নিয়ইউর্ক, 8 জুন: ভারত-পাক ম্যাচে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী খাটে না ৷ কথাটা যে হারে হারে সত্যি, তাই বুঝল নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম ৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে 119 রানে আটকে গিয়েছিল ভারত ৷ ফলে ক্রিকেট বোদ্ধারা ভেবেছিলেন আমেরিকার কাছে ‘অঘটনের’ হার অতীত ৷ ভারতকে উড়িয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ে ফিরবে পাকিস্তান ৷ কিন্তু সেখানেই জ্বলে উঠল ‘মেন ইন ব্লু’র পেস ব্যাটারি ৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের 113 রানে আটকে লো স্কোরিং ম্যাচ 6 রানে জিতে নিল ‘রোহিত অ্যান্ড কোং’ ৷
120 রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে সহজভাবে শুরু করেছিলেন দুই পাক ওপেনার ৷ 26 রানের মাথায় প্রথম আঘাত হানেন বুমরাই ৷ তাঁর সুইংয়ে পরাস্ত হন বাবর আজম ৷ ক্যাচ দিয়ে বসেন স্লিপে দাঁড়ানো সূর্যকুমারের হাতে ৷ উসমান খান, ফকর জমান কেউই বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ৷ পাক ব্যাটারদের পালা করে ডাগ-আউটে পাঠানোর কাজটা করে গিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া, আর্শ্বদীপ সিং, অক্ষর প্যাটেলরা ৷ দ্বিতীয় স্পেলে এসে সেট হয়ে যাওয়া মহম্মদ রিজওয়ান (44 বলে 31) ফেরান বুমরা ৷ সেখানেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় 2008 সালের বিশ্বজয়ীরা ৷ শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার রান আগেই থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস ৷ বুমরার ঝুলিতে আসে 3টি উইকেট, হার্দিক নিয়েছেন 2টি ৷ একটি করে উইকেট পেয়েছেন অক্ষর প্যাটেল ও আর্শ্বদীপ সিং ৷
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভালো করতে পারেনি ভারতও ৷ নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাইশ গজ এমনিতেই ‘আনসিন কোয়েশ্চেন’ ৷ তা বুঝতে না-পেরেই পরপর ক্রিজ ছেড়েছিলেন রোহিত শর্মা (12 বলে 13), বিরাট কোহলিরা (3 বলে 4) ৷ ব্যর্থ সূর্যকুমার যাদব, শিবম দুবেরাও ৷ মাঝে ঋষভ পন্ত (31 বলে 42) ও অক্ষর প্যাটেল (18 বলে 20) খানিক চেষ্টা করেছিলেন ৷ বাকি কেউ দু’অঙ্কের সংখ্যাও পেরতে পারেননি ৷
প্রথম ম্যাচে সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নেমেছিল দু'দলই ৷ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সহজ জয় পেলেও নিউইয়র্কের বাইশ গজ নিয়ে স্বস্তিতে ছিল না রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোং ৷ অন্যদিকে, অনামী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে বসেছিল পাকিস্তান ৷ ফলে কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপে চ্যালেঞ্জের সামনে ছিল দুই দল-ই ৷ প্রথমে পিছিয়ে পড়লেও ঠান্ডা মাথায় সেই চ্যালেজ্ঞ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া ৷
বিগত টুর্নামেন্টে মোট সাতবার মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রতিবেশী দেশ ৷ যেখানে ভারতের পক্ষে ফলাফল ছিল 6-1 ৷ আজকের ম্যাচ জিতে ‘রোহিত অ্যান্ড কোম্পানি’ সেই ব্যবধানটাই বাড়িয়ে 7-1 করে ফেললেন ৷
মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানে ভারত এগিয়ে থাকলেও টি-20 বিশ্বকাপে সাফল্যের নিরিখে কার্যত একই জায়গায় দাঁড়িয়ে দু’দল ৷ 2007 বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ভারত 2014 ফাইনাল হারে শ্রীলঙ্কার কাছে ৷ গতবছর ফাইনালিস্ট ছিল পাকিস্তান ৷ ইংল্যান্ডে কাছে হেরে যায় 2008-এর চ্যাম্পিয়নরা ৷ দ্বিতীয়বার বিশ্বসেরার তাজ ঘরে তুলতে মরিয়া দুই দলই ৷ ভারতের ক্ষেত্রে তাগিদটা আরও বেশি, গতবছরের বিশ্বকাপ খোয়ানোর জ্বালা খানিকটা মিটবে ক্ষুদ্রতম সংস্করণ ঘরে এলে ৷