কলকাতা, 12 জুলাই: মোহনবাগান সুপার জায়ান্টদের সঙ্গে চুক্তি ছিল ৷ কিন্তু ফিফার নয়া নিয়মের বেড়াজালে সেই চুক্তি ঘিরে শুরু হয়েছে জটিলতা ৷ এরই মধ্যে দল ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সেন্টার-ব্যাক স্ট্রাইকার আনোয়ার আলি ৷ লাল-হলুদ থেকে সরকারিভাবে ঘোষণা না হলেও, ময়দানে এখন এটাই খবর ৷ ডুরান্ডের মরশুমে এই নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা ৷
এক্স হ্যান্ডেলে দিল্লি এফসি’র কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজের একটি পোস্ট নিয়ে যাবতীয় বিতর্কের সুত্রপাত ৷ রঞ্জিত জানান, ফিফার নিয়ম অনুযায়ী একজন ফুটবলারকে লোনে এক মরশুমের জন্য সই করানো যায় ৷ অথচ লোনে মোহনবাগানের সঙ্গে 2031 পর্যন্ত চুক্তি করেছেন আনোয়ার ৷ ভারতীয় ফুটবলে রঞ্জিত বাজাজ নিয়মের খুঁটিনাটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে সিদ্ধহস্ত ৷ ফলে তাঁর এই পোস্ট দেখে নড়েচড়ে বসেছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কর্তারাও ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেন তাঁরা ৷
বাগান কর্তাদের দাবি, ফিফার এই নিয়ম ভারতীয় ফুটবলের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। তাই আনোয়ারের সবুজ-মেরুনে খেলতে কোনও সমস্যাই নেই। এই জায়গা থেকেই পরিস্থিতি ঘুরতে থাকে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে সই করেন আনোয়ার আলি । এখান থেকেই জটিলতা শুরু হয় । দোহায় ফিফা কংগ্রেসে নিয়ম করা হয়েছিল, কোনও ফুটবলারকে এক বছরের বেশি সময়ের জন্য লোনে নোওয়া যাবে না । সেক্ষেত্রে বছর শেষ হলে তাঁকে পুরনো ক্লাবে ফিরে আসতে হবে । ভারতে ফিফার এই নিয়ম 2025 সালের পর থেকে চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে । এই আবহে আনোয়ারের দলবদল নিয়মের ফাঁক এবং তিনি এই জটিলতায় আটকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।
আনোয়ারকে নিয়মের কারণে ছেড়ে দিতে হলে ডিফেন্স নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে হোসে মোলিনার দলকে । সেক্ষেত্রে কী করবে মোহনবাগান ? তারা কি আইনি পথের আশ্রয় নেবে ? আনোয়ারের সঙ্গে চুক্তির পরিবর্তন করবে ? তা নিয়েই ছিল যাবতীয় প্রশ্ন । ফিফার নিয়মটি ভারতীয় ফুটবলে লাগু না-হওয়াতে সমস্যার ইতি বলে মনে করা হচ্ছিল । কিন্তু সেটা যে সম্পূর্ণ সত্যি নয়, তা সামনে এসেছে । এখন আনোয়ার যদি দল বদলাতে চান তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে । সেক্ষেত্রে সবুজ-মেরুন জোরাজুরির রাস্তায় হাঁটতে রাজি নয় বলেই সূত্রের খবর।
কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আনোয়ার সই করায় বিষয়টি দুই প্রধানের মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়াতে চলেছে । ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার আনোয়ার গত মরশুমে ভালো ছন্দে ছিলেন ৷ গত মরশুমে আইএসএল’এ 16টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি । একটি অ্যাসিস্টও রয়েছে তাঁর । তবে মোহনবাগানের চারটি ক্লিনশিট রাখার ক্ষেত্রে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল । সব থেকে বড় কথা, মাত্র দু'টি হলুদ কার্ড দেখেছেন তিনি। ফলে তাঁকে নিতে যে বিভিন্ন দল ঝাঁপিয়ে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক ।