খড়গপুর, 19 মে: পশ্চিমবঙ্গে একে অপরের প্রতিপক্ষ ৷ কিন্তু, দিল্লিতে দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের 'গলায় গলায় ভাব' ৷ কংগ্রেস ও তৃণমূলের এই দ্বৈত রাজনৈতিক অবস্থানকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তিনি বলেন, "তৃণমূল ও কংগ্রেস ডাবল গেম খেলছে ৷" দুই দলের নেতৃত্ব বাংলা তথা দেশের মানুষকে বোকা বানানোর কাজ করছে বলে অভিযোগ করলেন মোদি ৷ কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোটকে নিশানা করার পিছনে, কংগ্রেসের অন্দরের দ্বন্দ্বকে খোঁচা দেওয়াই মোদির উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ ৷
রবিবার খড়গপুরের জনসভা থেকে মোদি বলেন, "তৃণমূল ও কংগ্রেস একই কয়েনের দুই পিঠ ৷ এরা বাংলায় একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ৷ একে অপরকে গালাগালি দিচ্ছে ৷ আর দিল্লি গিয়ে বন্ধুত্ব করছে ৷ তৃণমূল এখানে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও, দিল্লিতে ইন্ডি জোটের পার্টনার ৷ এরা সকলে মিলে 'ডাবল গেম' খেলছে ৷ এরা বোকা বানানো ও প্রতারণা করাকে রাজনীতি বলে ৷ কিন্তু, বাংলার মানুষ তৃণমূলের এই দ্বৈত রূপকে ভালো করেই চেনেন ৷"
রাজ্যে ও দিল্লিতে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট নিয়ে এই দু’রকম অবস্থানকে 'ডাবল গেম' বলে নিশানা করেছেন মোদি ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এদিন মোদির নিশানায় মূলত ছিল, কংগ্রেসের ভিতরের দ্বন্দ্ব ৷ কারণ, অধীর চৌধুরী তথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোটের বিরোধী ৷ ঠিক তেমনি মমতা ও তাঁর দল অধীর ও প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে একসারিতে চলতে নারাজ ৷ আর তার প্রভাব সরাসরি 'ইন্ডিয়া' জোটে দেখা দিয়েছে ৷
কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার অধীর চৌধুরী জোটে মমতার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ৷ এই নিয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি গতকাল অধীরকে সমঝে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ তাঁর সাফ বক্তব্য ছিল, কংগ্রেস হাইকমান্ড মমতার সঙ্গে রয়েছে ৷ সেখানে কারও আপত্তি থাকলে 'বাইরের দরজা খোলা আছে' ৷ যার পালটা অধীরও জবাব দিয়েছিলেন খাড়গেকে ৷ ভোট চলাকালীন 'ইন্ডিয়া' জোটের এই অস্থিরতা এবং তৃণমূলকে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস ও হাইকমান্ডের সংঘাত, রাজ্যে ও কেন্দ্রে বিজেপিকে বাড়তি রসদ জোগাচ্ছেন ৷ আর আজ মোদির বক্তব্যে ঠিক সেটাই স্পষ্ট হল ৷
উল্লেখ্য, আজ বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের দফতরের বাইরে মল্লিকার্জুন খাড়গের ছবিতে কালি লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ সঙ্গে খাড়গেকে 'তৃণমূলের দালাল' বলে লিখে দেওয়া হয় ৷ যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয় ৷ এর ভিডিয়ো দিল্লিতে হাইকমান্ডের কাছে চলে যায় ৷ এর পরপরই কংগ্রেস সভাপতির তিনটি ছবি থেকে কালি মোছা হয় ৷ পুরো ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷
আরও পড়ুন: