সন্দেশখালি, 6 মে: সন্দেশখালির স্টিং অপারেশন-কাণ্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের স্ত্রী বিমলা কয়াল ৷ স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর বক্তব্য, "আমার স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ ৷ বিজেপি করার জন্যই তৃণমূল প্ল্যান করে ফাঁসিয়েছে ওকে ৷ ঘটনার সত্যতা সামনে আনুক সিবিআই ৷ সেটাই আমরা চাই ৷"
কেন তাঁর স্বামীকে ফাঁসাল তৃণমূল ? এই প্রশ্নের জবাবে বিমলা বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি দলটা করি ৷ সেটাই আমাদের অপরাধ ৷ বিজেপি না ছাড়লে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, তৃণমূলের সেই হুমকির কাছে আমরা মাথানত করিনি ৷ এর পরপরই এই ভিডিয়ো-কাণ্ড ৷ এখন এসব দেখে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ৷ ওদের চক্রান্ত ছাড়া, অন্য কোনও ঘটনা নেই এর পিছনে ৷"
বিমলা কয়াল অভিযোগ করেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে ও তারপরে তৃণমূলের হাতে তাদের আক্রান্ত হতে হয়েছিল ৷ গঙ্গাধর কয়ালের স্ত্রী বলেন, "সেই সময় পুলিশের সামনেই মারধর করা হয়েছিল আমার স্বামী গঙ্গাধরকে ৷ বাড়ি বয়ে হুমকিও দিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের লোকজন ৷ বলেছিল বিজেপি না ছাড়লে, ফল ভালো হবে না ৷ ওরা আমাদের উপর অনেক অত্যাচার করেছে ৷ সবকিছু মুখে বুজে সহ্য করতে হয়েছে ৷ কারণ, ওরা ক্ষমতাশালী ৷"
তবে, কি সন্দেশখালির আন্দোলন দমানোর উদ্দেশ্যে এই স্টিং ভিডিয়ো করা হয়েছিল ? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর দাবি, "হতে পারে সেটা ৷ কিন্তু, এসব করে সন্দেশখালির আন্দোলন দমানো যাবে না ৷ কারণ, সেই আন্দোলন ছিল সঠিক ৷" দরমার এই ঘরেই স্টিং ভিডিয়ো করা হয়েছিল কিনা, তা জানতে চাইলে ওই মহিলা অবশ্য তা অস্বীকার করতে পারেননি ৷ তাঁর কথায়, "ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি দেখে তো মনে হচ্ছে এই ঘরেই করা ৷"
ভিডিয়োতে যে নির্যাতিতার নাম শোনা গিয়েছে, তাঁকে কি এই ঘরেই নিয়ে আসা হয়েছিল ? যাঁরা স্টিং অপারেশন করলেন তাঁদের সম্পর্কে কি কিছু জানেন বিমলা কয়াল ? এই প্রশ্নের উত্তরে মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের স্ত্রীর সোজাসাপ্টা জবাব, "আমি একজন আশা কর্মী ৷ ঘটনার সময় আমি আমার কর্মস্থলে ছিলাম ৷ তাই এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না ৷ আমার স্বামী সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ৷ আশা করব, তাঁরা সঠিক ঘটনাটি সামনে আনবে ৷"
প্রসঙ্গত, স্টিং অপারেশনের ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো ইস্যুতে ইতিমধ্যে বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালের গ্রেফতারি চেয়ে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ গতকালও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, "বিজেপি 2000 টাকার বিনিময়ে মা-বোনেদের ইজ্জত বিক্রি করেছে ৷" পুলিশ প্রশাসনের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আরজিও জানিয়েছেন তিনি ৷ পাল্টা এই ঘটনায় আই-প্যাকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও নেমেছে গেরুয়া শিবির ৷ স্বভাবতই ভোট-বঙ্গে সন্দেশখালির স্টিং অপারেশন-কাণ্ডে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে ৷ ফলে, পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার ৷
আরও পড়ুন: