কলকাতা, 3 জুন: এই ম্যাচ অস্তিত্বের ম্যাচ ৷ এই ম্যাচ সুনীল ছেত্রীকে বিদায়ী উপহার দেওয়ার ম্যাচ ৷ ভারতীয় সাজঘরে এখন এই দু'টো স্লোগান অনুচ্চারিত ভাবে বেজে চলেছে ৷ 6 জুন কুয়েতের বিরুদ্ধে প্রাক বিশ্বকাপের ম্যাচ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে খেলবে ভারতীয় দল ৷ কলকাতায় পা দেওয়ার পরে প্রথমবার ইগর স্টিম্যাচ প্রথম ম্যাচ ভারতীয় দল নিয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুশীলন করলেন সোমবার ৷ এর আগে যাবতীয় অনুশীলন করেছেন নিউটাউনে ফেডারেশনের নিজস্ব মাঠে ৷ ম্যাচের আগে স্টেডিয়ামের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই সোমবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুশীলন করল দল ৷
ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের দৌড়ে টিকে থাকতে বৃহস্পতিবারের ম্যাচের গুরুত্ব যথেষ্ট ৷ একইসঙ্গে এই ম্যাচ ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর আর্ন্তজাতিক ফুটবলে থেকে অবসরের ম্যাচ ৷ স্বাভাবিকভাবেই আবেগের চোরাস্রোত বইছে ৷ অনুশীলনে নামার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভারতীয় দলের ফুটবলার শুভাশিস বসু জানিয়েছেন, “কুয়েতের বিরুদ্ধে আমাদের এই ম্যাচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার কারণ ম্যাচটা জিততে পারলে বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে খেলার হাতছানি রয়েছে। আর এই ম্যাচটা খেলেই সুনীল ভাই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানাবে। সেটা দলকে আরও উজ্জীবিত করছে। আমরাও চাই সুনীল ভাইয়ের জন্য শেষ ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে। ম্যাচটা জিতে সুনীল ভাইকে উপহার দিতে চাই।”
কুয়েতের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বের ম্যাচে মনবীর সিংয়ের গোলে জিতে থাকলেও বাড়তি আত্মবিশ্বাসী নন শুভাশিসরা। বরং সমীহের সুর রয়েছে গলায়। কারণ, মাঝের সময়ের ম্যাচগুলোতে ব্যর্থতা। সেই ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যায় শুভাশিস জানিয়েছেন,“ ওই ম্যাচগুলোর প্রস্তুতির সময় কম ছিল। আইএসএল চলছিল। এবার অনেকটা সময় পাওয়া গিয়েছে। এখন দলে একজনের সঙ্গে আরেকজনের বোঝাপড়া আরো ভালো হয়েছে। সেটাই আরও ভালো ফুটবল খেলতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে কলকাতার সমর্থন বাড়তি পাওনা।”
প্রথম পর্বে হারলেও দল হিসেবে কুয়েত যথেষ্ট শক্তিশালী। দলের আক্রমণভাগ যথেষ্ট ভালো। উইং দিয়ে আক্রমন শানাতে পারদর্শী। শুভাশিস বলছেন দল হিসেবে কুয়েত খুব ভালো। দুই প্রান্ত দিয়ে খেলার জন্য বেশ কিছু ভালো ফুটবলার রয়েছে। ভারতীয় দলে বেশ কিছু ভালো ফুটবলার রয়েছে। কুয়েতের খেলার ভিডিও দেখিয়েছেন কোচ ইগর স্টিমাছ। সেই অনুযায়ী তৈরি হচ্ছি দল, বলছেন শুভাশিস।
কিংবদন্তী সুনীল ছেত্রীকে দেখে বর্তমান ভারতীয় দলের ফুটবলাররা স্বপ্ন দেখেছেন। সুনীল ছেত্রী তাঁদের কাছে অনুপ্রেরণা। তাঁর বিদায়ী ম্যাচে নামার আগে শুভাশিস নস্টালজিক। অনেক স্মৃতির মধ্যে সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে একই সাজঘর ভাগ করে নেওয়াকেই সেরা বলছেন শুভাশিস। বলছেন, “সুনীল ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম দিন থেকে ড্রেসিংরুম ভাগ করা স্বপ্নের মত। অনেক ম্যাচ খেলেছি একসঙ্গে, অনেক ট্রফি জিতেছি একসঙ্গে। সেই মুহুর্তগুলো স্পেশাল।” সেই সুনীল ছেত্রী এবার জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখবেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে অভাব পূরণ করা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মানছেন শুভাশিস।
শুভাশিসের কথায়, “সুনীল ভাইয়ের অনুপস্থিতি একটা বড় শূন্যতা তৈরি করবে। তবে দলই নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অনেকে আছে। অনেকে আছে যারা ক্লাব কে নেতৃত্ব দেয়।” সুনীল পরবর্তী জমানায় নেতৃত্বের ব্যাটন যে পেতে যে তিনি আগ্রহী, তাও স্বীকার করেছেন শুভাশিস।