কলকাতা, 31 অগস্ট: তিরিশবার ডুরান্ড কাপ ফাইনালে পৌঁছে 18তম ডুরান্ড ক্যাবিনেটে তোলার সামনে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট । শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড ফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের মুখোমুখি সবুজ-মেরুন ।
সুপার জায়ান্ট কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ইতিমধ্যে বলেছেন, বাংলার স্বার্থে শনিবার সকলের মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে সমর্থন জরুরি । ফাইনালের টিকিট চেয়ে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের লম্বা লাইন । প্র্যাকটিস দেখতেও সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো ।
যদিও কার্যত বন্ধ দরজার আড়ালে ফাইনালের অনুশীলন সারলেন দ্রিমিত্রি পেত্রাতোস, জেসন কামিংসরা । প্রিয় তারকাদের এক ঝলক দেখতে পেয়েই সমর্থকরা গার্ডরেলের এপাড় থেকে চিৎকার করলেন । সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ যে রয়েছে তা কোচ থেকে ফুটবলাররা বুঝতে পারছেন । প্রস্তুতির মধ্যে টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কাজটা কঠিন । তবে পরিস্থিতি কঠিন হলেও লক্ষ্যপূরণে নজর ঘোরাতে নারাজ বাগান ফুটবলাররা ।
সাজঘরে মরিয়া মনোভাবের আঁচ পেয়ে কোচ হোসে মলিনার চোয়াল শক্ত । সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি জানিয়েছেন, জেমি ম্যাকলারেন, আশিক কুরুনিয়ান এবং ধীরজ সিং চোটের জন্য নামতে পারবেন না । তবে ফাইনালে শুভাশিস বসু খেলবেন বলে আশা করছেন । সেমিফাইনালে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন ক্যাপ্টেন । শঙ্কা তৈরি হলেও আশার আলো জ্বালিয়ে শুভাশিস প্রত্যাশিত ছন্দে বৃহস্পতিবার অনুশীলন করেছেন । ফাইনালের 24 ঘণ্টা আগে একই ছন্দ বজায় থাকলে ফাইনালে অধিনায়ক খেলবেন, জানিয়েছেন কোচ মলিনা । দলের মধ্যে প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার লড়াই দেখে খুশি তিনি ।
প্রসঙ্গত মোলিনার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে গ্রেগ স্টুয়ার্ট বলে যান, তিনি ফাইনালে প্রথম থেকে শুরু করতে চান । দলের স্কটিশ মিডফিল্ডারের এই দাবিতে দলের ফুটবলারদের প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতার আঁচ পাচ্ছেন মোলিনা । বাগানের স্প্যানিশ হেডস্যর বলেন, “সব ফুটবলারই প্রথম একাদশে জায়গা পেতে চায় । সবাই সেই লক্ষ্যেই অনুশীলনে, ম্যাচে নিজেদের নিঙড়ে দেয় । দলের স্বার্থ সবার আগে । পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমে মনবীর এবং কামিংস গোল পেয়েছেন । তাই দল যেভাবে যাকে ব্যবহার করতে চাইবে প্রয়োজন অনুসারে সেটাই হবে ।”
আগামী মাসে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং আইএসএলের বল গড়ানো শুরু । তার আগে প্রস্তুতি হিসেবে আর কোনও ম্যাচ খেলবেন না । আইএসএলের প্রথম দিকের ম্যাচগুলিকেই প্রস্তুতি হিসেবে নিতে চান সবুজ-মেরুন হেডস্যর । ঘরের মাঠে মরশুমের প্রথম ট্রফির ফাইনাল । চেনা পরিবেশে সমর্থকদের বিপুল সমর্থনকে বাড়তি সুবিধা হিসেবে দেখছেন না মোলিনা ।ফাইনালে প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেড যে মরিয়া লড়াই ছুঁড়ে দেবে তা আন্দাজ করতে পারছে মোহনবাগান । সেভাবে প্রস্তুতি সারছে তারা ।
‘90 মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে চাই’, ফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাসী স্টুয়ার্ট
প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলতে গিয়ে মোলিনা জানিয়েছেন, “খুব ভালো দল । ওদের উইং-প্লে খুব ভালো । কিন্তু আমরাও তৈরি । যেকোনও চ্যালেঞ্জ সামলানোর ক্ষমতা আমাদের ফুটবলারদের রয়েছে । ” কোয়ার্টার ফাইনালের পরে সেমি-ফাইনালেও গোলরক্ষক বিশাল কাইথের বিশ্বস্ত হাত দলের জয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে । গোলরক্ষকের প্রশংসা করলেও কোনও ব্যক্তিবিশেষকে কৃতিত্ব দেওয়ার চেয়ে দলগত সংহতির কথা মোলিনার মুখে । বার্সার প্রাক্তনী বলছেন, “আমার কাছে বিশালই সেরা গোলরক্ষক । কিন্তু আমি জাতীয় দলের কোচ নই । তাই মানালো যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত । আমি তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি । তবে কোনও একজনের জন্যই জয় এসেছে তা মনে করার কারন নেই । এগারোজনই দলের জয়-পরাজয়ের জন্য সমানভাবে দায়ী থাকে । ফাইনালে বিশাল দূর্ভেদ্য হয়ে উঠবে আশা করব । তবে 90 মিনিটে ম্যাচ শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে ।”