সন্দেশখালি, 11 মার্চ: সিপিএমের সন্দেশখালি অভিযানের দিনই নতুন করে বেশ কিছু জায়গায় 144 ধারা জারি করেছে প্রশাসন । আর প্রশাসনের এই ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে । যদিও অশান্তি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর প্রশাসন সূত্রে । জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত টানা এই তিনদিন সন্দেশখালির তিনটি জায়গায় আপাতত 144 ধারা জারি থাকবে । এগুলো হল - ধামাখালি ঘাট, সরবেড়িয়া বাজার ও রাজবাড়ি মোড় । যার জেরে এই তিনটি এলাকায় ইতিমধ্যে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে পুলিশের তরফে । তা সত্ত্বেও অশান্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না সিপিএমের সন্দেশখালি অভিযান ঘিরে ।
কারণ, সিপিএম নেতৃত্বও নাছোড়বান্দা তাঁদের কর্মসূচি সফল করতে । ইতিমধ্যে তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন পুলিশ বাধা দিলেও সেই বাধা টপকে সন্দেশখালির দিকে যাবেন দলের কর্মী-সমর্থকরা । ফলে, কোনও অশান্তির পরিবেশ তৈরি হলে, তা কিভাবে সামাল দেন পুলিশ কর্তারা, এখন সেটাই দেখার ৷
লোকসভা ভোটের আগে রাজনীতির হটস্পট যে সন্দেশখালি হতে চলেছে, তা বারেবারে স্পষ্ট হয়েছে বিরোধী শিবিরের লাগাতার কর্মসূচি থেকে । সন্দেশখালি-কাণ্ডকে হাতিয়ার করে ভোটের সুফল পেতে একপ্রকার মরিয়া তারা । সেই কারণে সন্দেশখালির পরিস্থিতি তুলে ধরতে কোনও খামতি রাখছে না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । তা করতে গিয়ে কখনও পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের । আবার কখনও হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে সন্দেশখালির উপদ্রুত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা ।
সেই আবহে এবার সন্দেশখালি অভিযান করতে চলেছে সিপিএম নেতৃত্ব । সূত্রের খবর, সোমবার দুপুর 2টো নাগাদ সন্দেশখালির সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠে সভা করবেন তাঁরা । সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, দলের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার, প্রাক্তন মন্ত্রী দেবলীনা হেমব্রম-সহ আরও অনেকে । মূলত সেই সভায় উত্তর 24 পরগনা জেলার কর্মী-সমর্থকদেরই উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে । তার জন্য নির্দিষ্ট রুটও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে দলের তরফ থেকে । সায়েন্স সিটি থেকে ধামাখালি হয়ে ফেরিঘাটে যেতে বলা হয়েছে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের । সন্দেশখালি ঘাট থেকে সভাস্থল মিনিট তিনেকের হাঁটা পথ ।
কিন্তু, তার আগেই ধামাখালি ঘাটে আটকে দেওয়া হতে পারে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের । এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বের তরফে । এই বিষয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "পুলিশ আটকালেও সভা হবেই । ঘোষিত কর্মসূচিতে প্রশাসন কিভাবে 144 ধারা জারি করতে পারে ? আসলে পুলিশ দুষ্কৃতীদের মতো আচরণ করছে ! গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের । তারা যদি সেই দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে জনসাধারণই সেই দায়িত্ব পালন করবে নিজের উদ্যোগে । আমরা চাই না কোনও অশান্তি হোক । কিন্তু, পুলিশ সেই অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করলে আমরা তা রুখব ।"
এদিকে, পুলিশের তরফে 144 ধারা জারি হওয়ার তিনটি জায়গায় জমায়েত না করার আবেদন জানানো হয়েছে । ফলে দলীয় সভায় যোগ দিতে এ দিন সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত হলে কি হয়, সেই দিকেই লক্ষ্য রয়েছে সকলের ।
আরও পড়ুন: