কলকাতা, 6 জুন: তিলোত্তমার ফুটবলপ্রেমীরা বারবার চেয়েছিলেন বৃহস্পতির সন্ধ্যায় ফিরুক 2005 সালের 12 জুন ৷ ঊনিশ বছর আগে ওইদিনেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অভিষেকে গোল এসেছিল সুনীল ছেত্রীর পা থেকে ৷ কিন্তু শহরের ফুটবলপ্রেমীদের নিরাশ করে বিদায়বেলায় নিষ্প্রভ রইলেন ভারত অধিনায়ক ৷ গোল করতে ব্যর্থ তাঁর সতীর্থরাও ৷ ফল যা হওয়ার তাই হল ৷ অবসরযাপনে যাওয়ার আগে শেষ ম্যাচ জয়হীন রইলেন 'ভারতীয় ফুটবলের পোস্টার বয়' ৷
ম্যাচের আগে শুভেচ্ছা এসেছিল লুকা মদ্রিচের থেকে ৷ আসমুদ্র-হিমাচল চেয়েছিল শেষ ম্যাচে অন্তত একবার সুনীলের গোলার মতো শট কাঁপিয়ে দিক প্রতিপক্ষের জাল ৷ 60 হাজার মুখোশে ছেয়ে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের মঞ্চও সাজিয়ে রেখেছিল ফুটবল মক্কার জনতা ৷ শুধু গোলটাই এল না ৷ তাতে কী? সুনীলকে নিয়ে গ্যালারিতে বিশাল সব টিফো, ব্যানারে আবেগের ফল্গুধারার কোনও বিরাম ছিল না ৷ যা দেখে ম্যাচ শেষ নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না তিলোত্তমার জামাই ৷
ম্যাচ না-জিততে পারার হতাশা ছিলই ৷ সেই হতাশা মিশল আবেগে ৷ দু'দশকের কেরিয়ার শেষ করে তাই যখন মাঠ প্রদক্ষিণ করছিলেন, সে সময় বাঁধ ভাঙল আবেগ ৷ কলকাতার অনুরাগীদের প্রণাম ছুড়ে কেঁদে ফেললেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে 94টি গোলের মালিক ৷ সামগ্রিকভাবে বিশ্ব ফুটবলের চতুর্থ সর্বাধিক গোলদাতা ৷
প্রাথমিকভাবে মাঠ প্রদক্ষিণের পর টানেলে ধরে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন ৷ তার আগে সতীর্থরা অবশ্য তাঁকে 'গার্ড অব অনার' দেয়। কিন্তু সংবর্ধনার জন্য ফের মাঠে ফিরলেন সুনীল ৷ রাজ্য সরকার, আইএফএ, প্রাক্তন সতীর্থদের তরফে স্মারক-উপহারে ভরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে ৷ সুনীলকে সম্মান জানাল কলকাতার তিন প্রধানও ৷ শেষবেলায় জীবনে অন্তত একবারও যাঁরা তাঁর খেলা দেখেছেন তাঁদেরও ধন্যবাদ দিয়ে গেলেন ছেত্রী ৷ জানালেন, অনুরাগীদের ছাড়া 19 বছরের কেরিয়ার সম্ভব হত না ৷ সবাইকে ভালো থাকা এবং খুশি থাকার বার্তা দিয়ে প্রাক্তন হলেন দেশের সর্বাধিক গোলদাতা ৷