কলকাতা, 27 অগস্ট: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ এই দাবি জানিয়ে সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে চিঠি লিখলেন তমলুকের সাংসদ ৷
সেই চিঠিতে আরজি করের ঘটনা ও তার পরবর্তী সময়ে যা যা ঘটেছে, সেই সব পরপর উল্লেখ করেছেন তিনি ৷ এর সূত্র ধরেই তিনি দাবি করেছেন যে পুরোটাই মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশেই ঘটেছে ৷ তাই তিনি মনে করেন আরজি কর-কাণ্ডে মমতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ৷
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চিঠিতে লিখেছেন, যেভাবে মেয়েটির মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে তাঁর পরিবারের লোকজনকে ফোন করে প্রথমে অসুস্থ, তারপর মৃত বলে জানানো হয় । এবং দু’তিনদিন পরে ঘটনাস্থলের পাশের একটি ঘরের দেওয়াল ভাঙা হয় এবং 14 অগস্ট রাতে যেভাবে দুষ্কৃতীরা হামলা করেছিল হাসপাতালে, তাতে স্পষ্ট যে এই ঘটনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীর নির্দেশেই করা হয়েছে । সেই জন্য আগে তাঁকে জিজ্ঞসাবাদ করুক সিবিআই ।
ঘটনার সময়সূচি উল্লেখ করে বিচারপতির দাবি, এই ঘটনা উপরমহলের নির্দেশ ছাড়া এরকম হতেই পারে না ! একইভাবে কেন দ্রুত মেয়েটির দেহ দাহ করা হল, সেই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন ৷ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, তিনি অত্যন্ত সন্দীহান মূল অভিযুক্ত হিসাবে যাঁকে এখনও পর্যন্ত ধরা হয়েছে, তিনি আসলে এই ঘটনায় আদৌ যুক্ত কি না ! তাই যদি নির্যাতনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের ধরতে হয়, তাহলে আগে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পুলিশমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞসাবাদ করা প্রয়োজন সিবিআইয়ের ।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে মমতার দিকে গত কয়েকদিন ধরে বারবার তোপ দেগেছেন বিজেপির একাধিক নেতা ৷ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক কর্মসূচিতে পথেও নেমেছে গেরুয়া শিবির ৷ তারা দাবি তুলেছে, ‘দফা এক, দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’ ৷ একই দাবি নিয়ে আজ, মঙ্গলবার পথে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে এক সংগঠন ৷ তারা নবান্ন অভিযান করছে ৷
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ যদিও বিজেপিতে যোগদানের আগে থেকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ৷ তিনি বিচারপতি থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মন্তব্য করেছেন মমতার বিরুদ্ধে ৷ এমনকী, শাসক দলের অন্য নেতা-নেত্রীদের নামেও একাধিক কড়া মন্তব্য শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে ৷
ফলে বারবার তৃণমূলের তরফে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ৷ চলতি বছরের গোড়ায় বিজেপিতে যোগদানের পরই তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে আরও চড়া সুরে আক্রমণ করেছে তৃণমূল ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়েও হয়তো সুর চড়াবে শাসক দল ৷ তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শাসক দলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷