ব্যারাকপুর, 8 মে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাস্থলের মাঠ খুঁড়ে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত ভাটপাড়া পৌরসভার বিরুদ্ধে । এই ঘটনায় জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে । লেগেছে রাজনীতির রংও । তৃণমূলের বিরুদ্ধে সভা বানচালের অভিযোগ তুলে কার্যত ঘাসফুল শিবিরকে একহাত নিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং । পালটা এই নিয়ে মুখ খুলেছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামও । ফলে, ভোটের মুখে এই ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে সেখানে ।
আগামী 20 মে পঞ্চম দফায় ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন রয়েছে । তার আগে 12 মে পদ্মপ্রার্থী অর্জুন সিংয়ের সমর্থনে জগদ্দলে জনসভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির । সূত্রের খবর, মোদির সভার জন্য ভাটপাড়ার জগদ্দল পেপার মিলের মাঠ নির্দিষ্ট করা হয়েছিল । কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর সভার আগেই সেই মাঠে ট্রাক্টর চালিয়ে খুঁড়ে এবড়ো-খেঁবড়ো করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাটপাড়া পৌরসভার বিরুদ্ধে ।
পৌরসভার এই কাজে ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির । খবর পেয়ে মাঠ পরিদর্শনে এসে এই নিয়ে নিজের ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ, বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং । তিনি বলেন, "তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে সভা বানচালের চেষ্টা করছে। এই মাঠটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন । সেখানেই মাটি খুঁড়ে মাঠ খারাপ করে দেওয়া হয়েছে । উদ্দেশ্য একটাই মাটি কেটে তা পাচার করে দেওয়া । তৃণমূলের মদতে ভাটপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান বেআইনি কাজ করছে । জমির মালিক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে । এতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আটকাবে না । পুলিশ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ । এবার থেকে আমাদের কর্মীরা এই মাঠের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ।”
যদিও, এই অভিযোগ উড়িয়ে পালটা অর্জুন সিং-কে কটাক্ষ করেছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম । তিনি বলেন, "ওখানে প্রধানমন্ত্রী আসবেন তা নিয়ে আমাদের কাছে সরকারিভাবে কোনও খবর নেই । তাছাড়া কোনও মাঠ খোঁড়া হয়নি । যে মাঠ নিয়ে অভিযোগ উঠছে সেখানে সৌন্দর্যায়নের জন্য মাঠ ঠিক করার কাজ করছিল পৌরসভা । শুধু ওই মাঠ নয়, আশপাশের বেশ কয়েকটি মাঠেও এ কাজ করা হচ্ছে ।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘অর্জুন সিং যে অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয় । উনি শুধু ওঁর নিজের মতো করে ভাবেন । উনি সাংসদ থাকাকালীন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কারখানা বন্ধ হয়েছে । বন্ধ কারখানা থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিক্রি করেছেন অর্জুন এবং তাঁর আত্মীয়রা । ওঁর সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভালো ।" সোমনাথ আরও বলেন, "ওই মাঠে সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভা হবে, তা বেসরকারিভাবে জানতে পেরেছি । সভার আগে যত দ্রুত সম্ভব মাঠ ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ।"
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে এসে বিষয়টি লক্ষ্য করেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া । তিনিও এই নিয়ে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন । ক্ষোভ-বিক্ষোভের জেরে আপাতত প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলের মাঠ খোঁড়ার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে পৌরসভার তরফে ।
আরও পড়ুন: