কলকাতা, 23 জানুয়ারি: নেজাজি-জয়ন্তীর মঞ্চ থেকে নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ৷ তাঁর মতে, দেশের নেতাকে সবসময় সবধর্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে ৷
মঙ্গলবার কলকাতায় নেতাজি মূর্তির পাদদেশে আয়োজন করা হয়েছিল সুভাষচন্দ্র বোসের 128তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান ৷ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নেতাজি সংক্রান্ত একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে কখনও বিজেপি, কখনও কেন্দ্রীয় সরকার আবার কখনও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের নেতা তাকেই বলে যার এক পাশে থাকে হিন্দু, আরেক পাশে থাকে মুসলমান, আরেক পাশে থাকে শিখ, আরেক পাশে থাকে খ্রিস্টান, আরেক পাশে থাকে পার্সি, আরেক পাশে থাকে জৈন, আরেক পাশে থাকে বৌদ্ধ ৷’’ এখন দেশে তেমন কোনও নেতা নেই বলেও তিনি আক্ষেপ করেন ৷ প্রশ্ন তোলেন, আজ তেমন নেতা কোথায় ?
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই আক্রমণের লক্ষ্য আসলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ কারণ, সোমবার অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে ৷ সেখানে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে প্রধান যজমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ কোনও কোনও মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী কেন কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ? মঙ্গলবার সেই প্রশ্নই কার্যত তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
উল্লেখ্য, সোমবার বেলা সাড়ে 12টা নাগাদ রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় ৷ সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘণ্টাখানেক ধরে পুজো-অর্চনায় অংশ নেন ৷ অন্যদিকে কলকাতায় সংহতি মিছিলে হাঁটেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ মিছিল শুরুর আগে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দেন ৷ মিছিলে হাঁটার মাঝেই তিনি গুরুদোয়ারা, চার্চ ও মসজিদে যান ৷ মিছিলে তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুরাও উপস্থিত ছিলেন ৷
আর এ দিন মমতা যা বললেন, তা থেকে সোমবারের মিছিলের কথা মনে পড়তে বাধ্য ৷ একই সঙ্গে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আরও উল্লেখ করেছেন যে নেতাজির মতো নেতা, স্বামীজি-গান্ধিজির মতো ব্যক্তিত্বরা আর এই দেশে জন্মালেন না ৷ উলটে বিশ্বাসঘাতকদের সংখ্যা দেশে বেড়ে চলেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজ নেতাজির সুভাষচন্দ্র বোসের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে বলতে ইচ্ছে করে আর তো নেতাজির মতো নেতা জন্মাল না, যিনি বলেছিলেন আমরা অন্তরের সঙ্গে দেশকে ভালোবাসি না, স্বজাতিকে ভালোবাসি না, তাই আমরা করি গৃহবিবাদ ৷ তাই আমাদের মধ্যে জন্মায় মিরজাফর, উঁমিচাঁদ, তারা আজও মরেনি, তাদের বংশবৃদ্ধি পেয়ে চলেছে ৷’’
আরও পড়ুন: