কলকাতা, 2 মার্চ: তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে আর থাকতে চান না কুণাল ঘোষ ৷ শুক্রবার এই দুই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি ৷ তার পর কেটে গিয়েছে 24 ঘণ্টারও বেশি সময় ৷ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই নিয়ে এখনও কেউ কোনও মন্তব্য করেননি ৷ এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন যে মুখপাত্র হিসেবে তাঁর ইস্তফা তৃণমূল কংগ্রেস গ্রহণ করেছে ৷
এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ ৷ সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম । খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে ।’’
ওই পোস্টের মাধ্যমে কুণাল আরও একবার তাঁর দলের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদের ইস্তফা গ্রহণ করার আবেদন জানিয়েছেন ৷ সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকেও ইস্তফাটি গ্রহণ করা হোক । আমি ওই পদে থাকব না । আমি শুধু কর্মী হিসেবে থাকব ।’’
উল্লেখ্য, কুণালের এই বিদ্রোহের শুরু গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৷ সেদিন সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘নেতা অযোগ্য, গ্রুপবাজ, স্বার্থপর । ...ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক, তৃণমূলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না ।’’
তার পরই হইচই পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে ৷ প্রশ্ন ওঠে যে কার উদ্দেশ্য়ে তিনি এই পোস্ট করলেন ? সেই প্রশ্নের জবাব মেলার আগেই সোশাল মিডিয়ায় কুণাল ঘোষ জানিয়ে দেন যে তিনি আর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদে থাকতে চান না ৷ তিনি একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘আমি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে থাকতে চাইছি না । সিস্টেমে আমি মিসফিট । আমার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না । আমি দলের সৈনিক হিসেবেই থাকব ।’’
প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি ভোটের মরসুমে তিনি দলবদল করতে চলেছেন ৷ এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়ে কুণাল ওই পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘দয়া করে দলবদলের রটনা বরদাস্ত করবেন না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় আমার সেনাপতি, তৃণমূল কংগ্রেস আমার দল ৷’’
এর পর থেকে অবশ্য তিনি কোনও রাখঢাক করেননি ৷ বরং সরাসরি কলকাতা উত্তরের সাংসদ ও লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷ কখনও সুদীপের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ করেন ৷ আবার দুর্নীতিতে জড়িত বলে দাবি করে সরাসরি সুদীপের গ্রেফতারির কথা বলতে শুরু করেন ৷
এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে কেউ মুখ খোলেননি ৷ এমনকী কুণাল ইস্তফা দিয়েছেন কি না, দিলে সেই ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে, সেই নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে ৷ ফলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করে, সেই দিকেই নজর রয়েছে সকলের ৷
আরও পড়ুন: