বর্ধমান, 11 এপ্রিল: কীর্তি আজাদকে নিয়ে সমালোচনা করার কোনও সুযোগই প্রায় ছাড়ছেন না বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ ৷ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি প্রতিপক্ষ তৃণমূল প্রার্থী কীর্তির ঘোড়ায় চড়ে প্রচার নিয়ে কটাক্ষ করলেন ৷ বললেন, "ঘোড়ায় চেপে ঘুরলে কি পরিশ্রম হয় ? আমি তো হেঁটে ঘুরি । উনি হাঁটতে পারছেন না, তাই ঘোড়ায় পিঠে চেপে ঘুরছেন । লোকে তো বিয়ে করতে যাওয়ার সময় ঘোড়ায় চাপে । উনি এখন কেন উঠেছেন বুঝতে পারছি না ।"
বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ এবার বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ৷ প্রচারে বেরিয়ে ওই লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন তিনি ৷ কখনও পায়ে হেঁটে প্রচার করছেন ৷ আবার কখনও হুডখোলা গাড়িতে, কখনও ঢাক-ঢোল বাজাতে বাজাতে কিংবা কখনো ঘোড়ায় চড়ে প্রচার সারছেন । বর্ধমানের রায়ান গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘোড়ার পিঠে চেপে গ্রামের রাস্তায় প্রচার করেন ৷
সেই নিয়েই কটাক্ষ করেছেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ ৷ বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান উত্তর বিধানসভা এলাকার নাড়িগ্রামে প্রাতঃভ্রমণে যান দিলীপ ঘোষ । সেখান থেকে চা-চক্রে যোগ দেন । সেখানে বসেই তিনি কীর্তির এই ‘কীর্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করেন ৷ এমনকী, কীর্তি আজাদ স্ত্রীকে সামনে রেখে ভোট চাইছেন বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি ৷
অসুস্থ স্ত্রীকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে কীর্তি আজাদের প্রচার করা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "সবাই বুঝে গিয়েছেন ওঁর দ্বারা হচ্ছে না । কিন্তু অসুস্থ স্ত্রীকে দেখিয়ে ভোট হবে নাকি ! পশ্চিমবাংলার মানুষ অনেক সচেতন । ধন্যবাদ জানাবে, সহানুভূতি জানাবে ৷ কিন্তু কেউ ভোট দেবে না । ভোটে তো উনি দাঁড়িয়েছেন, তাহলে স্ত্রীকে দেখাচ্ছেন কেন ?"
তবে শুধু কীর্তি নয়, নাড়িগ্রামে বসে দিলীপ ঘোষ শাসক দলকেও একহাত নেন । শাসক দলের পক্ষ থেকে বারবার বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়েছে যে তারা ইডি-সিবিআই, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করছে । দিলীপ ঘোষের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূল রীতিমতো দাদাগিরি করে থাকে ৷ আজ সেই কাজ করতে পারছে না বলেই অভিযোগ করে যাচ্ছে ।
তিনি বলেন, ‘‘ওরা বলছে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে, সিবিআই-কে ব্যবহার করা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করা হচ্ছে, কে ব্যবহার করছে ? ওদের বিরুদ্ধে গেলেই ওদের মনে হয় ব্যবহার করা হচ্ছে । যতদিন ওদের হয়ে বলা হবে, ততদিন সব ঠিক থাকবে ৷ ওরা তো রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চাকরবাকরের মতো ব্যবহার করে । ভোট করিয়ে নেয় ।পঞ্চায়েত কিংবা পৌরসভা ভোটের সময় ফোন করলে ফোন ধরে না । আজ দাদাগিরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাই এসব কথা মনে হচ্ছে ।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা মনে রেখে বিজেপি এবার গ্রামে গ্রামে প্রচার শুরু করেছে । বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপ ঘোষ নিজে গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের মধ্যে ভয় কাটানোর চেষ্টা করছেন । যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে, সেই বার্তাই দিচ্ছেন । এ দিন এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের নেতাদের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে ।সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি । সেই জন্য আমি গ্রামে এসেছি । মানুষকে বলেছি আমাদের ভোট দিন ।" এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘ভোটের দাওয়াই যে খাবে, সেই বুঝবে ।’’
আরও পড়ুন: