কাঁথি, 2 মার্চ: কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে সৌমেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী করেছে বিজেপি । বাবা শিশির অধিকারী 3 বারের তৃণমূল সাংসদ। দাদা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ৷ ফলে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে অধিকারী বাড়ির কনিষ্ঠ পুত্রের উপরেই ভরসা রাখল বিজেপি। গত বিধানসভার নিরিখে এগিয়ে থাকা এই লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে সৌমেন্দু বাবার মতো জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারেন কি না সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের ।
2009 সালে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমবার তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন শিশির অধিকারী । এরপর 2014 এবং 2019 লোকসভা নির্বাচনেও এই কেন্দ্রে শিশির অধিকারী জয়ী হন । 2019 সালের নির্বাচনে শিশির তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির ডাঃ দেবাশিস সামন্তের থেকে প্রায় 1 লক্ষ 11 হাজার 668টি ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হন । সেবার শিশির অধিকারী পেয়েছিলেন 7 লক্ষ 11 হাজার 872টি ভোট এবং বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন 6 লক্ষ 204টি ভোট । বাম ও কংগ্রেসের মিলিত ভোট ছিল 1 লক্ষেরও কম।
তবে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরিবর্তন ঘটে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক চিত্রের । শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে জেলাজুড়ে বিজেপির দাপট অনেকটাই বৃদ্ধি পায় । ফলস্বরূপ কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত 7টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে 4টিতে জয় ছিনিয়ে নেয় বিজেপি ৷ তৃণমূলের ঝুলিতে আসে 3টি বিধানসভা। খেজুরি, ভগবানপুর, উত্তর কাঁথি ও দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্র বিজেপি দখলে আনে । এই মুহূর্তে সৌমেন্দুর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হল বাবার মতো জয়ের ধারা ধরে রাখা ৷
বিজেপির অন্দরের খবর, গত কয়েকদিন ধরেই কাঁথি কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে একাধিক নাম ঘুরে বেড়াচ্ছিল । জেলাস্তরের কয়েকজন নেতা এবং বিজেপির কয়েকজন বিধায়কও তালিকায় ছিলেন । তবে তাঁদের সবাইকে বাদ রেখে সদ্য কয়েক বছর তৃণমূল ছেড়ে আসা সৌমেন্দু অধিকারীকে কাঁথি কেন্দ্র থেকে লড়াইয়ের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতৃত্ব । সৌমেন্দু বলেন, "তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও মোদিজীর উন্নয়নকে হাতিয়ার করে লড়াইয়ে করব ।" বাবার রেকর্ড অটুট রাখার লড়াইয়ে অবশ্য শিশিরকে পাশেই পাচ্ছেন সৌমেন্দু ৷
অন্যদিকে, শুক্রবার রেল স্টেশনের উদ্বোধনী মঞ্চে শিশির অধিকারী বলেন, "বর্তমান রাজ্য সরকার যে কী সরকার তা আমি জানি না। আমি ব্রাহ্মণবাড়ির ছেলে হয়ে তৃণমূল ধারণ করে ভুল করেছি । অনেকদিন সঙ্গ দিয়েছিলাম ৷ কিন্তু, এরকম চোর-জোচ্চোর সরকার আমি দেখিনি ।" ফলে বোঝাই যাচ্ছে এবারের লড়াইটায় তিনি মোদির হয়েই লড়বেন । শিশিরের কথায়, "এবারের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলায় 42টি আসনের মধ্যে 42টি আসনই মোদি পাবেন । এই নির্বাচনে বিজেপির হয়েই প্রচার করব।"
আরও পড়ুন: