জলপাইগুড়ি, 7 ফেব্রুয়ারি: আজ থেকে 14-15 বছর আগে ভারতীয় ফুটবল দল মানেই বাঙালি ফুটবলার অবশ্যম্ভাবী ৷ আর সংখ্যাটা এক বা দুই নয়, কম করে 5-6 জন ৷ কিন্তু, গত একদশকে সেই সংখ্যাটা প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছে ৷ এমনকি বাংলা তথা ভারতের অন্যতম সেরা দুই ক্লাব ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে বর্তমানে সর্বসাকুল্যে বাঙালি ফুটবলার মাত্র দু’জন ৷ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ভারতসেরা বাংলার ফুটবলের ৷ আর তাই বাংলা তথা বাঙালি ফুটবলার তোলার জন্য স্কুল ও ইন্টার টুর্নামেন্টে জোর দেওয়ার কথা বললেন সৈয়দ রহিম নবি ৷
জলপাইগুড়ি পৌরসভার একটি রাস্তার ইস্টবেঙ্গল সরণি নামকরণের অনুষ্ঠানে একথাই বলে গেলেন প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার ৷ নিজে পান্ডুয়ার এক গ্রাম থেকে উঠে এসেছিলেন ৷ টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে মহামেডান স্পোর্টিং ও পরে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ময়দানের দাপিয়ে খেলেছেন ৷ পরবর্তী সময়ে মোহনবাগানের হয়েও খেলেছেন ৷ 2004 থেকে টানা দশবছর ভারতীয় দলের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করেছন ৷ কিন্তু আজ পেশাদার ফুটবলে বাংলা তথা বাঙালি ফুটবলার প্রায় নেই বললেই চলে ৷
যা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন নবি ৷ সঙ্গে জানালেন, "বাংলায় ফুটবল প্রতিভার অভাব নেই ৷ সমস্যাটা হল সুযোগের অভাব ৷ তৃণমূল স্তর থেকে সেই সব ফুটবলারদের তুলে নিয়ে আসতে হবে ৷ আমরা তো আছি ৷ কিন্তু, এর জন্য সবার সহযোগিতা দরকার ৷ যারা ফুটবল প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত, তাদের এগিয়ে আসতে হবে ৷" নবির মতে, বাংলা থেকে যে ক’জন ফুটবলার ময়দানের বড় ক্লাব ও দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁরা দারিদ্র্যসীমা বা তারও নীচ থেকে উঠে এসেছে ৷ যার প্রকৃত উদাহরণ নবি নিজে ৷ দরিদ্র পরিবারের একটি ছেলে ফুটবল পায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৷
তাই নবি বলেন, "অভাব তো থাকবেই, অভাব না-থাকলে ফুটবলার তৈরি হবে না ৷ আর গ্রামবাংলায় প্রতিভার অভাব নেই ৷ এই প্রতিভাদের তুলে আনতে আমার-আপনার সবার সহযোগিতা প্রয়োজন ৷ সবচেয়ে জরুরি স্কুল টুর্নামেন্টে জোর দিতে হবে ৷ ইন্টার স্কুল, ইন্টার ক্লাব টুর্নামেন্ট করতে হবে ৷ তবেই, ফুটবলার বেরিয়ে আসবে ৷" এই মুহূর্তে আই লিগ থেকে আইএসএলে খেলছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল ৷ সব ঠিক থাকলে, আগামী মরশুমে মহামেডান স্পোর্টিং আইএসএলে নাম লেখাবে ৷
কিন্তু, মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলে এই মুহূর্তে মাত্র একজন করে বাঙালি খেলছেন ৷ যা বড় দুর্ভাগ্যের বলে মনে করেন নবি ৷ আক্ষেপের সুরে বলেন, "বাংলায় ফুটবলারের অভাব তো আছেই ৷ অভাব না থাকলে কি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান একজন করে ফুটবলার খেলে !" উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি পৌরসভা ও শিলিগুড়ি পৌরনিগমের কাছে জমি চেয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ৷ উত্তরবঙ্গে দু’টি ফুটবল অ্যাকাডেমি/স্কুল খোলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন লাল-হলুদ ক্লাব কর্তারা ৷ রাজ্য সরকার জমি দিলে, আগামী কয়েকবছরের মধ্যে তা বাস্তবায়িত হবে ৷
আরও পড়ুন: