোপ দেওয়া হয়েছিল। তাতেই পা দিয়ে তিনি 12 লাখ টাকা খুঁইয়েছেন।
এখানেই শেষ নয় ৷ পুলিশ জানতে পারে শুধুমাত্র এটিএম বসানো নয়, মোবাইল টাওয়ার বসানো থেকে শুরু করে নানান ধরনের প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল ওই কল সেন্টারের মালিক। এরপর বুধবার মধ্যমগ্রামের ওই কল সেন্টারে হানা দেয় বারাবনি থানার পুলিশ । সেখান থেকেই ওই কল সেন্টারের মালিক তথা প্রতারণা চক্রের মাস্টারমাইন্ড শুভঙ্কর ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে জেরা করে তার স্ত্রী মানসী পাল এবং আরও এক মহিলা মৌসুমী হাতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, পুলিশ এই তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে।