হায়দরাবাদ, 11 নভেম্বর: রূপান্তরকামী হয়ে পেশাদার মহিলা ক্রিকেটের এলিট পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা যাবে না ৷ 2025 থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য নয়া নিয়ম সম্প্রতি লাগু করেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড ৷ কিন্তু কেন এমনটা হবে? কেন মানুষকে তাঁর স্বত্ত্বা এবং প্য়াশনের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে? প্রশ্ন তুলে দিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের কন্যা অনয়া বাঙ্গার? কিন্তু হঠাৎ বাঙ্গার-কন্যার কেন এমন প্রশ্নের অবতারণা?
বিষয়টিকে হঠাৎ বললে ভুল হবে ৷ আসলে সঞ্জয় বাঙ্গারের সন্তান অনয়া জন্মসূত্রে ছিলেন পুরুষ ৷ সম্প্রতি, তাঁর সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে আরিয়ান থেকে অনয়া হওয়ার জার্নির কথা শেয়ার করেন তিনি ৷ 11 মাসে তাঁর শারীরিক ও স্বভাবগত কোন কোন বৈশিষ্ট্যের বদল ঘটেছে, তা ইনস্টাগ্রাম রিলসে শেয়ার করেছেন অনয়া বাঙ্গার ৷ মানুষ হিসেবে স্বত্ত্বা বদলে খুশি হলেও বাঙ্গা-কন্যা অখুশি অন্য জায়গায় ৷ রূপান্তরকামী হওয়ার কারণে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে হচ্ছে ম্য়াঞ্চেস্টার নিবাসী বছর তেইশের তরুণীকে ৷
অথচ বাবার মতই একসময় ধ্য়ানজ্ঞান সব বাইশ গজেই ছিল আরিয়ান থুড়ি অনয়ার ৷ মহারাষ্ট্রের ইসলাম জিমখানা ক্লাব, এরপর লেস্টারশায়ারের হিঙ্কলে ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে একসময় প্রতিনিধিত্ব করেছেন অনয়া ৷ বর্তমানে ম্য়াঞ্চেস্টারের একটি কাউন্টি ক্লাবের প্রতিনিধি তিনি ৷ কিন্তু ইংল্য়ান্ড ক্রিকেট ক্লাবের নয়া নিয়মের বলি হয়ে ক্রিকেট ছাড়ার পথে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের কন্য়া ৷ সম্প্রতি ইংল্য়ান্ড ক্রিকেট ক্লাবের সিদ্ধান্ত নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অনয়া লেখেন, "রূপান্তরকামী অ্যাথলিট হয়ে এই ঘটনা পীড়াদায়ক ৷"
গতবছর, বিশ্ব ক্রিকেটের গভর্নিং বডিও রূপান্তরকামী মহিলাদের আন্তর্জাতিক মহিলা ক্রিকেটে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ৷ সম্প্রতি সেই পথেই হেঁটেছে ইসিবি ৷ আইসিসি'র তরফে তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলা হলেও ইসিবি'র তরফে তেমন কিছু জানানো হয়নি ৷ আর তাতেই বাইশ গজে অনিশ্চিত অনয়ার ভবিষ্যত, বাবার মত দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন ৷
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে অনয়া লেখেন, "অনেক ছোট বয়স থেকেই ক্রিকেট আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ বাবাকে দেশের হয়ে খেলতে এবং কোচিং করাতে দেখে বড় হয়েছি ৷ খুব বেশি সময়ের কথা নয়, তবে আমিও স্বপ্ন দেখতাম তাঁর পথ অনুসরণ করতে ৷ বাইশ গজের প্যাশন, শৃঙ্খলা আমায় খুব আকর্ষণ করত ৷ ক্রিকেট আমার ভালোবাসা, লক্ষ্য এবং ভবিষ্যত হয়ে উঠেছিল ৷" কিন্তু আচমকাই ইসিবি'র সিদ্ধান্ত তাঁকে যন্ত্রণাদায়ক একটা বাস্তবের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অনয়া ৷
বাঙ্গার-কন্য়া এও জানিয়েছেন অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে তাঁর পেশিক্ষমতা কমেছে, শক্তি কমেছে ৷ এমনকী বিভিন্ন অ্যাথলেটিক ক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে ৷ তবু কেন তাঁকে কিংবা তাঁর মত অন্যান্যদের মেয়েদের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না? প্রশ্ন অনয়ার ৷ পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, "এমন একটা পলিসি আনা হোক যেখানে আমাদের স্বত্ত্বা এবং প্য়াশনের মধ্যে কোনও একটাকে বেছে নিতে না হয় ৷ রূপান্তরকামী মেয়েদেরও অধিকার আছে খেলাধুলো করার, প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ৷"