বারাসত, 3 মার্চ: "উনি (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) আরএসএসের লোক। বিজেপির লোক। বারাসত কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এলে ওনাকে ভালো করে পালিশ করে দেব।" বিচারপতির পদ ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে আসার আগেই নাম না-করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বেনজির আক্রমণ করলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। রবিবার সন্ধ্যায় নিজের সংসদীয় এলাকা বারাসতের শানপুকুরে একটি উন্নয়নমূলক কর্মসূচির উদ্ধোধন করতে আসেন শাসকদলের এই চিকিৎসক সাংসদ।
তিনি ছাড়াও এদিনের এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, স্থানীয় পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়, পৌরসভার পৌরপারিষদ অরুণ ভৌমিক-সহ দলের একাধিক জনপ্রতিনিধি। তাঁদের সামনেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে নাম না-করে রীতিমতো হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তুলোধনা করেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, "কালো কোর্ট পড়া একজন লোক রয়েছে।যিনি সমানে তৃণমূল কংগ্রেসকে গালাগালি করে এসেছেন। সমানে নেতাদের বাড়িতে ইডি, সিবিআই পাঠিয়েছেন। গ্রেফতার করিয়েছেন। তখনই আমাদের মনে হয়েছে, এই ভদ্রলোক নিশ্চয় বিজেপির লোক! আজকে সে বিচারপতির চাকরি ছেড়ে দিয়ে বারাসতে নাকি লড়াই করতে আসবে! আমি বললাম, খেল জম গ্যায়া! আরএসএস-এর লোক যদি এখানে আসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে, তাহলে তো আমাদের খুব মজা!"
এদিকে, কাকলির মন্তব্যের প্রসঙ্গে পরে তাঁকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমি তো কারোর নাম ধরে বলিনি। যার বোঝার দরকার সে নিশ্চয় বুঝে গিয়েছে। আপনি যদি না বোঝেন তাহলে তো আমার কিছু করার নেই।" অন্যদিকে, এদিন ফের নাম না-করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে কাকলি বলেন, "উনি এখানেই প্রার্থী হবেন না অন্য জায়গায় সেবিষয়ে আমি কিন্তু নির্দিষ্টভাবে কিছু বলিনি। আপনি যদি ওনাকে প্রার্থী হিসেবে খাঁড়া করতে চান। করুন! সবাইকেই স্বাগত। রাজনীতিতে সকলের লড়াই করার অধিকার রয়েছে। তারপরও বলছি, বারাসত কেন্দ্র থেকে 2 লক্ষ ভোটে জিতব। এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা মানুষের হয়ে উন্নয়নের কাজ করি। আর বিরোধীরা সমালোচনা করে।"
প্রসঙ্গত, এদিনই সবাইকে চমকে দিয়ে আচমকা বিচারপতির পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্টত জানিয়ে দেন, আপাতত তাঁর এই পদ থেকে তিনি বিদায় নিয়ে রাজনীতির ময়দানে আসতে চলেছেন। আর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীরা তাঁর এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানালেও শাসকদল কিন্তু লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে ঘটনার পর থেকেই। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হল তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের নামও।
আরও পড়ুন: