বারাসত, 29 এপ্রিল: বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে পুলিশি বাঁধার মুখে পড়তে হল ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংকে। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসাও চলে তাঁর। শেষমেশ গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন ব্যারাকপুরের পদ্ম প্রার্থী। ঘটনার জেরে সোমবার সরগরম হয়ে ওঠে জেলাশাসকের দফতর-চত্বর। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্জুন। যদিও, পদ্ম প্রার্থীর এই অভিযোগ মানতে নারাজ বারাসত জেলা পুলিশ। অর্জুন তাঁর নির্দিষ্ট রুট ছেড়ে অন্য পথে যাওয়াতেই এই বিপত্তি বাঁধে বলে দাবি পুলিশের।
এদিন দুপুরে ভাটপাড়া মজদুর ভবন থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একটি মন্দিরে পুজো দেন ব্যারাকপুরের পদ্ম প্রার্থী। এরপর, দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে বারাসতের দিকে রওনা হন অর্জুন সিং। অভিযোগ, বারাসত কলোনি মোড় সংলগ্ন উড়ালপুলের কাছে প্রথম তাঁকে আটকায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। কিছুক্ষণ পরে সেখান থেকে বেরিয়ে অর্জুন সিং যখন চাঁপাডালি বাসস্ট্যান্ড হয়ে জেলাশাসকের দফতরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তখন ফের তাঁর গাড়ি আটকানো হয় বলে অভিযোগ করেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী। শুধু এই দু'জায়গাতেই নয়! অর্জুন সিংয়ের গাড়ি বারাসতের 35 নম্বর জাতীয় সড়কের টেলিফোন এক্সচেঞ্জের কাছেও ট্রাফিক পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী। তবে, পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত ডিএম অফিসে নিজের মনোনয়ন দাখিল করেন অর্জুন সিং।
মনোনয়ন দাখিলের পর এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, "পুলিশ জেনেশুনে আমাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। যাতে আমি সঠিক সময় মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারি। পুলিশের বাঁধার জন্যই আমাকে পায়ে হেঁটে মনোনয়ন দাখিল করতে যেতে হয়েছে ডিএম অফিসে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানাব।"
এদিকে, সন্দেশখালিতে অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিস ও মুর্শিদাবাদে একের পর এক বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এখন আর রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সমস্ত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে দুষ্কৃতীদের হাতে। পশ্চিমবঙ্গ বোমা-বারুদের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কালী পটকা ফাটলেই রাজ্যে এনআইএ তদন্ত করতে আসছে। কালী পটকাও তো শব্দবাজি। আসলে শব্দবাজির আড়ালে বোমা তৈরি হচ্ছে এ রাজ্যে। সেটা মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্রয়েই হচ্ছে। আমি মনে করি, পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। ওনার পদত্যাগ করা উচিত।"
অন্যদিকে, এদিনই অর্জুনের প্রতিদ্বন্দ্বী, ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকও মনোনয়নপত্র জমা দেন বারাসতে ডিএম অফিসে এসে। মনোনয়ন দাখিলের পর অর্জুনকে আটকানোর প্রসঙ্গে পার্থ ভৌমিককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমার মনে হয় না এইভাবে নমিনেশন জমা দিতে আসার সময় কাউকে আটকে দেওয়া যায়। নমিনেশন জমা দেওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। সেটাই আমরা চাই।"
আরও পড়ুন
2004 সালের মতোই এবারও হারবে বিজেপি, দাবি মমতার
তৃণমূলের ভোট কেটে বিজেপিকে জেতাতেই মুর্শিদাবাদে প্রার্থী সেলিম, অভিযোগ মমতার