কলকাতা, 26 মার্চ: প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অবশেষে 35 দিনের মাথায় মুরলিধর সেন লেন নিজেদের ধরনা অবস্থান তুলে নিলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা। শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি যাওয়ার পথে শিখ পুলিশ অফিসারকে খালিস্তানি বলায় গোটা রাজ্য জুড়ে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা এর প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন। সেই সময় তাদের তরফ থেকে বিজেপির পার্টি অফিসের বাইরে ধরনা অবস্থান শুরু করা হয়। এরপর লাগাতার 35 দিন এই ধরনা অবস্থান চলল।
ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের কারণে রাজ্যে আদর্শ আচরণবিধি লাগু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও তাদের ধরনা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। একই সঙ্গে মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফ থেকে, এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকেও তাদের ধরনা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে এদিন ধরনা মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং স্থানীয় বিধায়ক বিবেক গুপ্তা।
তাঁরা শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে আবেদন করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা যেন এই ধরনা আপাতত তুলে নেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সঙ্গে রয়েছেন বলেও জানান। যেভাবে পাগড়ি পরিহিত শিখ অফিসারকে খালিস্থানি বলা হয়েছে, তার কঠোরভাবে নিন্দাও করছেন তারা। একই সঙ্গে, এদিনও শুভেন্দু অধিকারীর তরফ থেকে এই ঘটনার জন্য কোনওভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়নি, তারও নিন্দা করছেন তাঁরা। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুরোধে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেন, আপাতত বিজেপি অফিসের সামনে থেকে তা দিয়ে ধর্না কর্মসূচি তারা প্রত্যাহার করছেন। তবে তাদের প্রতিবাদ চলবে। একই সঙ্গে, এই সম্প্রদায়ের অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত করে এই নিন্দনীয় ঘটনার জন্য প্রতিবাদ জানানোর জন্য আবেদন করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে, এবার লোকসভা নির্বাচনে এই ঘটনার পর শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তারা। কারণ হিসাবে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনা ঘটার পর বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন তারা। আজ পর্যন্ত কেউ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং সমালোচনা করেননি। তাই এবার নির্বাচনে তারা 'নো ভোট টু বিজেপি'র ডাক দিচ্ছে। যেহেতু এখনও পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী, তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি। তাই আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে বলা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী কোনওভাবেই রাজ্যের গুরুদুয়ারাতে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন।
আরও পড়ুন: