কলকাতা, 14 জুন: কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের বল গড়ানো শুরু আগামী 25 জুন থেকে। প্রথম দিনই গতবারের চ্যাম্পিয়ন মহামেডান স্পোর্টিংয়ের প্রতিপক্ষ উয়াড়ি ক্লাব। তবে অপর দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কবে মাঠে নামবে তা ঠিক হয়নি বলে আইএফএর তরফে জানানো হয়েছে। বড় ম্যাচ কবে সেটাও জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার অংশগ্রহণকারী 26টি ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন আইএফএর পদাধিকারীরা।
এই আলোচনায় বল গড়ানোর দিন ঠিক হলেও ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কবে নামবে তা ঠিক হয়নি। তবে গ্রুপ বিন্যাস করতে বসে আইএফএ ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে এক গ্রুপে রেখেছে। অপর গ্রুপে গতবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন মহামেডান স্পোর্টিং। সম্ভবত কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে মহামেডান স্পোর্টিং এবং উয়াড়ি ক্লাব প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে। প্রথম ম্যাচের আগে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যদিও সেই জমকালো অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে এখনই বলেননি আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত।
কলকাতা ময়দানের তিন ঘেরা মাঠে তিন প্রধান ম্যাচ খেলবে কি না তা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। কারণ গতবছর মহামেডান স্পোর্টিং তাদের মাঠে খেললেও বাকি দুই প্রধান ব্যারাকপুর স্টেডিয়াম এবং নৈহাটি স্টেডিয়ামে খেলেছিল। আইএফএ সচিব জানিয়েছেন, ময়দানে হলে তা যাতায়াতের সুবিধা হয়। তবে এবার ময়দানেও যেমন খেলা হবে তেমনই জেলার দুই স্টেডিয়ামেও খেলা হবে। একইভাবে নৈশালোকে কিছু ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে আইএফএ।
গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ম্যাচটি আয়োজন করা যায়নি। সুপার সিক্সে মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রধান। কিন্তু তার আগে মহামেডান স্পোর্টিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়ায় ডার্বির গুরুত্ব ছিল না। একইভাবে জেলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি দেওয়া হয়েছিল বলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ডার্বি ওয়াকওভার দেয়। তবে এবার গ্রুপ পর্বে যেহেতু দুই প্রধান তাই ডার্বি হবেই। সম্ভবত লিগের চতুর্থ ম্যাচ হতে চলেছে ডার্বি। গত মরশুমে ডুরান্ড কাপে মরসুমের প্রথম এবং দ্বিতীয় ডার্বি হয়েছিল। হাইভোল্টেজ ম্যাচ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিল ডুরান্ড কমিটি। আইএফএ সেই ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হয়েছিল নানা জটিলতায়।
এবার সেই ভুল আইএফএ করতে নারাজ। তাই চার নম্বর ম্যাচই ডার্বি করতে চায় তারা। এদিন তিন প্রধানের উপস্থিত প্রতিনিধিরা মাঠ নিয়ে কোনও পছন্দৃঅপছন্দের তালিকা আইএফএর সামনে রাখেনি বলে সচিব জানিয়েছেন। তবে ডুরান্ড কাপের সঙ্গে কলকাতা লিগের সূচির টক্করের সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাইয়ের শেষে ডুরান্ড চাপ শুরু হতে চলেছে। অংশগ্রহণকারী তিন প্রধানকে ওই সময় দুটো টুর্নামেন্ট সমান্তরালভাবে খেলতে হবে। সেভাবেই লিগের সূচি সাজাচ্ছে আইএফএ যাতে সমস্যায় না-পড়তে হয়।
আগামিকাল তিন ঘেরা মাঠের গ্যালারির ফিটনেস পরীক্ষা করবে পূর্ত দফতর পুলিশ এবং আইএফএ। সেই রিপোর্টের ওপর দাঁড়িয়ে তিন ঘেরা মাঠে ম্যাচ আয়োজনের বিষয়টি নির্ভর করবে। ইতিমধ্যে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কলকাতা লিগের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইস্টবেঙ্গল সম্ভবত 17 জুন সোমবার থেকে অনুশীলন শুরু করতে চলেছে। কোচ বিনো জর্জ এরমধ্যেই চলে আসার কথা ক্লাবের তরফে বলা হয়েছে। নতুন মরশুমে লিগের সূচি তৈরি করতে বসে গড়াপেটায় অভিযুক্ত উয়াড়ি এবং টালিগঞ্জকে বাইরে রাখা হয়নি।
আইএফএ সচিব বলেছেন যেহেতু শাস্তি দেওয়া হয়নি তাই বাইরে নয় এই দুই ক্লাব। এই ক্ষেত্রে বাইরে রাখা হলে দোষীসাব্যস্ত হওয়ার আগেই শাস্তির কবলে পড়ে যেত। যা পরে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও শুধরানো যেত না। শোনা যাচ্ছে, অভিযুক্ত দুই ক্লাব আর্থিক জরিমানা দিয়েই রেহাই পেতে চলেছেন। নতুন মরশুমে ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে অভিযোগ কমাতে উদ্যোগী আইএফএ। তাই রেফারি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে চারদিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে ফিফা এবং এএফসির ইনস্ট্রাক্টর জাপানের ইসিয়ামা নোবরু কলকাতার রেফারিদের উন্নত ম্যাচ পরিচালনার পাঠ দেবেন। এয়ারলাইন্স টেন্টে তত্ত্বগত পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি মাঠে নেমেও হাতে কলমে দেখাবেন ইসিয়ামা নোবরু।