মালদা, 5 জুন: মালদা জেলার প্রবাদপ্রতিম নেতা বরকত গনি খান চৌধুরীও ভোটে হেরেছিলেন ৷ কিন্তু ভোটে না হারার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলেন মালদা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু ৷ 77 হাজার 705 ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে আরও একবার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি ৷ তাঁর এই জয়ে উচ্ছ্বসিত মালদা উত্তরের গেরুয়া শিবির ৷
লোকসভা নির্বাচনে মালদা উত্তর কেন্দ্রে আইপিএস প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বাজি ধরেছিল রাজ্যের শাসক শিবির তৃণমূল কংগ্রেস ৷ নিজের জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন খোদ প্রসূনও ৷ ফল প্রকাশের ক’দিন আগে হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বৈদ্যপুর এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সবুজ আবিরে নিজেকে রাঙিয়েও ছিলেন তিনি ৷ ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরও নিজের জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন ৷ সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, "আমি সবসময় মনে করি, পরীক্ষা ভালো দিলে ফল ভালো হবেই ৷ তাই আমার কখনও টেনশন হয় না ৷ আমরা গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি ৷ শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে ৷ শান্তিপূর্ণভাবে গণনা চাই ৷ বাড়ি থেকে বেরনোর সময় মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে এসেছি ৷ দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে ৷ তিনিও জয়ের আশীর্বাদ করেছেন ৷ জয় নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই ৷" যদিও এদিন দুপুরের পর থেকে প্রসূনকে গণনাকেন্দ্রে আর দেখতে পাওয়া যায়নি ৷
এদিকে দ্বিতীয়বার একই আসন থেকে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু ৷ ভোট গণনার আগের দিন তিনি জানান, গতবারের তুলনায় এবার তাঁর জয়ের ব্যবধান বাড়বে ৷ প্রায় লক্ষাধিক ভোটে জিতবেন তিনি ৷ সেই কথা অবশ্য রাখতে পারেননি ৷ জয়ের ব্যবধানকে এক লাখে নিয়ে যেতে পারেননি ৷ মঙ্গলবার সকালে গণনাকেন্দ্রে ঢোকার পর থেকে তাঁকে আর বাইরে বেরতে দেখা যায়নি ৷ রাত ন’টা নাগাদ মালদা কলেজ ছেড়ে বেরিয়ে যান এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলম ৷ অনুমান করা হচ্ছিল, তাঁর পাওয়া 3 লক্ষ 84 হাজার 764 ভোটই তৃণমূলকে এই কেন্দ্রে পিছিয়ে দিয়েছে ৷
গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে খগেন বলেন, "মালদা উত্তরের প্রায় 18 লক্ষ ভোটারের মধ্যে যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন এবং যাঁরা দেননি, তাঁদের সবাই দেবতুল্য ৷ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই ৷ নিজের জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম ৷ ফলাফলও সেটাই হয়েছে ৷ এই জয় উত্তর মালদার মানুষের জয় ৷ আমাদের কর্মীদের জয় ৷ আমাকে প্রার্থী করার জন্য দলের কাছেও কৃতজ্ঞ ৷ এখানে কিছু ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে ৷ সেটা ঘটতেই পারে ৷"
তিনি আরও বলেন, "নির্বাচনী ময়দানে আমরা যখন লড়াই করতে নামি তখন জনাদেশ সবসময় মেনে চলি ৷ কে কোথায় জিতছেন বা হারছেন, সেটা আমাদের জানার বিষয় নয় ৷ মানুষের জন্য কতটা কাজ করেছি সেটাই বড় বিষয় ৷ এখানে গঙ্গা ভাঙনের বড় সমস্যা আছে, একটি এয়ারপোর্টের খুব প্রয়োজন ৷ রাজ্যের সহযোগিতা পেলে এই দুটি জিনিস খুব তাড়াতাড়ি করার চেষ্টা করব ৷" শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে খগেন বলেন, "এখানে নবোদয় বিদ্যালয় আর এইমস ধাঁচের হাসপাতালও খুব প্রয়োজন ৷ এসব করার চেষ্টা করব ৷ আজ আমি কাউকে কটাক্ষ করতে চাই না ৷ কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই, রাগ নেই ৷"