কলকাতা, 11 মার্চ: মোহনবাগানের জনগর্জনে স্তব্ধ ইস্টবেঙ্গল ৷ প্রায় মধ্যরাতে বাইপাসে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ি মিলছে না ৷ যেসব গাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রাজি, তারা আকাশ ছোঁয়া ভাড়া হাঁকছে ৷ সবুজ-মেরুন সমর্থকরা অবশ্য তাতেই রাজি ৷ কারণ ডার্বিতে তারা জয়ী ৷ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এখন 36 পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে এক নম্বরে ৷ লিগ শিল্ড জয়ের দৌড়ে ফিরে এসেছে গঙ্গাপারের ক্লাব ৷
জুয়ান ফেরান্দোর ছেড়ে যাওয়া দলকে গত এক মাসে নতুন সঞ্জীবনী মন্ত্রে চাঙ্গা করেছেন আন্তেনিও লোপেজ হাবাস ৷ রবিবাসরীয় রাতের ডার্বিতে অপরাজিত রইলেন স্প্যানিশ কোচ ৷ সমর্থকরা বছর 67’র বৃদ্ধের ফুটবল বুদ্ধিতে মুগ্ধ ৷ তাদের কাছে স্প্যানিশ ভদ্রলোক যেন জাদুকর ৷ তবে, সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেও নির্লিপ্তের চাদরে নিজেকে মুড়ে রেখেছেন সবুজ-মেরুন কোচ ৷ কারণ, ডার্বি জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকেও হাবাস পরের ম্যাচ নিয়েই শুধু ভাবছেন ৷ শীর্ষে শেষ করে লিগ শিল্ড জয়ের পরিকল্পনা মাথাতেই রাখছেন না তিনি ৷
ম্যাচের প্রথমার্ধে ক্লেটন সিলভার পেনাল্টি দূরন্ত ডাইভে বাঁচান মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট গোলরক্ষক বিশাল কাইথ ৷ ওটাই কি ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত ? হাবাস বলছেন, "ওই পেনাল্টি বাঁচানোর পর যে রকমভাবে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় ৷" তিনটি গোলের ক্ষেত্রেই অবদান রাখলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস ৷ একটি গোল করলেন ও অন্য দু’টি করালেন ৷ পেনাল্টি থেকে গোলটির পরে ফের দেখা গেল বন্দুক চালানোর ভঙ্গিমায় সেলিব্রেশন ৷ দিমিত্রি বলেছেন, "লিস্টন, কামিংসরা ওই রকম উৎসবের পরে আমিও নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি ৷"
তাঁর নিজের ভাবনাও স্পষ্ট, লিগ শিল্ড জয় ৷ তাঁর কথায়, "আমি গোল করে দলকে লিগ শিল্ড জেতাতে চাই ৷ আমরা এখন লিগের শীর্ষে রয়েছি ৷ সামনে বেশ কতগুলি কঠিন ম্যাচ রয়েছে ৷ লিগ শিল্ড জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ৷ আশা করি এই মরশুমে শিল্ড জয় করতে পারব ৷"
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের ওপর স্টিমরোলার চালানোর পরে দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান খোলসে ঢুকে যায় ৷ ছন্দ পতনের কারণ কি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ? হাবাস গোপন করছেন না ৷ বলছেন, "কিছুটা তো আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিলাম ৷ দ্বিতীয়ার্ধে এই কারণেই ইস্টবেঙ্গল অনেকটাই খেলায় ফিরে আসে ৷ আমাদের ধারাবাহিকতা রাখা উচিত ছিল ৷"
লিগ শিল্ডের দিকে কি অনেকটাই এগিয়ে গেছেন ? এই প্রশ্নে হাবাস বলেন, "আমাদের বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলা রয়েছে ৷ আপাতত সে দিকেই মনোনিবেশ করছি ৷ ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই ৷" কোচ যখন সাবধানতার মোড়কে ধাপে ধাপে এগোনোর কথা বলছেন, তখন শুভাশিস বসু, দিমিত্রি পেত্রাতোস, লিস্টন কোলাসোদের মুখে অধরা লিগ শিল্ড জয়ের কথা ৷
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের এই মুহূর্তে 17 ম্যাচে 36 পয়েন্ট ৷ তাদের থেকে একম্যাচ বেশি খেলে মুম্বই সিটি এফসি-র পয়েন্টও 36 ৷ কিন্তু, গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থাকার সুবাদে সবুজ-মেরুন ক্লাব একনম্বরে ৷ মোহনবাগানের গোল ব্যবধান 15 ও মুম্বই সিটি এফসি-র 14 ৷
আরও পড়ুন: