কলকাতা, 16 জুলাই: বড় ম্যাচ জয়ের পর পয়েন্ট হারানো ময়দানের প্রাচীন প্রবাদ ৷ মঙ্গলবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে ফের তা বাস্তব ৷ ডার্বি জয়ের পর এদিন কাস্টমসের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র ইস্টবেঙ্গলের ৷ জয়ের হ্যাটট্রিকের পর চতুর্থ ম্যাচে এসে ড্র ৷ ঝুলিতে দশ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল এখন গ্রুপ-বি থেকে তিন নম্বরে ৷
গত তিন ম্যাচের ছন্দ মঙ্গলবার লাল-হলুদ কাস্টমসের বিরুদ্ধে মেলে ধরতে ব্যর্থ ৷ পুরো নব্বই মিনিটে দ্বিতীয়ার্ধের সামান্য কিছু সময় দাপট দেখানো ছাড়া বাকিটা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলেছে তারা ৷ ডার্বির সাফল্যের পরে পয়েন্ট হারানোর ধাক্কায় উপস্থিত হাজার দেড়েক দর্শক হতাশ ৷ প্রতিপক্ষ কাস্টমসের ফুটবলারদের গালিগালাজ করতে শোনা গেল ৷ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বোতল ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে ৷
বিনো জর্জ, লাল-হলুদ পাঠশালার অক্লান্ত গুরুমশাই
কিন্তু ,যাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখালে অন্তত শুধরানোর বার্তা দেওয়া যেত, সেই ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের নামে জয়ধ্বনি ! তাই কাস্টমস কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য যখন বলেন, কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ভারতীয় ফুটবলারদের পার্থক্য সামান্য ৷ তখন অত্যুক্তি মনে হয় না ৷ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য দাবি করছেন, পরিস্থিতি বিচার করলে তথাকথিত ছোট ক্লাবের ফুটবলাররা এগিয়ে ৷ তিন ম্যাচে বারো গোল করে আসা ইস্টবেঙ্গল নৈহাটি স্টেডিয়ামে গোল খরায় পড়লে প্রতিপক্ষকে কটাক্ষ শুনতেই হবে ৷
কেন এই ছন্দপতন ? ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ বলছেন, "বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে ম্যাচ খেলার ঝক্কি সামলাতে হয়েছে ৷ তা সত্ত্বেও সুযোগ তৈরি করেছে দল ৷ তবে, গোল হলে ভালো হত ৷ প্রতিপক্ষ কোচের কটাক্ষ সম্পর্কে বিনো জর্জের কড়া জবাব,ইস্টবেঙ্গল ভয় করে না ৷"
মঙ্গলবার প্রথম থেকেই লাল-হলুদ ব্রিগেড ছন্নছাড়া ৷ গা-ছাড়া ফুটবলে প্রতিপক্ষকে সুবিধা করে দিয়েছিলেন মনোতোষ চাকলাদার, জেসিন টি কে, তন্ময় দাসরা ৷ প্রথমার্ধে নসিবের সেন্টার থেকে জেসিন টিকের সুযোগ নষ্ট হয়েছে ৷ আমন সি কে-র শট বাঁচান কাস্টমস গোলরক্ষক ৷ এছাড়া ইস্টবেঙ্গল গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে ৷
বিরতিতে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, পিভি বিষ্ণু মাঠে আসেন শ্যামল বেসরা, মুসারফের বদলি হিসেবে ৷ এই পরিবর্তনে আক্রমণের চাপ বাড়ে ইস্টবেঙ্গলের ৷ কিন্তু, তা কাস্টমসের রক্ষণ ভাঙার জন্য যথেষ্ট ছিল না ৷ এই সময় সায়নের ক্রস থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নসিব ৷ খেলা যত গড়িয়েছে, ততই চোটের অজুহাতে সময় নষ্টের দিকে ঝুঁকেছে কাস্টমস ৷ তাদের এই সময় নষ্টের চেষ্টায় গ্যালারির উত্তাপ বাড়ে ৷
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে সায়নের বাড়ানো পাস থেকে বল ধরে হীরা মণ্ডল তা বিজয় মুর্মুকে বাড়িয়ে দেন ৷ এক্ষেত্রেও সহজ সুযোগ নষ্ট ৷ বিষ্ণুর শট অল্পের জন্য বাইরে যায় ৷ প্রতি আক্রমণে পুরো নব্বই মিনিটে কাস্টমস একবার গোল করার পরিস্থিতি তৈরি করেছিল ৷
তবে, ইস্টবেঙ্গল কোচ বলছেন, কলকাতা লিগে কঠিন পরীক্ষা ৷ যখন যেমন পরীক্ষা সামনে আসবে, তারা তেমনভাবে জবাব তৈরি রাখবে ৷ কিন্তু, সুযোগ তৈরি করেও তা নষ্ট করার অসুখ সারান এখন বিনো জর্জের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৷