বর্ধমান, 3 মে: রায়বরেলি থেকে ভোটে লড়তে চলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ৷ সেই নিয়ে শুক্রবার নাম না করে রাহুলকে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর কথায়, কংগ্রেসের শাহজাদা এতটাই ভয় পেয়েছেন যে আমেঠি থেকে পালিয়ে রায়বরেলিতে ভোটে লড়তে চলেছেন ৷
এ দিন বর্ধমানে নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ সেই নির্বাচনী জনসভা থেকে শুধু রাহুলকেই নিশানা করেননি মোদি, পাশাপাশি কটাক্ষ করেছেন সোনিয়া গান্ধিকেও ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি সংসদে বলেছিলাম যে তাদের (কংগ্রেস) সবচেয়ে বড় নেতা (সোনিয়া গান্ধি) নির্বাচনে লড়াই করার সাহস করবেন না এবং তিনি পালিয়ে যাবেন । তিনি রাজস্থানে পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকে রাজ্যসভায় এসেছেন ৷’’
এর পরই নাম না করে রায়বরেলি থেকে রাহুলের প্রার্থীর হওয়ার বিষয়টি তোলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আগেই বলেছিলাম যে শাহজাদা ওয়েনাড়ে হেরে যাচ্ছেন । আমি বলেছিলাম যে ওয়েনাড়ে ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্য আসন খুঁজতে শুরু করবেন... তিনি আমেঠিকে এতটাই ভয় পাচ্ছেন যে রায়বরেলির দিকে দৌড় দিয়েছেন ৷ তাঁরা সবসময় বলেন ‘ডরো মত’ (ভয় পেও না )৷ আজ আমিও বলি, ‘ডরো মত, ভাগো মত’ (ভয় পেয়ো না, পালিয়ে যেও না) ৷"
উল্লেখ্য, রায়বরেলি ও আমেঠিকে বরাবর কংগ্রেসের গড় হিসেবে ধরা হয় ৷ 2004 থেকে 2019, রায়বরেলিতে জিতেছেন সোনিয়া গান্ধি ৷ 2004 থেকে 2014, আমেঠিতে জিতেছেন রাহুল গান্ধি ৷ 2019 সালে বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে তিনি হেরে যান ৷ কেরালার ওয়েনাড় থেকে প্রার্থী হয়ে জয়ী হন রাহুল গান্ধি ৷ এবারও রাহুল ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন ৷ তবে রায়বরেলির সাংসদ সোনিয়া গান্ধি গত ফেব্রুয়ারিতে রাজস্থান থেকে জিতে রাজ্যসভায় চলে গিয়েছেন ৷
গত কয়েকদিন ধরে জল্পনা চলছিল যে আমেঠিতে রাহুল গান্ধি লড়াই করতে পারেন ৷ কিন্তু শুক্রবার জানা গেল যে তিনি আমেঠিতে নয়, লড়বেন রায়বরেলি থেকে ৷ এই বিষয়টি সামনে আসার পরই রাহুল গান্ধিকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ এর আগে বৃহস্পতিবার গুজরাতের আনন্দ জেলার একটি নির্বাচনী জনসভা থেকেও রাহুলকে নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ দাবি করেছিলেন, রাহুল গান্ধিকে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় পাকিস্তান ৷ কেন তিনি এই দাবি করছেন, সেই ব্যাখ্যাও দেন মোদি ৷ তাঁর দাবি, পাকিস্তান সবসময় চায় ভারতে দুর্বল সরকার থাকুক ৷
তিনি বলেন, "ভারতে, কংগ্রেস পার্টি দুর্বল হয়ে পড়ছে, মানে মাইক্রোস্কোপ দিয়েও দলটিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে । কিন্তু মজার বিষয় হল কংগ্রেস যখন এখানে শেষ হয়ে যাচ্ছে, পাকিস্তান সেখানে কাঁদছে । পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরা কংগ্রেসের জন্য ‘প্রার্থনা’ করছেন । পাকিস্তান 'শাহজাদা'-কে (রাহুল গান্ধি) প্রধানমন্ত্রী করতে আগ্রহী ।"
এখানেই না থেমে, তিনি আরও বলেন, "আমরা সবাই জানি যে কংগ্রেস পাকিস্তানের 'মুরিদ' (প্রশংসক) । পাকিস্তান ও কংগ্রেসের মধ্যে অংশীদারিত্ব এখন সামনে চলে এসেছে ৷" নাম না করে কংগ্রেসকে দেশের শত্রু বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশের শত্রুরা আজ ভারতে শক্তিশালী সরকার চায় না । তারা চায় দুর্বল সরকার । তারা মুম্বইয়ে 26/11 সন্ত্রাসী হামলার সময়ের মতো একটি দুর্বল সরকার চায় ৷’’
এর পর প্রধানমন্ত্রী মোদির সংযোজন, ‘‘দেশের শত্রুরা 2014 সালের আগের মতো একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার চায় । মোদির শক্তিশালী সরকার মাথা নত করছে না ৷ আর সেই কারণেই বিশ্ব বলছে যে একমাত্র ভারতই পারে বিশ্বের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ৷’’
(সংবাদসংস্থার ইনপুট-সহ)
আরও পড়ুন: