রায়গঞ্জ, 7 এপ্রিল: তিনি চারবারের বিধায়ক ৷ সুবক্তা হিসাবে পরিচিত ৷ এলাকার মানুষের দাবি, বিধানসভাতেও একাধিকবার প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে ৷ একসময় চাকুলিয়া, গোয়ালপোখরের বাম রাজনীতি তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হত ৷ কিন্তু দিন বদলের গানে রাজনৈতিক অবস্থানও বদলে গিয়েছে আলি ইমরান রমজের ৷ মানুষ তাঁকে ভিক্টর নামেই চেনেন ৷ নেতাজির আদর্শকে সরিয়ে রেখে তিনি আঁকড়ে নিয়েছেন গান্ধিকে ৷ ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে ৷ এ বার তাঁকেই রায়গঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে এআইসিসি ৷ এহেন ভিক্টর জানিয়েছেন, 2021-22 এবং 2022-23 অর্থবর্ষে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর আয় শূন্য ৷ যদিও তাঁর নিজস্ব একটি দশলাখি গাড়ি রয়েছে ৷ হলফনামায় তাঁর এমন বিষয়-আশয় দেখে হতবাক সবাই ৷
- ফব থেকে তৃণমূলে
কাকা হাফিজ আলি সাইরানি ছিলেন গোয়ালপোখর কেন্দ্রের তিনবারের বিধায়ক ৷ সেই আসনেই 2009 সালের উপনির্বাচনে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ভিক্টর ৷ 2011 সাল থেকে তিনি চাকুলিয়া কেন্দ্রের তিনবারের বিধায়ক ৷ দলের অভ্যন্তরীণ ঝামেলায় 2022 সালের 17 অক্টোবর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর হাত থেকে তিনি তুলে নেন কংগ্রেসের ঝান্ডা ৷
- শূন্য আয়েও 10লাখি গাড়ি
বামেদের সমর্থনে এ বার রায়গঞ্জ কেন্দ্রে হাত প্রতীকে লড়ছেন ভিক্টর ৷ ইতিমধ্যে নিজের মনোনয়ন পেশ করেছেন ৷ হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, 2021-22 ও 2022-23 আর্থিক বছরে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঞ্জলি নিয়োগীর আয়ের পরিমাণ শূন্য ৷ তবে তাঁর নিজস্ব একটি চার চাকার গাড়ি রয়েছে ৷ যার দাম 10 লাখ টাকা ৷ চাকুলিয়ায় তাঁর নিজস্ব বাড়ি রয়েছে ৷ কলকাতায় তাঁর স্ত্রীর নামে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও রয়েছে ৷ যার দাম দু'কোটি টাকারও বেশি ৷
- ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত
ভিক্টর তাঁর হলফনামায় জানিয়েছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যেগুলি বিচারাধীন ৷
- অস্থাবর সম্পত্তি
এই মুহূর্তে তাঁর হাতে এক লাখ আর তাঁর স্ত্রীর হাতে 30 হাজার টাকা রয়েছে ৷ সব মিলিয়ে তাঁর তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে 11 লাখ 94 হাজার 107 টাকা 34 পয়সা ৷ তাঁর স্ত্রীর একটি অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত রয়েছে নগদ পাঁচ লাখ তিন হাজার টাকা ৷
- একনজরে রায়গঞ্জ লোকসভা
এই আসনে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিজেপি প্রার্থী করেছে কার্তিক পালকে ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কানাইয়া লাল আগরওয়ালকে পেছনে ফেলে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী ৷ তবে এ বার তৃণমূলের দুর্গ হিসেবে পরিচিত কলকাতা দক্ষিণে প্রার্থী করা হয়েছে রায়গঞ্জের বিদায়ী সাংসদকে ৷ গতবার তাঁর সামনে হার মানতে হয়েছিল 2014 সালের রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিমকেও ৷ 2014-তে বিদায়ী সাংসদ দীপা দাশমুন্সিকে হারিয়েছিলেন সেলিম ৷ তাঁর আগে এই আসন কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত ছিল ৷ এই কেন্দ্র থেকেই 1971 সালে সিদ্ধার্থ শংকর রায়, 2004 সালে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং 2009 সালে দীপা দাশমুন্সি জয়লাভ করেছিলেন ৷ সেই ধারা এ বার ভিক্টর ধরে রাখতে পারেন কি না, তার জন্য আর কিছুদিনের অপেক্ষা ৷
আরও পড়ুন: