কলকাতা, 10 মার্চ: একটা দল যার পরিচিতি হল হাওয়াই চটি, টালির চাল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধারণ জীবন যাপন ৷ সেই সাদামাটা তৃণমূল দলই আজ চমক দিল গোটা দেশকে ৷ হাওয়াই চটির সারল্য থেকে একেবারে কর্পোরেট বিপ্লব ৷ যেখানে কর্পোরেট কায়দায় প্রার্থী ঘোষণা থেকে শুরু করে, 42 জন প্রার্থীকে নিয়ে ব়্যাম্পে হাঁটলেন মমতা ৷
রবিবারে ব্রিগেড থেকে এক কর্পোরেট তৃণমূলকে তুলে ধরলেন মানুষের সামনে ৷ স্মরণকালে এমন রাজনৈতিক সমাবেশ বাংলার মানুষ দেখেছে কিনা সন্দেহ ৷ যেখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবটাই টাইম ম্যানেজমেন্ট, নাটকীয় এবং ওয়েল স্ক্রিপ্ট ৷ আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বদলাচ্ছেন মমতা ও তাঁর দল ?
প্রসঙ্গত, রবিবারের এই বিশাল জনসভা মূলত ছিল, পুরনো তৃণমূলের খোলনলচে বদলে ফেলার ব্রিগেড ৷ একটা দল যার ছত্রেছত্রে দুর্নীতি বাসা বাঁধার অভিযোগ ৷ কোথাও এই দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে কাটমানি নেওয়ার ৷ কয়লা, গরু, রেশন, শিক্ষা দুর্নীতি সবেতেই জরিয়েছে তৃণমূল নেতাদের নাম ৷ এই অবস্থায় তৃণমূলকে নয়া মোড়ক দিতে গেলে যতটুকু যা করা যেত তাই করা হল আজ ৷ ম্যানেজমেন্টের ছাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর মতো করে তৃণমূলকে পুনরায় মানুষের আলোচনায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলেন ৷ আজকের ব্রিগেডে সেটারই এক নমুনা দেখল বাংলার মানুষ ৷
রাজনৈতিক হোক বা গীতাপাঠ, অনেক ঘটনার সাক্ষী এই বিস্তৃত ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ৷ কিন্তু, সেই ময়দানে এমন চেহারার মঞ্চ অতীতে দেখা যায়নি ৷ আবার প্রার্থী ঘোষণার পর, এই মঞ্চেই যে কায়দায় প্রার্থীদের পরিচয় করানো হল, তাও আগে কখনও দেখেনি বাংলা ৷ সেই জায়গা থেকে আজকের ব্রিগেড ঐতিহাসিক, তাতে কোনও সন্দেহ নেই ৷
তবে, প্রশ্ন একটা উঠছেই ৷ আর তা হল, কেন এমনটা করতে হল ? রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, ভোট কুশলীদের হাতে পড়া রাজনৈতিক দলগুলি এখন একটা প্রোডাক্ট ৷ তাই যখন যখন রাজনৈতিক দলগুলির ভাবমূর্তিতে প্রশ্নচিহ্ন ওঠে, তখনই প্রয়োজন হয় রি-লঞ্চের ৷ এদিন তারই চেষ্টা করেছেন অভিষেক ৷ তবে, এই পদ্ধতি বা পরিবর্তনকে গ্রহণ অথবা বর্জন, সবটাই নির্ভর করছে মানুষের উপর ৷ কারণ ভোটের ময়দানে শেষ কথা বলবে মানুষই ৷
আরও পড়ুন: