নয়াদিল্লি, 31 জুলাই: লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষে মানুষের যে সমর্থন দেখা গিয়েছে, তা আগামী ভোটগুলিতেও ধরে রাখতে হবে ৷ বুধবার কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি এই কথা জানিয়েছেন ৷ এ দিন নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠক হয় ৷ সেই বৈঠকেই তিনি এই কথা বলেন ৷
সোনিয়া এ দিন বলেন, "আমাদের আত্মতৃপ্তি ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়া উচিত নয়... আমি সাহস করে বলতে পারি যে আমরা লোকসভা নির্বাচনে যে প্রবণতা দেখেছি, তার প্রতিফলন ধরে রেখে আমরা যদি ভালো পারফরম্যান্স করি, তাহলে জাতীয় রাজনীতিতে একটি রূপান্তর ঘটবে ।" তাই তিনি কর্মীদের আত্মতুষ্ট না হওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন ৷ তাঁর বার্তা, অনুকূল পরিস্থিতিকে নিজেদের দিকে ধরে রাখতে নেতা-কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে ৷
উল্লেখ্য, 2014 ও 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পারফরম্যান্স অত্যন্ত খারাপ ছিল ৷ কিছু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও সারা দেশে কংগ্রেসের জনসমর্থনে ভাটার টান লক্ষ্য করা গিয়েছিল ৷ 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেসের জন্য আশার আলো দেখা গিয়েছে ৷ তাদের সাংসদ সংখ্যা এখন 99 ৷ মোদি জমানায় প্রথমবার প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও পেয়েছে কংগ্রেস ৷
আর সেই সাফল্যকে আসন্ন নির্বাচনগুলিতে ধরে রাখার কথাই বলেছেন রাজ্যসভার সাংসদ সোনিয়া ৷ কারণ, চলতি বছরের শেষেই হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে ৷ জম্মু ও কাশ্মীরে এই বছরই বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ এই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস ভালো পারফর্ম করতে পারলে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপি আরও কোণঠাসা হবে ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ৷ তখন কেন্দ্রে সরকার গড়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে কংগ্রেসের জন্য ৷ সেই সব অঙ্ক মাথায় রেখেই সোনিয়া এই বার্তা দিয়েছেন বলে অনেকের মত ৷
এ দিন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে সোনিয়া গান্ধি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ৷ তাঁর মতে, লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরও বিজেপির শিক্ষা হয়নি ৷ তার পরও তারা সমাজে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে ৷ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি কানওয়ার যাত্রা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকারের অবস্থানের উদাহরণ টেনে আনেন ৷ সোনিয়ার মতে, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যথাসময়ে হস্তক্ষেপ করেছে, এটাই সৌভাগ্যের ৷
তিনি বলেন, "কিন্তু এটি কেবল একটি সাময়িক স্বস্তি হতে পারে । আরএসএস-এর কর্মকাণ্ডে আমলাতন্ত্রকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য কীভাবে নিয়মগুলি হঠাৎ করে পরিবর্তন করা হয়েছে, তা দেখুন । এটা নিজেকে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন বলে ৷ কিন্তু সারা বিশ্ব জানে যে এটা বিজেপির রাজনৈতিক এবং আদর্শগত ভিত্তি ৷"
পাশাপাশি তিনি এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনা করেছেন তিনি ৷ সোনিয়া বলেন, "প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী (নির্মলা সীতারমন) ও অন্যরা বাজেট এবং এর তথাকথিত সুফলগুলি নিয়ে কথা বললেও, এই নিয়ে ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে ৷ দেশের কোটি কোটি পরিবার বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত হয়ে থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে তার শীর্ষ নেতৃত্ব আত্মবিভ্রম নিয়ে চলছে ৷’’