কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি: "আমি দলের সঙ্গেই রয়েছি। এই ম্যাচে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। তবে এই ছেলেগুলোর চেষ্টা রয়েছে। আমরা মোটেই ছিটকে যাইনি। সামনের দু'টো ম্যাচে জিততে পারলে কামব্যাক করতে পারি ৷" ইডেন ছাড়ার মুখে কিছুটা যন্ত্রের মত বলে গেলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। খেলোয়াড়ি জীবনে ফাইটার ছিলেন। নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টায় কোনও খামতি রাখতেন না। কিন্তু কোচের চেয়ারে বসে দলকে আড়াল করলেও ভিতরের যন্ত্রণা শরীরীভাষাতয় ফুটে উঠছিল।
এক ইনিংস এবং চার রানে মুম্বইয়র কাছে পরাজয়। চলতি রঞ্জি ট্রফিতে এত বড় হার বাংলাকে কার্যত শেষ আটের লড়াই থেকে ছিটকে দিল। কারণ কেরল এবং বিহার ম্যাচ থেকে সরাসরি জয় তুলে নিতে পারলে বাংলা সর্বোচ্চ 26 পয়েন্টে পৌঁছতে পারে। তা সত্ত্বেও অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। পাঁচ ম্যাচ পরে 12 পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলা উজ্জীবিত হওয়ার পথ এভাবেই খুঁজতে পারে। কিন্তু তাতে ভরসা রাখার লোক কম।
সকালে বাংলাকে ফলো অন করানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে মুম্বই। সাত পয়েন্ট পাওয়ার ভাবনায় সঠিক পদক্ষেপ। এই অবস্থায় ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জে নেমে বাংলার ব্যাটারদের পারফরম্যান্স প্রথম ইনিংসের মত কার্যত 'কপি পেষ্ট'।
প্রথম ইনিংসে দলের 199-এ 108 এসেছিল অনুষ্টুপের মজুমদারের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার 'স্টিভ ওয়া' 49 বল খেলে 14 রানে ফিরে যান। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি ব্যক্তিগত 26 রানে ফিরতেই মুম্বইয়ের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। অভিষেক পোড়েল লড়লেন। দলের 209 রানে অভিষেকের ব্যাট থেকে এল 82। পনেরোটি বাউন্ডারিতে 83 বলে 82 রানের ইনিংস দেখতে শুনতে ভালো লাগলেও তা পরিস্থিতি উপযোগী নয়। মোহিত অবস্তির বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান। বাকি সময় স্কোরবোর্ড সচল রাখার চেষ্টা করেছেন।
চা-বিরতির এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস। মোহিত অবস্তি 52 রানে সাত উইকেট নিয়েছেন। দুই ইনিংসে মোট 10 উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা মুম্বইয়ের পেসার। কেরলের বিরুদ্ধে দলে ফিরছেন অভিমন্যু ঈশ্বরন, আকাশদীপ, শাহবাজ আহমেদ। নেওয়া হয়েছে শাকির হাবিব গান্ধিকে। বাদ দেওয়া হয়েছে সুমন দাস এবং শ্রেয়াংশ ঘোষকে।
"আমাদের বোলিংয়ের মেরুদণ্ডটাই নেই এবছর। তার ওপর আবহাওয়ার কারণে উত্তরপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় ম্যাচ থেকে অন্তত তিন পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে। সেগুলো থাকলে এখন আঠারো পয়েন্ট হত। সব মিলিয়ে কিছুই ঠিক হয়নি। তিন সিনিয়র ক্রিকেটার ফিরছে। দেখা যাক শেষ দু'টো ম্যাচে কিছু করা যায় কি না," বলছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার ৷
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার রঞ্জিতে পারফরম্যান্স যথেষ্ট উজ্জ্বল। পারফরম্যান্সের গ্রাফ ওঠা নামা করে। এবছর গ্রাফটা নিচের দিকে। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াইয়ের মধ্যে আশার আলো থাকে। নতুন প্রজন্মের বাংলা দলে সেটারই অভাব স্পষ্ট। যা হতাশারও।
আরও পড়ুন: