ETV Bharat / politics

কোচবিহারের নারী নির্যাতন চাপা দিতেই হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা মমতার, অভিযোগ সুকান্তর - Sukanta Majumdar

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 29, 2024, 8:29 PM IST

Sukanta Majumdar: কোচবিহারের বিজেপির এক নেত্রীর উপর নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ সেই ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, শনিবার এমনই অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷

Sukanta Majumdar
সুকান্ত মজুমদার (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 29 জুন: কোচবিহারে বিজেপির জেলাস্তরের নেত্রীর উপর নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে শনিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তাঁর দাবি, কোচবিহারের ঘটনা থেকে সংবাদমাধ্যমের নজর ঘোরাতে চান মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই কারণেই হকার উচ্ছেদের ঘটনা ঘটানো হল ।

সুকান্ত মজুমদারের সাংবাদিক বৈঠক (ইটিভি ভারত)

এ দিন বিজেপি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন, একের পর এক মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটেছে ৷ কোচবিহারে এই মহিলার উপর যেদিন অত্যাচার হল, সেদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হকার নিয়ে অনেক কথা বললেন এবং হকার উচ্ছেদ শুরু হয়ে গেল ৷ তার এক-দু’দিন পর সমস্ত বিষয়টি আবার ঠান্ডা হয়ে গেল ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে হকার উচ্ছেদ ছিল পলিটিক্যাল স্টান্টবাজি (রাজনৈতিক কৌশল) ৷ এবং কোচবিহারের ঘটনা থেকে মিডিয়ার চোখ সরানোর জন্য... মুখ্যমন্ত্রী এই হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ পুরো ঘটনা হয়েছিল কোচবিহারের নির্যাতনের ঘটনাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য ৷’’

তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য় করে সুকান্তর কটাক্ষ, ‘‘আমরা মর্মাহত, যখন দেখছি মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে একজন মা বিবস্ত্র অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন ৷ মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে এই ঘটনা ঘটল ৷’’ একই সঙ্গে তিনি কোচবিহারে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন ৷ সেখানে অনেক মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ সুকান্তর ৷ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার থেকে ঘুরে আসার পরই একজন মহিলার উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটল ৷

তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শেখর কাপুরের ‘ব্যান্ডিট কুইন’ সিনেমার প্রসঙ্গ তোলেন ৷ পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানোর ‘সংস্কৃতি’ চলে আসছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ পশ্চিমবঙ্গ চম্বল হয়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত ৷ এমনকী তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে আখলাখের (যাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল) কথা ৷ তাঁর প্রশ্ন, আখলাখের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে, এই ক্ষেত্রেও প্রতিবাদ করতে হবে ৷

সুকান্তর আরও দাবি, "তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নিই যে পুলিশ পারিবারিক বিবাদ বলছে এবং যদি পুলিশ তদন্ত করে থাকে, তাহলেও দোষীরা কিভাবে ছাড়া পায় । পুলিশ এই ধরনের লঘু ধারা দিয়ে তদন্ত করতে পারে না তৃণমূলের মদত ছাড়া । তৃণমূল কংগ্রেস মিথ্যে বলছে । সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব আমরা । আমরা আদালতে যাব । এর শেষ দেখে ছাড়ব ।"

একই সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে প্রশাসন বলে কিছু নেই ৷ প্রশাসন জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা চালায় ৷’’ তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও বাংলার পুলিশ-প্রশাসন দলদাসের মতো আচরণ করেছে ৷

সুকান্তর দাবি, কোচবিহারের ওই এলাকা এখন উদয়ন গুহর দখলে রয়েছে ৷ তাই ওই মহিলা বাড়ি ফিরলেই তাঁর সঙ্গে যেকোনও ধরনের দুষ্কর্ম হতে পারে । সুকান্ত আরও বলেন, ‘‘এডিজি বলছেন যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে । যদি ওঁর বাড়ির মহিলার উপর এই ধরনের ঘটনা ঘটত, তাহলে কি আইনশৃঙ্খলা ঠিক নেই বলতেন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ?’’

মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছেন সুকান্ত ৷ তাঁর কথায়, একজন সংখ্যালঘু ছেলেকে মোবাইল চোর অপবাদে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল । এই হস্টেলগুলো কারা চালাচ্ছেন ? সিসিটিভি নেই । দিনের পর দিন এই ধরনের পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটছে ।

বিধানসভায় শপথ বিতর্ক নিয়ে তিনি জানান যে এই ধরনের কোনও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হোক, সেটা বিজেপি চায় না । তবে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে রাজ্যপালের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেটা ঠিক নয় । কোনও প্রমাণ আছে কি ? কিভাবে জোর করে পুলিশ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলছেন ? কুণাল ঘোষ তথ্য প্রকাশ করুক ৷ তাহলে বিজেপিও সব তথ্য প্রকাশ করবে । রাজভবন বা বিধানসভার সম্মান আছে, সেটা বজায় রাখতে হবে । রাজ্যপাল তো ওই মহিলা শিল্পী-বিধায়ককে একা ডাকেননি !

মালদার মানিকচকের নাজিরপুরে বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার নিয়ে সুকান্ত মজুমদার জানান যে পুলিশ যে ঘটনা ঘটিয়েছে, বিজেপি তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় । দলের তরফে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে । যদি কোনও ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটাতে চান, তাহলে প্রশাসনের সাহায্য দরকার । সেখানে রাজনীতির জোরও দরকার । তবে মনে হয় কোনও অন্য গল্প আছে । যে পুলিশ আধিকারিক গিয়েছিলেন, সেখানে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে ।

বাংলাদেশী জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার নিয়ে বিজেপি মনে করে যে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুরঘর হয়ে উঠেছে । এর পেছনে তৃণমূলের ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদত রয়েছে ।

কলকাতা, 29 জুন: কোচবিহারে বিজেপির জেলাস্তরের নেত্রীর উপর নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে শনিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তাঁর দাবি, কোচবিহারের ঘটনা থেকে সংবাদমাধ্যমের নজর ঘোরাতে চান মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই কারণেই হকার উচ্ছেদের ঘটনা ঘটানো হল ।

সুকান্ত মজুমদারের সাংবাদিক বৈঠক (ইটিভি ভারত)

এ দিন বিজেপি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন, একের পর এক মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটেছে ৷ কোচবিহারে এই মহিলার উপর যেদিন অত্যাচার হল, সেদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হকার নিয়ে অনেক কথা বললেন এবং হকার উচ্ছেদ শুরু হয়ে গেল ৷ তার এক-দু’দিন পর সমস্ত বিষয়টি আবার ঠান্ডা হয়ে গেল ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে হকার উচ্ছেদ ছিল পলিটিক্যাল স্টান্টবাজি (রাজনৈতিক কৌশল) ৷ এবং কোচবিহারের ঘটনা থেকে মিডিয়ার চোখ সরানোর জন্য... মুখ্যমন্ত্রী এই হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ পুরো ঘটনা হয়েছিল কোচবিহারের নির্যাতনের ঘটনাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য ৷’’

তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য় করে সুকান্তর কটাক্ষ, ‘‘আমরা মর্মাহত, যখন দেখছি মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে একজন মা বিবস্ত্র অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন ৷ মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে এই ঘটনা ঘটল ৷’’ একই সঙ্গে তিনি কোচবিহারে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন ৷ সেখানে অনেক মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ সুকান্তর ৷ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার থেকে ঘুরে আসার পরই একজন মহিলার উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটল ৷

তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শেখর কাপুরের ‘ব্যান্ডিট কুইন’ সিনেমার প্রসঙ্গ তোলেন ৷ পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানোর ‘সংস্কৃতি’ চলে আসছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ পশ্চিমবঙ্গ চম্বল হয়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত ৷ এমনকী তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে আখলাখের (যাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল) কথা ৷ তাঁর প্রশ্ন, আখলাখের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে, এই ক্ষেত্রেও প্রতিবাদ করতে হবে ৷

সুকান্তর আরও দাবি, "তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নিই যে পুলিশ পারিবারিক বিবাদ বলছে এবং যদি পুলিশ তদন্ত করে থাকে, তাহলেও দোষীরা কিভাবে ছাড়া পায় । পুলিশ এই ধরনের লঘু ধারা দিয়ে তদন্ত করতে পারে না তৃণমূলের মদত ছাড়া । তৃণমূল কংগ্রেস মিথ্যে বলছে । সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব আমরা । আমরা আদালতে যাব । এর শেষ দেখে ছাড়ব ।"

একই সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে প্রশাসন বলে কিছু নেই ৷ প্রশাসন জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা চালায় ৷’’ তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও বাংলার পুলিশ-প্রশাসন দলদাসের মতো আচরণ করেছে ৷

সুকান্তর দাবি, কোচবিহারের ওই এলাকা এখন উদয়ন গুহর দখলে রয়েছে ৷ তাই ওই মহিলা বাড়ি ফিরলেই তাঁর সঙ্গে যেকোনও ধরনের দুষ্কর্ম হতে পারে । সুকান্ত আরও বলেন, ‘‘এডিজি বলছেন যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে । যদি ওঁর বাড়ির মহিলার উপর এই ধরনের ঘটনা ঘটত, তাহলে কি আইনশৃঙ্খলা ঠিক নেই বলতেন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ?’’

মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছেন সুকান্ত ৷ তাঁর কথায়, একজন সংখ্যালঘু ছেলেকে মোবাইল চোর অপবাদে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল । এই হস্টেলগুলো কারা চালাচ্ছেন ? সিসিটিভি নেই । দিনের পর দিন এই ধরনের পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটছে ।

বিধানসভায় শপথ বিতর্ক নিয়ে তিনি জানান যে এই ধরনের কোনও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হোক, সেটা বিজেপি চায় না । তবে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে রাজ্যপালের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেটা ঠিক নয় । কোনও প্রমাণ আছে কি ? কিভাবে জোর করে পুলিশ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলছেন ? কুণাল ঘোষ তথ্য প্রকাশ করুক ৷ তাহলে বিজেপিও সব তথ্য প্রকাশ করবে । রাজভবন বা বিধানসভার সম্মান আছে, সেটা বজায় রাখতে হবে । রাজ্যপাল তো ওই মহিলা শিল্পী-বিধায়ককে একা ডাকেননি !

মালদার মানিকচকের নাজিরপুরে বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার নিয়ে সুকান্ত মজুমদার জানান যে পুলিশ যে ঘটনা ঘটিয়েছে, বিজেপি তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় । দলের তরফে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে । যদি কোনও ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটাতে চান, তাহলে প্রশাসনের সাহায্য দরকার । সেখানে রাজনীতির জোরও দরকার । তবে মনে হয় কোনও অন্য গল্প আছে । যে পুলিশ আধিকারিক গিয়েছিলেন, সেখানে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে ।

বাংলাদেশী জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার নিয়ে বিজেপি মনে করে যে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুরঘর হয়ে উঠেছে । এর পেছনে তৃণমূলের ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদত রয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.